অনিশ্চয়তায় ৩৭ হাজার গ্রাহকের বিমার টাকা
অনিয়মের কারণে হোমল্যান্ড লাইফ ইনস্যুরেন্স কোম্পানী লিমিটেডের ৩৭ হাজারেরও বেশি গ্রাহক তাদের বিমার অর্থ ফেরত পাবেন কিনা তা নিয়ে অনিশ্চয়তার মধ্যে আছেন।
বীমা উন্নয়ন ও নিয়ন্ত্রণ কর্তৃপক্ষ (আইডিআরএ) সূত্রে জানা গেছে, হোমল্যান্ড লাইফ ইনস্যুরেন্স ৭৯ কোটি টাকার দাবি নিষ্পত্তি করছে না।
ফলে গত এক বছরে ৬ হাজার ৮২০ জন বিমাকারী আইডিআরএর কাছে অভিযোগ করে বলেছেন যে, মেয়াদপূর্তির পরও তাদের টাকার দাবির নিষ্পত্তি হয়নি।
বিমা প্রতিষ্ঠানটির প্রায় ২০২ কোটি টাকার তহবিল আছে। এর মধ্যে ১১২ কোটি ২৩ লাখ টাকা স্থাবর ও অস্থাবর খাতে বিনিয়োগ করা হয়েছে।
ট্রেজারি বিল ও বন্ডে ৮১ কোটি ৭৭ লাখ টাকা বিনিয়োগের পাশাপাশি কুমিল্লায় ১ কোটি ২৫ লাখ টাকা খরচে অফিস স্পেস কেনা হয়েছে। এ ছাড়াও, সিলেটের জল্লারপাড় এলাকায় ৪ কোটি ৮০ লাখ টাকার জমি কেনা হয়েছে বলে আইডিআরএর নথিতে দেখা গেছে।
অবশিষ্ট তহবিলের একটি অংশ গাড়ি, কম্পিউটার, আসবাবপত্র ও এয়ার কন্ডিশনার কেনার জন্য খরচ করা হয়েছিল।
কিন্তু প্রতিষ্ঠানটি আসলেই এই অর্থ বিনিয়োগ করেছে কি না তা নিয়ে আইডিআরএর এক নথিতে প্রশ্ন তোলা হয়েছে।
প্রতিষ্ঠানটির তহবিলের ১০৪ কোটি টাকা আত্মসাতের অভিযোগের তদন্ত চলছে।
গত মার্চে ১৪ বিমাকারীদের পক্ষে প্রতিষ্ঠানটির বিরুদ্ধে হাইকোর্টে রিট করেন বিমাকারী রহিমা আক্তার।
রিটে অর্থসচিব, আইডিআরএর চেয়ারম্যান, দুর্নীতি দমন কমিশনের চেয়ারম্যান ও হোমল্যান্ড লাইফ ইনস্যুরেন্সের চেয়ারম্যান ও ভাইস চেয়ারম্যানকে জবাব দিতে বলা হয়েছে।
আদালতের নির্দেশনার ভিত্তিতে হোমল্যান্ড লাইফ ইনস্যুরেন্সের আর্থিক অবস্থা মূল্যায়ন, অর্থ আত্মসাতের অভিযোগ ও বসুন্ধরা আবাসিক এলাকায় ৪৮ কোটি ৬০ লাখ টাকায় ১২০ কাঠা জমি বিক্রির বিষয়টি তদন্তের জন্য অডিটর নিয়োগ দেয় আইডিআরএ।
আইডিআরএর এক কর্মকর্তা দ্য ডেইলি স্টারকে জানান, আইডিআরএর হিসাবে হোমল্যান্ড লাইফ ইন্স্যুরেন্সের ১৯৮ কোটি টাকা আত্মসাৎ করা হয়েছে।
১৯৯৬ সাল থেকে ২০০৯ সাল পর্যন্ত ১০৪ কোটি টাকার তহবিল অব্যবস্থাপনার বিষয়ে আইডিআরএকে চিঠি দিয়েছে প্রতিষ্ঠানটির কয়েকজন পরিচালক।
তিনি আরও জানান, পরিচালকদের অন্য এক গ্রুপ নিয়ন্ত্রক সংস্থাটিকে জানিয়েছে, ২০১০ থেকে ২০২২ সাল পর্যন্ত প্রায় ৫০ কোটি টাকার অব্যবস্থাপনা হয়েছে।
বর্তমানে হোমল্যান্ড লাইফ ইনস্যুরেন্সে ৩ স্বতন্ত্র পরিচালকসহ ১৭ পরিচালক আছেন।
আইডিআরএর এক ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা ডেইলি স্টারকে জানিয়েছেন, 'বিমা প্রতিষ্ঠানের কোনো দীর্ঘমেয়াদী সঠিক বিনিয়োগ পরিকল্পনা ছিল না। ফলে বিমাকারীরা এমন পরিস্থিতিতে পড়েছেন।'
২০২০ ও ২০২১ সালে বিমা প্রতিষ্ঠানটির বর্তমান ও বিশেষ নোটিশ আমানতের মজুদ ছিল যথাক্রমে ৫৮ কোটি ৭৯ লাখ টাকা ও ৫৮ কোটি ৫৬ লাখ টাকা।
বিশেষ নোটিশ ডিপোজিট অ্যাকাউন্ট একটি সুদ-বহনকারী আমানত অ্যাকাউন্ট। এখান থেকে অর্থ তোলার জন্য অগ্রিম নোটিশ প্রয়োজন।
সংক্ষেপিত: ইংরেজিতে পুরো প্রতিবেদনটি পড়তে এই Homeland Life Insurance: Over 37,000 clients unsure about settlement of claims লিংকে ক্লিক করুন
Comments