পোষা কুকুর-বিড়ালের টিকা: কেন প্রয়োজন, কখন দেবেন
অনেকেই বাসায় পোষা প্রাণী রাখেন। সময় গড়ানোর সঙ্গে প্রাণীগুলো আমাদের পরিবারের সদস্য হয়ে ওঠে। তবে পুষলেই তো হবে না, চাই সঠিক যত্ন। এক্ষেত্রে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ হলো সঠিক সময়ে টিকা দেওয়া।
জলাতঙ্ক, ডিপথেরিয়া, ফ্লুর মতো কিছু রোগ আছে, যেগুলো পশু থেকে মানুষে কিংবা মানুষ থেকে পশুতে ছড়াতে পারে। তা ছাড়া শিশুরা পোষা প্রাণী, বিশেষ করে বিড়াল বা কুকুরের সঙ্গে খেলতে পছন্দ করে। খেলতে খেলতে অনেক সময় গায়ে আঁচড় বসিয়ে দিতে পারে এসব প্রাণী। তাই পোষা প্রাণীকে বাসায় আনার পর পরই প্রয়োজনীয় টিকা দিতে হবে।
পোষা প্রাণীর টিকা নিয়ে পরামর্শ দিয়েছেন 'পাও লাইফ' এর ভেট রবিউল হাসান।
চলুন এ ব্যাপারে বিস্তারিত জেনে নিই তার কাছ থেকে-
টিকা কী ও কেন
বিভিন্ন রোগ প্রতিরোধ করার জন্য ভিন্ন ভিন্ন ধরনের টিকা রয়েছে। টিকা প্রাণীদের শরীরে অ্যান্টিবডি তৈরি করে এবং রোগজীবাণু, ভাইরাস, ব্যাকটেরিয়া ইত্যাদির বিরুদ্ধে লড়াই করতে সাহায্য করে। এভাবে পোষা প্রাণী ও আপনাকে সুরক্ষিত রাখতে সাহায্য করে টিকা।
প্রাণীদের কিছু মারাত্মক রোগ আছে, যা হলে মৃত্যু পর্যন্ত হতে পারে। একবার অসুস্থ হলে তখন আর ওষুধ কাজ করে না। তাই রোগাক্রান্ত হওয়ার আগে ঘরের পোষা প্রাণীদের টিকা দিতে হয়। এর মধ্যে কিছু রোগ, যেমন বিড়াল ও কুকুরের জলাতঙ্ক মানুষের মধ্যেও সংক্রমিত হতে পারে। তাই পোষাপ্রাণী ও মানুষ ২ পক্ষের সুরক্ষার জন্যই টিকা প্রয়োজন।
টিকা দেওয়ার সময়
বিড়ালের বয়স ৩ মাস হওয়ার পর প্রথম ফ্লুর ভ্যাকসিন দিতে হয়। প্রথম বার ভ্যাকসিন দিলে ২১-২৮ দিনের মধ্যে বুস্টার ডোজ দিতে হবে। বুস্টার ডোজের পর তার মেয়াদ থাকে ১ বছর। তাই প্রতি ১ বছর পরপর টিকা দিতে হবে। জলাতঙ্ক বিড়ালের মারাত্মক এবং প্রাণঘাতী সংক্রামক রোগ। 'রেবিস ভ্যাকসিন' বিড়ালকে জলাতঙ্ক রোগ থেকে রক্ষা করে। এটি ৩ বছর, ১ বছর, ৬ মাস বিভিন্ন মেয়াদী হয়ে থাকে।
বিড়ালের জন্য ভিন্ন ভিন্ন টিকা থাকলেও কুকুরের জন্য একটি মাত্র 'কোর ভ্যাকসিনই' যথেষ্ট। একটি টিকার সর্বনিম্ন সময়সীমা হলো একটি কুকুরের জীবনকাল। অর্থাৎ আপনার কুকুরকে জীবনে একবার টিকা দেওয়াই যথেষ্ট।
প্রাইমারি বা মুখ্য ভ্যাক্সিনের জন্য এর সর্বনিম্ন সময়সীমা কত দিন দেখে নিন। যদি আপনার কুকুরের বয়স ১৬ সপ্তাহ বা তার চেয়ে বেশি হয়ে থাকে এবং এর মাঝে কোর বা প্রাইমারি ভ্যাকসিন দেওয়া হয়ে থাকে তবে খুব সম্ভবত তার আর টিকা দেওয়ার প্রয়োজন হবে না। বাড়তি সচেতনতার জন্য সেকেন্ডারি বেশ কিছু ভ্যাকসিন ভেটের সঙ্গে আলোচনা করে দেওয়া যেতে পারে।
সঠিক ও পর্যাপ্ত টিকার মাধ্যমে পোষা প্রাণীর সুস্বাস্থ্য নিশ্চিত করা সম্ভব। এতে করে পরিবারে অন্যান্য সদস্য ও পোষা প্রাণী উভয়েই সুন্দর ঝামেলাবিহীন সময় কাটাতে পারবেন।
Comments