হতাশা-চাপ-অভিমানে সরে গেছেন স্বপ্না-ছোটন, জানালেন লিটু

ছবি: বাফুফে

টালমাটাল অবস্থা বিরাজ করছে বাংলাদেশের নারী ফুটবল অঙ্গনে। হঠাৎ করেই সব ধরনের ফুটবল থেকে অবসরের ঘোষণা দিয়েছেন সাফ জয়ী স্ট্রাইকার সিরাত জাহান স্বপ্না। এর কয়েক ঘণ্টার ব্যবধানে বয়সভিত্তিক ও সিনিয়র নারী জাতীয় দলগুলোর কোচের পদ ছাড়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন গোলাম রব্বানী ছোটন। এসবের পেছনে হতাশা, চাপ ও অভিমানের মতো কারণগুলো উল্লেখ করেছেন জাতীয় নারী দলের সহকারী কোচ মাহবুবুর রহমান লিটু।

শনিবার ডেইলি স্টারের পক্ষ থেকে যোগাযোগ করা হয় লিটুর সঙ্গে। গত সাফ চ্যাম্পয়নশিপে চার গোল করা স্বপ্না আচমকা অবসর কেন নিলেন জানতে চাইলে তিনি বলেন, 'আসলে ও কিছুটা হতাশ হয়েছিল। দীর্ঘ আট মাস ধরে কোনো খেলা নেই। মায়ানমারে খেলতে যাওয়ার কথা ছিল, সেটা হয়নি। ভারতে ফ্রাঞ্চাইজি লিগ (খেলার প্রস্তাব ছিল অনেকের), এরপর বাংলাদেশে চার দলের নারী সুপার লিগ হওয়ার কথা ছিল, সেটাও হয়নি। তাছাড়া সার্জারির পরে এত কষ্ট ওর ভালো লাগছিল না। সেই কারণে ও খেলা ছেড়ে দিবে বলেছিল। আমি তাকে বলেছিলাম, "তোমার তো এখন সেরা সময়। তুমি কেন খেলা ছাড়বে?"'

সহকারী কোচ যোগ করেন, 'স্বপ্না আমাদের বলেছিল, ওর ছুটি দরকার। আমরা বলেছিলাম যে তুমি দুই-তিনদিন ঘুরে আসো। কিন্তু সে বাড়ি গিয়ে হঠাৎ করে ফেসবুক পোস্টের মাধ্যমে খেলা ছাড়ার ঘোষণা দিয়েছে।'

নারীদের কোচ হিসেবে ভীষণ সফল ছোটন কেন কোচের দায়িত্ব ছাড়ছেন জানতে চাওয়া হলে লিটু বলেন, 'আসলে আমরা তো এখানে অমানবিক চাপে থাকি। অতিরিক্ত চাপ। আমরা ভোর সাড়ে চারটায় উঠি। পাঁচটার মধ্যে কমলাপুর (বীরশ্রেষ্ঠ শহীদ সিপাহী মোস্তফা কামাল স্টেডিয়ামে) চলে যাই। বয়সভিত্তিক তিনটি দল অনুশীলন করে। আমাদের প্রায় সারাদিনই মাঠে থাকতে হয়। মাঠ থেকে এসে দুপুর সাড়ে ১২টায় আবার জিম থাকে তিনটি গ্রূপের। এভাবে বিকাল পর্যন্ত একটার পর আরেকটা কাজ থাকে। ছোটনের বাসায় যেতে যেতে বিকাল সাড়ে পাঁচটা বাজে। এভাবে চাপ হয়ে যাচ্ছে অনেক। এছাড়া, ওর আবার কিছু অভিমানও আছে।'

অভিমানের জায়গাগুলো কী কী জানতে চাইলে তিনি বলেন, 'প্রথমত, এত কষ্ট ওর ভালো লাগছে না। দুই নম্বর হলো, কাজের পরিধিটাও অনেক এখানে। তারপর ওর নাম ঐভাবে (প্রচার) হয় না আর কি। এগুলোর জন্য সে বলছে, তার কিছু বিশ্রাম দরকার। ২০০৬ থেকে ও এখানে (জাতীয় দলগুলোর কোচিংয়ে) আছে। পরিবারকে তেমন সময় দিতে পারে না।'

বাংলাদেশ ফুটবল ফেডারেশনের (বাফুফে) সঙ্গে কোনো গন্ডগোল আছে কিনা জানতে চাইলে জানতে চাইলে লিটুর জবাব, 'ফেডারেশনের সঙ্গে আমাদের কোন সমস্যা নেই।'

মেয়েদের বেতন-ভাতা ও সুযোগ-সুবিধা নিয়ে তার ভাষ্য, 'সেগুলোর সমস্যা নেই। তবে মেয়েদের ও কোচদের গত দুই মাসের বেতন-ভাতা বাকি আছে। সামনের সপ্তাহে (বাফুফে) দিবে বলেছে। সাধারণত মাসের ৫ তারিখের মধ্যে বেতন-ভাতা দেওয়া হয় সবাইকে।'

লিটু জানান, কোচ ছোটনের অভিমান ভাঙানোর জন্য ইতোমধ্যে তার সঙ্গে কথা বলেছেন বাফুফের নারী কমিটির চেয়াম্যান মাহফুজা আক্তার কিরণ। তবে ছোটন তার সিদ্ধান্ত না পাল্টানোর সিদ্ধান্তে অনড় আছেন বলে জানা গেছে।

Comments

The Daily Star  | English
India visa restrictions for Bangladeshi patients

A wake-up call for Bangladesh to reform its healthcare

India’s visa restrictions on Bangladeshi nationals, while initially perceived as a barrier, could serve as a wake-up call for Bangladesh to strengthen its healthcare system and regain the confidence of its patients.

11h ago