পাকিস্তানের বহুমাত্রিক সংকট, সমাধান কোন পথে
পাকিস্তানে বিভিন্ন পর্যায়ে চলছে বহুমাত্রিক সংকট। বিশেষ করে দেশটিতে অর্থনীতির ভারসাম্যহীনতা জন্ম নিয়েছে অনেক কারণে। এর যে কাঠামো, তা সরকারের মাত্রাছাড়া সম্পৃক্ততার ভারে ন্যুব্জ। রাজনৈতিক নেতাদের অযোগ্যতা এবং সিদ্ধান্ত গ্রহণে সামরিক নেতৃত্বের সম্পৃক্ততা দেশটার অর্থনৈতিক গতিশীলতার জন্য বড় এক বাঁধা। অপরদিকে পাকিস্তানে আছে বড় এক ইনফর্মাল ইকনমি, যা অরক্ষিত এবং নিয়ন্ত্রণের বাইরে রয়ে গেছে। কৃষি কর্মশক্তির ভূমিকা এ অর্থনীতিতে অনেক বড়, তুলার সঙ্গে সম্পর্কিত উৎপাদন কার্যক্রমে এ অর্থনীতি অনেক বেশি মনোযোগী।
দেখা যায়, পাকিস্তানের ব্যাংকে ডলার নেই। দোকানে আটা নেই। বিদ্যুৎকেন্দ্র চালানোর জ্বালানি নেই। দিন দিন কলকারখানা বন্ধ হয়ে যাওয়ায় চাকরি নেই। এইভাবে নিত্যপণ্যের সংকট ছাড়াও নানান সংকট দেখা দিয়েছে পাকিস্তানে। সব মিলে পাকিস্তানের অর্থনৈতিক সঙ্কটের বীজ তার কাঠামোর মধ্যেই রয়েছে। একটি অর্থনীতিতে যদি কাঠামোগত সমস্যা থাকে, তাহলে সে ভারসাম্যহীন হবেই। সেখানে অর্থনীতির টেকসই প্রবৃদ্ধি ঘটবে না । এমন অর্থনীতি নিজেই নিজের উন্নয়নের পথে বাঁধা।
কম বিনিয়োগ ও কম রপ্তানি, সরকারি নীতিতে সঞ্চয়ের হার কম এবং নিম্ন উৎপাদনশীলতা বৃদ্ধির চক্র পাকিস্তানের অর্থনৈতিক কাঠামোকে বিশেষ চরিত্র দিয়েছে। এর সঙ্গে যুক্ত আছে মানব সম্পদে অপর্যাপ্ত বিনিয়োগ, যথোচিত কর রাজস্ব সংগ্রহে সরকারের ব্যর্থতা , ক্ষুদ্র ও মাঝারি শিল্পের প্রতি অবহেলা। সবকিছুর উপরে আছে অকার্যকর শাসন ও প্রাতিষ্ঠানিক কাঠামোর অভাব এবং জবাবদিহিতার অনুপস্থিতি।
এ অর্থনীতি বর্তমানে যেসব খাদে আটকা পড়েছে, তার মধ্যে আছে সামরিক খাতের ভারি বোঝা , নিম্ন প্রবৃদ্ধি, উচ্চমূল্যস্ফীতি, বেকারত্ব, বিনিয়োগের অব্যাহত অবনতি, বিপুল মাত্রায় রাজস্ব ঘাটতি। দেশটির অর্থনীতি এমন এক দৃশ্যমান ভারসাম্যের উপর দাঁড়িয়ে আছে, যা ভঙ্গুর ও ক্ষয়িষ্ণু। এটা সবার জানা যে, পাকিস্তানে বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ কমেই চলছে। কারণ বিদেশ থেকে পুঁজি প্রবেশের মাত্রা কম, বিপুল ঋণ পরিশোধের ভার তার মাথায় আর বৈদেশিক আয়ের ধীর গতি।
বিদ্যমান বাস্তবতায় পাকিস্তানের অর্থনীতি কীভাবে দক্ষতা বৃদ্ধি করবে, উদ্যোক্তাদের নিজের দিকে টানবে এবং প্রযুক্তিগত অগ্রগতি নিশ্চিত করবে? কীভাবে সে দূর করবে ভারসাম্যহীনতা? এজন্য অবশ্যই সংস্কারের বিকল্প নেই। চক্রীয় ম্যাক্রোইকোনোমিক সিস্টেম যখন আর কাজে দেয় না, তখন অর্থনীতির চালকদের মৌলিক কাঠামোগত সংস্কারের দিকে যেতে হয়। পাকিস্তান এখন সেই পথের মোড়ে দাঁড়িয়ে আছে।
