টানা ১১ বছরেও কর আদায়ের লক্ষ্যমাত্রা পূরণ হয়নি

এনবিআর
ছবি: সংগৃহীত

একদিকে উচ্চাভিলাষী লক্ষ্যমাত্রা অন্যদিকে অর্থনৈতিক মন্দার মধ্যে টানা ১১ বছরের মতো রাজস্ব আদায়ে লক্ষ্যমাত্রায় পৌঁছতে পারেনি জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর)।

সংস্থাটির তথ্য অনুসারে, ২০২২-২৩ অর্থবছরে মোট রাজস্ব আদায় হয়েছে ৩ লাখ ২৫ হাজার ২৭২ কোটি টাকা। এটি লক্ষ্যমাত্রার তুলনায় ৪৪ হাজার ৭২৮ কোটি টাকা কম।

গত অর্থবছরে কর আদায় বেড়েছে মাত্র ৮ শতাংশ। এর আগের বছরের ১৪ শতাংশ প্রবৃদ্ধির প্রায় অর্ধেক।

পলিসি রিসার্চ ইনস্টিটিউট অব বাংলাদেশের নির্বাহী পরিচালক ও আইএমএফের সাবেক অর্থনীতিবিদ আহসান এইচ মনসুর দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, 'ঘাটতি বিষয়ে আমরা যা ধারণা করেছিলাম তার তুলনায় ঘাটতি আছে।'

তিনি আরও বলেন, 'মূল সমস্যা হচ্ছে এনবিআরের প্রশাসনিক সক্ষমতার অভাব। সেই সঙ্গে অর্থনৈতিক মন্দাও দেখা দিয়েছে।'

'কর্পোরেট আয় কমেছে। আমদানির পাশাপাশি পণ্যের দামও কমেছে,' যোগ করেন তিনি।

এনবিআরের তথ্যে জানা গেছে, ২০২২-২৩ অর্থবছরের জুলাই-জুনে আমদানি-রপ্তানি থেকে কর আদায় মাত্র ২ দশমিক ৫ শতাংশ বৃদ্ধি পেয়ে ৯১ হাজার ৭১৭ কোটি টাকায় পৌঁছেছে।

আয় ও ভ্রমণ কর আদায় ৯ দশমিক ৬ শতাংশ বেড়ে ১ লাখ ১২ হাজার ৯২১ কোটি টাকা হয়েছে।

সংস্থাটির তথ্যে আরও জানা গেছে, রাজস্ব আদায়ের সবচেয়ে বড় উৎস ভ্যাট আদায়ের পরিমাণ ১১ দশমিক ২ শতাংশ বেড়েছে। এটি এনবিআরের রেকর্ড আদায় ১ লাখ ২০ হাজার ৬৩৩ কোটি টাকা।

চলতি অর্থবছরের বাজেট পাসের ২ সপ্তাহ পর পুরো বছরের রাজস্ব আদায়ের তথ্য জানা গেছে। বাজেটে এনবিআরকে ৪ লাখ ৩০ হাজার কোটি টাকা সংগ্রহের দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে।

তথ্যে দেখা যায়, নতুন লক্ষ্যমাত্রা ২০২৩ অর্থবছরের মোট সংগ্রহের তুলনায় ৩২ শতাংশ বেশি।

অর্থনীতিবিদ আহসান এইচ মনসুর আরও বলেন, 'লক্ষ্যমাত্রা অর্জন অসম্ভব হবে। সর্বোচ্চ ১৫ শতাংশ বেশি কর আদায় করতে পারবে এনবিআর।'

পিআরআই স্টাডি সেন্টার অন ডোমেস্টিক রিসোর্স মোবিলাইজেশনের (সিডিআরএম) পরিচালক মোহাম্মদ এ রাজ্জাকের আশঙ্কা বাংলাদেশ ব্যাংক সংকোচনমূলক মুদ্রানীতি গ্রহণ করায় চলতি অর্থবছরে অর্থনৈতিক পরিস্থিতি আরও ডিপ্রেসেড হতে পারে।

তিনি মনে করেন, 'সুদের হার বাড়ানো ও ব্যবসার ব্যয় বৃদ্ধি অর্থনৈতিক গতিশীলতা কমিয়ে আনবে এবং রাজস্ব আদায় আরও কঠিন হবে।'

Comments