মোটরসাইকেল পরিষ্কার: যা করবেন, যা করবেন না
ঢাকার মতো প্রচণ্ড ঘনবসতি, ট্রাফিক আর ধূলাবালির শহরগুলোতে বাহন হিসেবে বাইক বা মোটরসাইকেল অত্যন্ত জনপ্রিয়। এর পেছনে অনেকগুলো কারণও আছে। দ্রুত গন্তেব্যে পৌঁছানো যায়, চালানো সহজ, খরচ তুলনামূলক কম, ইত্যাদি।
মোটরসাইকেল চালালে সেটি নোংরা হয় আর আমরা প্রত্যেকেই সময়ে সময়ে সেটি পরিষ্কার করি, যাতে এর কার্যক্ষমতা অক্ষুণ্ন থাকে আর দেখতে চকচকে লাগে।
এই বিষয়টি মাথায় রেখে আমরা একটি তালিকা তৈরি করেছি, যেখানে তুলে ধরা হয়েছে মোটরসাইকেল পরিষ্কারের সময় কী করা উচিত এবং কী করা উচিত নয়। তালিকাটি অনুসরণ করলে মোটরসাইকেল ধোয়াটাও উপভোগ্য হয়ে উঠতে পারে।
পানি রাখুন ২ পাত্রে
যদি পাইপের মাধ্যমে পানি দেওয়ার ব্যবস্থা না থাকে, তাহলে প্রথমে ২টি বালতিতে বা পাত্রে পানি ও একটি পরিষ্কার সুতি কাপড় নিতে হবে। বালতির পানিতে কাপড় ভিজিয়ে মোটরসাইকেলের ধূলাবালি পরিষ্কার করুন। কিছুক্ষণ পরই দেখবেন কাপড়টি ময়লা হয়ে গেছে। ময়লা কাপড়টি যদি একই বালতির পানি দিয়ে পরিষ্কার করেন, তাহলে সেই ময়লা আবারও মোটরসাইকেলে চলে যাবে। মোটরসাইকেল আর পরিষ্কার হবে না।
এ জন্যই দুটো আলাদা আলাদা বালতি প্রয়োজন। এক বালতিতে মোটরসাইকেল ধোয়ার শ্যাম্পু (অথব্য পরিষ্কার করার অন্য উপাদান) আর অন্যটিতে শুধু পরিষ্কার পানি রাখুন। যখন ময়লা কাপড় পরিষ্কার করার প্রয়োজন হবে, তখন পরিষ্কার পানির বালতিতে সেটি পরিষ্কার করুন এবং পুনরায় শ্যাম্পুর পানিতে ভিজিয়ে মোটরসাইকেল পরিষ্কার করুন।
মোটরসাইকেল পরিষ্কার করার জন্য মাইক্রোফাইবার কাপড় হলে ভালো হয়। এই কাপড় যেহেতু নরম, তাই এতে পরিষ্কার ভালো হবে এবং মোটরসাইকেলর রং উঠে যাওয়া বা গায়ে দাগ পড়ার সম্ভাবনা থাকবে না।
বাইক ছায়ায় রেখে পরিষ্কার করুন
সূর্যের আলোতে বাইক পরিষ্কার করবেন না। সাবান এবং সূর্যালোক একসঙ্গে যথাযথভাবে কাজ করতে পারে না। সূর্যের আলোতে সাবান দ্রুত শুকিয়ে যেতে পারে। ফলে বাইকের গায়ে সাবানের দাগ পড়ে যাওয়ার সম্ভাবনা থাকে, যা পানি দিয়েও অনেক সময় সহজে পরিষ্কার হয় না। তাই গ্যারেজ বা কোনো গাছের নিচে বাইক পরিষ্কার করুন।
সময় নিয়ে পরিষ্কার করুন
বাইক পরিষ্কার করতে আমাদের অনেকেরই ভালো লাগে। তবে অনেকে আবার ব্যস্ততা বা আলসেমির কারণে দীর্ঘদিন বাইক পরিষ্কার করেন না। যার ফলে বাইকের রং জ্বলে যাওয়াসহ অন্যান্য ক্ষতি হয়।
তবে বাইকের দীর্ঘস্থায়ীত্বের জন্য অবশ্যই এটিকে নিয়মিত পরিষ্কার রাখা উচিত। বাইক খুব তাড়াহুড়ো করে পরিষ্কার করা উচিত নয়। দ্রুত পরিষ্কার করতে গেলে বাইকের যেসব ক্ষতি হতে পারে-
- বাইকের রং নষ্ট হতে পারে।
- তাড়াতাড়ি পরিষ্কার করতে গিয়ে যদি বাইকের গায়ে ধূলাবালি থেকে যায়, তাহলে অযথা সময় নষ্ট হবে।
- বাইকের গুরুত্বপূর্ণ ও মূল্যবান যন্ত্রাংশ ক্ষতিগ্রস্থ হতে পারে।
মোটরসাইকেল পরিষ্কার করলেই শুধু হবে না, যথাযথভাবে রক্ষণাবেক্ষণও করতে হবে। তাই সময় নিয়ে বাইক পরিষ্কার করাই উত্তম।
চেইনে গ্রিজ দিন
বাইক পরিষ্কারের সময় যেহেতু প্রচুর ডিটারজেন্ট বা পরিষ্কারক পদার্থ ব্যবহার করা হয়, তাই গ্রিজ ধুয়ে যাওয়ার অনেক সম্ভাবনা থাকে। এ ক্ষেত্রে বাইকের যে অংশে গ্রিজ প্রয়োজন, সে অংশটি ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে ওঠে। যেমন- চেইন।
তাই বাইক পরিষ্কার পর চেইনে পুনরায় গ্রিজ দিতে ভুলবেন না। কারণ, গ্রিজ ছাড়া চেইন ঠিকমতো কাজ করতে পারে না, ফলে দুর্ঘটনাসহ অনেক ধরনের বিপদের ঝুঁকি থাকে।
ওয়াক্স ব্যবহার করুন
বাইকের উজ্জ্বলতা বাড়াতে চান? তাহলে ওয়াক্স ব্যবহার করুন। বাইক যদি দীর্ঘদিন না চালানোর সিদ্ধান্ত নিয়ে থাকেন, তাহলে আগে ভালোভাবে ওয়াক্স করুন। একবার ভালোভাবে ওয়াক্স করলে বাইক বেশ কিছুদিন চকচকে থাকে।
ওয়াক্স করলে বাইক যে শুধু চকচকেই লাগে তা নয়, এটি বাইকের রংকেও অক্ষত রাখে।
সূত্র: ডেমন.কম
গ্রন্থনা: আহমেদ হিমেল
Comments