পাকিস্তানের রিজার্ভ যে এখন ধুঁকছে , বিদেশি পুঁজিকে সে যে আকর্ষণ করতে পারছে না এবং রেমিটেন্স যে কমছে, তা মূলত অর্থনীতির কাঠামোগত সমস্যাগুলোকে সময়মত সমাধান করতে না পারার খেসারত। ধারাবাহিক ইনক্লুসিভ গ্রোথ না হওয়ায় সামাজিক খাত সমূহের স্থিতিশীলতা হুমকির কবলে পড়েছে। বিভিন্ন খাতে বিনিয়োগের জন্য যে পরিমাণ অর্থের প্রয়োজন, সে তুলনায় সঞ্চয়ের মাত্রা অব্যাহতভাবে কমছে। আর প্রধানত এ কারণে পাকিস্তানকে নির্ভর করতে হয় বিদেশি পুঁজির উপর। যখন বিদেশি পুঁজি পাওয়া যায় না, তখন বিনিয়োগের হার নিচের দিকে নামতে থাকে। ফলে অর্থনীতির বৃদ্ধি যেমন ব্যাহত হয়, তেমনি কর্মসংস্থান বাঁধাগ্রস্ত। পাকিস্তানে ব্যক্তিগত সঞ্চয়ের মাত্রাও কম। এর পেছনে যে কারণগুলো লক্ষ্য করা যায়, তার মধ্যে রয়েছে আয়ের অস্থিতিশীলতা, সঞ্চয়ের সংস্কৃতির অভাব, সুদ, শিক্ষার নিম্নস্থর, উচ্চমূল্যস্ফীতি ও বিপুল পরিমাণে ও আকারে একান্নবর্তী পরিবার।
জ্বালানি সঙ্কটে দেশটি কম্পমান, এর কারণ এই নয় যে, জ্বালানি খাতে ভর্তুকি দেওয়া হচ্ছে না। বরং লক্ষ্যবিহীন ভর্তুকি নিজেই একটা সমস্যা হয়ে দাঁড়িয়েছে। সঙ্গে যুক্ত আছে সার্কুলার ঋণ, বিতরণ সমস্যা ও অব্যবস্থাপনা এবং অব্যাহত চুরি। সরকারকে ভর্তুকি দিতে হয় মূলত ডিস্ট্রিবিউশন কোম্পানির প্রয়োজনে। কারণ তারা জ্বালানির যে মূল্য ধার্য করেছে, তার চেয়ে বেশি হয়ে গেছে উৎপাদনে। ফলে জ্বালানির দাম বাড়াতে হয়, না নয় সরকারকে ভর্তুকি দিতে হয়। কিন্তু সস্তা শ্রম মজুদ থাকার পরেও উৎপাদন খরচ কেন এতো বেশি? এর কারণ তালাশ করলে অব্যবস্থাপনা ও বহুমুখী দুর্নীতির চিত্র ধরা পড়বে। পাকিস্তানে বিদ্যুতের দাম অনেক বেড়েছে। কারণ? সাধারণত বলা হয় তেলের অধিক মূল্য , চুরি এবং অধিক সাইন লসের কারণে বিদ্যুতের দাম বাড়ে। কিন্তু এর চেয়েও বড় কারণ বোধ করি , বিদ্যুৎ উৎপাদনে অদক্ষতা, বিদ্যুৎ উৎপাদনকারী কোম্পানিগুলোর অপ্রচলিত প্রযুক্তির ব্যবহার, তাদের অপচয় এবং ঘন ঘন প্লান্ট ভেঙে যাওয়া ।
পাকিস্তানে অনেক আগেই ডিমান্ড সাইড ব্যবস্থা চালু করা উচিত ছিলো । চাহিদার বাস্তব সম্মত দিক বিচার করে যোগান নিশ্চিত করা দরকার। কিন্তু ঘটছে উল্টোটি। চাহিদার নীতিগত যাচাই প্রক্রিয়া এখানে সক্রিয় নয়।
পাকিস্তানে অবৈধ উপায়ে ইকোনোমির বড় এক অংশ জাতীয় আইন ও প্রবিধানের আওতার বাইরে থেকে যায়। এ অর্থনীতির আছে অলিখিত প্রকৃতি। ফলে সরকারী পরিসংখ্যানে তার অনেক কিছুই জায়গা পায় না। ফলে প্রায়ই অফিসিয়াল অর্থনৈতিক সূচক হতাশাজনক অবস্থানে থাকে। সরকারের জন্য অনানুষ্ঠানিক অর্থনীতির নথিপত্রও জরুরী ।
