সেন্টমার্টিনে আতঙ্কের দিন-রাত: তীব্র বাতাস, উত্তাল সাগর

গতকাল রাতের একটি আশ্রয়কেন্দ্র এবং টেকনাফে বইছে দমকা হাওয়া। ছবি: সংগৃহীত

ঘূর্ণিঝড় মোখার প্রভাবে রাত থেকেই সেন্টমার্টিনে ঝড়-হাওয়া শুরু হয়েছে। বাতাসের গতিও অনেক বেড়েছে।

পর্যটন ব্যবসায়ী তকি উসমানি খোকা রাতে কিছু সময় নিজের বাড়িতে ছিলেন। আশেপাশের মানুষকে সহায়তা করার চেষ্টা করেছেন। আশ্রয়কেন্দ্রে যেতে বলেছেন, অনেককে নিয়ে গেছেন। তীব্র বাতাস আর সাগরের গর্জনে রাত কেটেছে আতঙ্কে। সকাল ৬টার দিকে নিজেও গিয়ে উঠেছেন আশ্রয়কেন্দ্রে।

আজ রোববার সকালে সেন্টমার্টিন থেকে টেলিফোনে দ্য ডেইলি স্টারকে তিনি এসব তথ্য জানান।

সকাল সাড়ে ৮টায় তিনি ডেইলি স্টারকে বলেন, 'এখন প্রচণ্ড বাতাস।'

সাগরের অবস্থা জানতে চাইলে তকি উসমানি বলেন, 'সাগরের অবস্থা কী বলব! বাতাসের মধ্যে সাগর যে অবস্থায় থাকে, সে অবস্থাতেই আছে। ভয়ংকর অবস্থা।'

সেন্টমার্টিনে আজকে কয়টায় জোয়ার হবে, জিজ্ঞেস করলে তিনি বলেন, 'সকাল ১০টা থেকে সোয়া ১০টায় শুরু হবে জোয়ার। ৪ ঘণ্টা থাকবে এই জোয়ার।'

স্থানীয় টেকনাফ প্রশাসন থেকে আপনাদের সঙ্গে যোগাযোগ করেছে কি না, প্রশ্ন করলে তিনি বলেন, 'কোনো কিছুই করেনি। আমাদের সেন্টমার্টিনের মধ্যে কিছু লাইফ জ্যাকেট ছিল। কিছু লাইফ জ্যাকেট ছিল সরকারি। এগুলোর চেয়ারম্যান-মেম্বাররা তাদের পরিবারের জন্য নিয়ে গেছে। আর কাউকে দেওয়া হয়নি।'

এখন আশ্রয়কেন্দ্রে কত মানুষ আছে, জানতে চাইলে তকি উসমানি বলেন, 'নেভির আশ্রয়কেন্দ্রে ২৬৫ জন আছেন। হাসপাতালে মধ্যে ১ হাজারের বেশি মানুষ আছেন। প্রাইমারি স্কুলের মধ্যে আছেন ৩৮৪ জন, সেভেন স্টার হোটেলের মধ্যে আছেন ৮০ থেকে ৮৫ জন।'

বলা হচ্ছে ৪ হাজার মানুষ আশ্রয়কেন্দ্রে আছেন। আসলে কি তাই? 'হ্যাঁ এতগুলো মানুষ আশ্রয়কেন্দ্রে।'

বাকি সাড়ে ৩ হাজার মানুষ কোথায় আছেন, জানতে চাইলে তিনি বলেন, 'তারা বাড়িতে আছেন। আশ্রয়কেন্দ্র ছাড়া যে যার যার মতো বাড়িতে আছেন।'

মোবাইল ফোন চার্জ দিচ্ছেন কীভাবে, তকি বলেন, 'অনেকের বাড়িতে ছোট ছোট জেনারেটর আছে। সেগুলো কিছুক্ষণ চালিয়ে আমরা মোবাইল চার্জ দিচ্ছি।'

আপনি কি আশ্রয়কেন্দ্রে গিয়েছেন, জানতে চাইলে এই পর্যটন ব্যবসায়ী বলেন, 'আমি সকাল সাড়ে ৬টায় আশ্রয়কেন্দ্রে এসেছি। আমি হাসপাতালের আশ্রয়কেন্দ্রে আছি।'

সেখানে খাওয়া-দাওয়ার কী অবস্থা জানতে চাইলে তিনি বলেন, 'খিচুড়ি রান্না করা হয়েছিল রাতে। যে খাবার দেওয়া হয়েছে, তার মধ্যে শতকরা ৪০ শতাংশ মানুষ খাবার পেয়েছেন। বাকি ৬০ শতাংশ খাবার পায়নি। যার কাছে শুকনো খাবার ছিল, তিনি শুকনো খাবার খাচ্ছেন। যার কাছে নেই তিনি অন্যের কাছে হাত পাতছেন।'

খিচুড়ি রান্না করে ২ থেকে ৩ দিন দিন খাওয়া যাবে এমন চাল-ডাল কি আছে, জানতে চাইলে তকি উসমানি বলেন, 'চাল-ডাল কিছু আছে। কত যে আছে তা জানি না। সঠিক কথা কেউ বলছে না। মানুষ খাবার পাবে কি না জানি না। ঘূর্ণিঝড় তো হঠাৎ করে আসেনি। কেউ আমাদের কথা ভাবল না। একটি এনজিও থেকে ৩-৪ দিন আগে যোগাযোগ করেছিল। তারপর তারাও আর যোগাযোগ করেনি। ভাবছি আমরা যদি মানুষই হয়ে থাকি, তবে আমাদের কথা কেউ ভাবল না কেন? গরু-ছাগল, কুকুরের আশ্রয়ের জায়গা নেই, খাবার নেই। আমাদের অবস্থাও প্রায় একই রকম।'

Comments

The Daily Star  | English

Al Bakhera killings: Water transport workers call for indefinite strike

Bangladesh Water Transport Workers Federation rejects ‘sole killer’ claim, demands arrest of real culprits, safety of all workers

1h ago