পিস্তল হাতে এমপির মিছিল: 'আশ্বস্ত' ডিসি

পিস্তল হাতে মিছিলে চট্টগ্রাম-১৬ (বাঁশখালী) আসনের সংসদ সদস্য ও উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি মোস্তাফিজুর রহমান চৌধুরী। ছবি: ভিডিও থেকে নেওয়া

পিস্তল হাতে মিছিল করে আবারও বিতর্কের সৃষ্টি করেছেন চট্টগ্রাম-১৬ (বাঁশখালী) আসনের সংসদ সদস্য ও উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি মোস্তাফিজুর রহমান চৌধুরী।

গত সোমবার বিকেলে আওয়ামী লীগের সভাপতি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে 'হত্যার হুমকির' প্রতিবাদে আয়োজিত মিছিলে তাকে পিস্তল হাতে দেখা যায়।

তবে এ ঘটনায় মৌখিকভাবে আশ্বস্ত করায় মোস্তাফিজুর রহমানের কাছে লিখিতভাবে ব্যাখ্যা চায়নি জেলা প্রশাসক।

সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়া একটি ভিডিওতে দেখা গেছে, ঘটনার দিন সংসদ সদস্য মোস্তাফিজুর মিছিলের সামনে হাঁটছিলেন। তার ডান হাতে একটি পিস্তল ও বাম হাতে কালো একটি ব্যাগ ছিল। সামনে ছিল পুলিশ।

পুলিশি পাহারার মধ্যে মোস্তাফিজুর অস্ত্র হাতে মিছিলে কেন, এই নিয়ে প্রশ্ন ও আলোচনা চলছে।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে বাঁশখালী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) কামাল হোসেন দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন 'সংসদ সদস্য মোস্তাফিজুরের অস্ত্রটি বৈধ, তার নামে লাইসেন্স করা। অস্ত্রটি তার কাছেই থাকে।'

আগ্নেয়াস্ত্রের লাইসেন্স প্রদান, নবায়ন ও ব্যবহার নীতিমালা-২০১৬ এর আগ্নেয়াস্ত্রের বহন/ব্যবহার ও নীতিমালায় বলা আছে, 'কোনো ব্যক্তি স্বীয় লাইসেন্সে এন্ট্রিকৃত অস্ত্র আত্নরক্ষার নিমিত্তে নিজে বহন/ব্যবহার করতে পারবেন। তবে অন্যের ভীতি/বিরক্ত উদ্রেক করতে পারে এমনভাবে অস্ত্র প্রদর্শন করা যাবে না। নীতিমালার ২৫ (ঝ) তে বলা হয়েছে বর্ণিত যে কোনো শর্ত ভঙ্গের কারণেই লাইসেন্স বাতিলযোগ্য গণ্য হবে।'

জানতে চাইলে জেলা প্রশাসক আবুল বাশার মোহাম্মদ ফখরুজ্জামান দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, 'পত্রিকায় খবর দেখে আমি তার কাছে বিষয়টি জানতে চেয়েছি। তাকে জিজ্ঞেস করেছিলাম কেন অস্ত্র দেখিয়েছেন। তিনি সেটিকে 'ডিফেন্ড' করেছেন। তিনি আমাকে বলেছেন তার অন্য কোনো উদ্দেশ্য ছিল না।'

'তিনি বলেছেন, পিস্তল নিচু অবস্থায় ছিল। কাউকে ভয় দেখানোর জন্য নয়। তার কথায় আশ্বস্ত হওয়ায় আর লিখিতভাবে কিছু চাওয়া হয়নি। তারপরও তাকে ভবিষ্যতে এই দিকে বিশেষ খেয়াল রাখার অনুরোধ করা হয়েছে,' বলেন তিনি।

এক্ষেত্রে আইনের ব্যতয় হয়েছে কি না জানতে চাইলে জেলা প্রশাসক বলেন, 'কেউ যদি এই বিষয়ে ভীত হয়েছেন বা বিরক্ত হয়েছেন বলে অভিযোগ দেন, তাহলে আমরা তা খতিয়ে দেখব।'

আওয়ামী লীগের মনোনয়ন নিয়ে ২০১৪ ও ২০১৮ সালে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন মোস্তাফিজুর রহমান চৌধুরী। সংসদ সদস্য হওয়ার পর থেকেই বিতর্ক তার পিছু ছাড়ছে না।

২০১৬ সালের ১ জুন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার কার্যালয়ে ডেকে নিয়ে এসে উপজেলা নির্বাচন কর্মকর্তা জাহিদুল ইসলামকে চড়-থাপ্পড় ও কিল-ঘুষি মেরে আলোচনায় আসেন মোস্তাফিজুর রহমান। ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে পছন্দমতো ভোট গ্রহণকারী কর্মকর্তা নিয়োগ না দেওয়ায় তাকে মারধর করা হয়েছিল। এই ঘটনায় জাহিদুল ইসলাম বাঁশখালী থানায় একটি মামলা করেছিলেন। জাহিদুল এখন শরীয়তপুরের গোসাইরহাট উপজেলার কর্মকর্তা।

এরপর ২০১৯ সালের ফেব্রুয়ারিতে দলের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদেরকে নিয়ে মোস্তাফিজুর রহমানের কটূক্তি করার একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়লে আবারও আলোচনায় আসেন তিনি। ২০২০ সালের আগস্ট মাসে বাঁশখালীতে মুক্তিযুদ্ধ হয়নি বলে মন্তব্য করেও বিতর্কের সৃষ্টি করেন মোস্তাফিজুর।

অস্ত্র নিয়ে মিছিলের বিষয়ে জানতে তার মোবাইলে একাধিকবার কল করা হলেও তিনি তা রিসিভ করেন নি।

Comments

The Daily Star  | English

US to make history either way

Kamala Harris and Donald Trump launched a final frenzied campaign blitz yesterday, hitting must-win Pennsylvania on the last day of a volatile US presidential race that polls say is hurtling towards a photo finish.

8h ago