পূর্ণ বা আংশিকভাবে রাষ্ট্রীয় মালিকানাধীন এন্টারপ্রাইজ বা SOE সমূহের ব্যবস্থাপনায় সরকারের ব্যর্থতা প্রকট। লোকসানে থাকা SOE সমূহ একদিকে বিপুল ঋণ দান করছে, তেমনি বড় বড় ও অনিয়ন্ত্রিত বাজেটও হাতে নিচ্ছে, যা জনসাধারণের অর্থকে চাপে ফেলছে, অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধিতেও আনছে স্থবিরতা। কিন্তু SOE কেন লোকসানে পড়ছে? কারণ দুর্নীতি, অদক্ষতা, অতিরিক্ত জনবল , এবং অদক্ষ কর্মী। সরকার চায় রাষ্ট্রীয় উদ্যোগগুলো অব্যাহত থাকুক, ফলে সে SOE কে অর্থ দিচ্ছে। ভালো কথা। কিন্তু তার উৎপাদনশীলতার সঙ্গে বাড়াতে হবে দক্ষতা, টেকসই উন্নয়নে তাদেরকে চালিত করতে হবে, সেজন্য কোনো কার্যকর প্রচেষ্টা লক্ষ্য করা যায় না। ফলে প্রতি বছর এসব প্রকল্পকে টিকিয়ে রাখার জন্য সরকারকে বিপুল অর্থ ব্যবহার ও ব্যয় করতে হয়।
সংস্কার সত্ত্বেও পাকিস্তানের ট্যাক্সব্যবস্থা অসুস্থ । যথাযথ ফলাফল প্রদানের জন্য সে যথেষ্ট পারঙ্গম নয়। ট্যাক্স সংস্কারে সরকার দোলাচলের শিকার ছিলো। কঠোর সিদ্ধান্ত নিতে পারেনি। যথেষ্ট প্রতিশ্রুতির প্রতিফলনও ছিলো না এতে। বারবার পাকিস্তান উইথহোল্ডিং ট্যাক্স প্রথারই আশ্রয় নিচ্ছে। যা কর আদায়ে সরকারের দক্ষতার অভাবের জানান দেয়, সদিচ্ছার অভাবের কথা বলে। কর ব্যবস্থায় রয়েছে অনেক ফাঁক ও ফাঁকি। নির্দিষ্ট কিছু কার্যক্রমকে করের আওতার বাইরে রেখে দেওয়া হয়। এবং সেটা কোনো পাবলিক বিতর্ক ছাড়াই।
করের আওতার বাইরে আছে বেশির ভাগ সেবাখাত ও ব্যবসা। আদায় করা হচ্ছে না কৃষিখাতের আয়কর। আনুষ্ঠানিক খাতের শিল্পগুলো সরকারের পক্ষ থেকে ভোক্তাদের কাছ থেকে বিক্রয় কর আদায় করে। কিন্তু সরকারকে তা যথাযথভাবে পরিশোধ করছে না। যারা কর দেয় না কিংবা যারা ফাঁকি দেয়, তারা প্রায়ই সাধারণ ক্ষমা স্কিমের আওতায় রেহাই পেয়ে যাচ্ছে। প্রতিটি সরকার এই স্কিমকে জারি রাখছে। এসব গুরুতর সমস্যা থেকে কর ব্যবস্থার উত্তরণ ঘটানো জরুরি। কিন্তু এ জন্য সত্যিকার প্রতিশ্রুতি, সদিচ্ছা ও দক্ষতার প্রতিফলনের বিকল্প নেই।
নিয়ন্ত্রক ব্যবস্থার দুর্বলতার কারণে অর্থনীতি নানাভাবে খাবি খাচ্ছে। এখানে প্রাতিষ্ঠানিক ক্ষমতা দুর্বল, আইন ও প্রবিধানের প্রয়োগ শিথিল। ফলে কর আইন ও প্রতিযোগিতা আইন তার শক্তি প্রদর্শন করতে পারছে না। বড় বড় রাঘববোয়ালেরা কর ফাঁকি দিচ্ছে নিয়মিতই। তাদের সঙ্গে আছে করকর্মকর্তাদের যোগসাজশ। সিস্টেমের মধ্যেও প্রচুর ফাঁক-ফোকর রয়েছে, তাই কর না দিয়ে বা নামমাত্র কর দিয়ে দিব্যি পার পেয়ে যাচ্ছে লোকেরা।
পাকিস্তানে প্রতিযোগিতা আইন অনেক ক্ষেত্রেই অপ্রযোজ্য। এ আইনই তার দুর্বলতা দিয়ে বিক্রেতাদের প্রতারণায় সহায়তা করে; কী দামের ক্ষেত্রে, কী মানের ক্ষেত্রে। এর মানে দাঁড়াচ্ছে পাকিস্তানের অর্থনৈতিক সঙ্কটের গোড়ায় অর্থনৈতিক ব্যবস্থাপনার জটিল ও গভীর সমস্যা। সেখানকার অর্থনৈতিক কাঠামোর সংস্কার একান্তই জরুরি। সেই সংস্কারকে অবশ্যই হতে হবে পরিকল্পিত, বাস্তব ও কৌশলগতভাবে সুদূরপ্রসারি।
