বছরে ৫ মাস বন্ধ থাকে যে কমিউনিটি ক্লিনিক

কমিউনিটি ক্লিনিক
হবিগঞ্জের আজমিরীগঞ্জ উপজেলার জলসুখা ইউনিয়নের মাধবপাশা গ্রামের কমিউনিটি ক্লিনিক। ছবি: মিন্টু দেশোয়ারা/স্টার

চারপাশে শুধু পানি। এর মাঝেই দাঁড়িয়ে আছে মাধবপাশা কমিউনিটি ক্লিনিক।

হবিগঞ্জের আজমিরীগঞ্জ উপজেলার জলসুখা ইউনিয়নের প্রত্যন্ত মাধবপাশা গ্রামের বাসিন্দাদের চিকিৎসার জন্য এই ক্লিনিকটি একমাত্র ভরসার জায়গা।

প্রায় ৫০০ পরিবারের গ্রামটির একমাত্র প্রাথমিক চিকিৎসা কেন্দ্র এই কমিউনিটি ক্লিনিক।

বর্ষায় গ্রামটির আশপাশে পানি থৈ থৈ করে। সে সময় পানিবাহিত রোগের প্রাদুর্ভাবও হয় বেশি। ঠিক তখনই এই ক্লিনিকে পৌঁছানো অসম্ভব হয়ে পড়ে।

স্থানীয় আমির হোসেন (৬৫) দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, 'বর্ষার শেষ পর্যন্ত ক্লিনিকটি জলাবদ্ধ থাকে। পানি কমে যাওয়ার পরও কাদা শুকাতে ও রাস্তা মেরামত করতে কয়েক মাস লেগে যায়। সেসময় ক্লিনিকটি বন্ধ থাকে। প্রতি বছর ক্লিনিকটি এভাবে বন্ধ থাকে ৪-৫ মাস।'

গ্রামের অপর বাসিন্দা আশেক আলি ডেইলি স্টারকে বলেন, 'বর্ষায় ঠান্ডা, জ্বর ও কাশিসহ পানিবাহিত রোগের প্রাদুর্ভাব ঘটে। সে সময়ে পানির কারণে ক্লিনিকে যাওয়া সম্ভব হয় না। গ্রামবাসীরা ক্লিনিকে চিকিৎসা নিতে পারেন না, গ্রাম্য ডাক্তারদের ওপর নির্ভর করতে হয়।'

এলাকায় নিরবচ্ছিন্ন স্বাস্থ্যসেবা নিশ্চিত করতে এ ক্লিনিকের অবস্থা জানিয়ে স্বাস্থ্য বিভাগ ও জনপ্রতিনিধিদের কাছে উদ্বেগ প্রকাশ করেছে স্থানীয়রা।

কমিউনিটি ক্লিনিক
মাধবপাশা কমিউনিটি ক্লিনিক। ছবি: মিন্টু দেশোয়ারা/স্টার

স্থানীয় সাংবাদিক এনামুল হক মিলাদ ডেইলি স্টারকে জানান, গ্রামের রাস্তা থেকে মাত্র ৫০ ফুট দূরে নিচু জমিতে এই ক্লিনিক। গ্রামের রাস্তার সঙ্গে ক্লিনিকের সংযোগ রাস্তা না থাকায় যাতায়াতে সমস্যা হয়।'

তিনি বলেন, 'শিগগির রাস্তা না বানালে স্থানীয়রা এভাবেই স্বাস্থ্যসেবা থেকে বঞ্চিত হবেন বছরের পর বছর।'

একই কথা জানিয়ে মাধবপাশা কমিউনিটি ক্লিনিকের স্বাস্থ্য সেবাদানকারী রাশিনা আক্তার ডেইলি স্টারকে বলেন, 'বর্ষায় প্রয়োজনীয় চিকিৎসা দিতে নৌকায় গ্রামবাসীর বাড়ি বাড়ি যাই।'

জলসুখা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান ফয়েজ আহমেদ খেলু ডেইলি স্টারকে বলেন, 'আগামী শুষ্ক মৌসুমে ক্লিনিকের সংযোগকারী কংক্রিটের রাস্তা নির্মাণ করা হবে।'

আজমিরীগঞ্জের উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. ইকবাল হোসেন ডেইলি স্টারকে বলেন, 'সংযোগ সড়ক নির্মাণের কাজ এর আগে শুরু করা হলেও স্থানীয় কয়েকজনের বিরোধিতায় কাজটি বাধাগ্রস্ত হয়।'

তিনি বলেন, 'স্থানীয় জনপ্রতিনিধিরা এ সমস্যা সমাধানে আন্তরিকতা দেখালেই রাস্তা নির্মাণের মাধ্যমে সেবাদানে সহায়ক পরিবেশ তৈরি সম্ভব।'

Comments

The Daily Star  | English

Pathways to the downfall of a regime

The erosion in the credibility of the Sheikh Hasina regime did not begin in July 2024.

9h ago