সংস্কারের ক্ষেত্রে মনে রাখতে হবে বেকারত্ব, পরিবেশের অবনতি, অর্থনৈতিক স্থানচ্যুতির কথা। এই ক্ষেত্রে সামাজিক প্রভাবগুলোকেও বিবেচনায় রাখতে হবে। কোনো প্রদেশের সাথে বৈষম্য না করেই সংস্কার সম্পাদন করতে হবে। কেন্দ্রীয় ও প্রাদেশিক সরকারগুলোর সদিচ্ছা ও পরামর্শ এ জন্য জরুরি। জরুরি বৃহত্তর জাতীয় ঐক্য ।
যদি উচ্চ বিনিয়োগ কামনা করেন, তাহলে তাকে উৎসাহিত করুন বাণিজ্য, SOE এবং ব্যবসায়িক পরিবেশের ক্ষেত্রে কাঠামোগত সংস্কার দিয়ে। SOE কে পুনর্গঠন করতে হবে আর্থিক স্থিতিশীলতার পুনরুদ্ধারের জন্য, পাকিস্তানের ভবিষ্যৎ অর্থনৈতিক সম্ভাবনাকে উজ্জীবিত করার জন্য এবং বিনিয়োগকারীদের আস্থা বাড়ানোর জন্য। এর ফলে যেন অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি নিশ্চিত হয় এবং কর্মসংস্থান বৃদ্ধি পায়। বাণিজ্যের প্রশ্নে রপ্তানি বিরোধী নীতির প্রতি পক্ষপাত চলবে না। রপ্তানি বাজারে বৈচিত্র্য আনতে হবে। রপ্তানিকে উন্নীত করতে হবে আন্তর্জাতিক প্রতিযোগিতায়। যা বৈশ্বিক ও আঞ্চলিক বাজারে পাকিস্তানের প্রতিদ্বন্দ্বিতা সক্ষমতাকে বাড়িয়ে তুলবে। ব্যবসার পরিবেশকে বন্ধুত্বপূর্ণ করা, স্টার্ট-আপ পদ্ধতি সহজ করা, কোম্পানির আন্তর্জাতিকীকরণ, উদ্যোক্তাদের শিক্ষা, প্রশাসনিক ভার কমানো এবং উদ্যোক্তাদের উন্নয়নের জন্য শ্রেষ্ঠত্বের পুরস্কার প্রবর্তন দরকার।
পাকিস্তানের জন্য জরুরি উচ্চতর ও অন্তর্ভুক্তিমূলক প্রবৃদ্ধি। সে জন্য বেসরকারি খাতকে সহযোগিতা করতে হবে। কিন্তু পাকিস্তানে আছে এই খাতের প্রতি অসহযোগী নীতি। তাকে সহযোগিতার পাশাপাশি কার্যকর, যথাযথ নিয়ন্ত্রক পরিবেশ নিশ্চিত করতে হবে এবং সরকারকে অবশ্যই রাজস্ব ব্যবস্থাপনাকে ঢেলে সাজাতে হবে। অপব্যয় প্রতিরোধ করতে হবে। যে সব ব্যয় অগ্রাধিকারমূলক নয়, সেগুলোর মাত্রা কমিয়ে আর্থিক বিকেন্দ্রীকরণ কাঠামোকে শক্তিশালী করতে হবে। জনসাধারণের অর্থকে নিরাপত্তা ও গতিশীলতা দিতে হবে। অর্থনীতিতে সরকারের সম্পৃক্ততা কমাতে হবে। সরকার বরং সামাজিক ভৌত কাঠামো এবং দারিদ্রের সামাজিক সুরক্ষা নিশ্চিত করণে অধিক সক্রিয় হোক। বিশেষ করে অকৃষি খাত ও নন-টেক্সটাইল খাতের প্রতি অমনোযোগ ও অসহযোগিতা দূর করার বিষয় ভাবতে হবে।
সার্বিকাভবে দেখা যাচ্ছে প্রাত্যহিক প্রয়োজনীয় খাদ্য ও জ্বালানির সংস্থানের জন্য লড়াই করে যাচ্ছে জনগণ। ফলে সংকট সমাধানে লক্ষ্যহীন ভর্তুকি বন্ধ করে জ্বালানি খাতের সংস্কার এবং আর্থিক খাতে স্থিতিশীলতা নিশ্চিত করতে হবে দ্রুত। দ্রুত বাস্তবায়ন করতে হবে আর্থিক নীতি। কমাতে হবে মুদ্রাস্ফীতি। তবে এসব প্রক্রিয়া সময় লাগবে বটে। কিন্তু শুরু করতে বিলম্ব করা উচিৎ হবে না। তাহলে মাশুল দিতে হবে দীর্ঘস্থায়ী...
Comments