সংবাদপত্রের স্বাধীনতা পরিপন্থী আইন প্রণয়ন বন্ধের আহ্বান সম্পাদক পরিষদের

প্রেসক্লাবে সম্পাদক পরিষদ আয়োজিত ‘মতপ্রকাশের স্বাধীনতা সকল প্রকার মানবাধিকারের চালিকাশক্তি’ শীর্ষক আলোচনা সভায় বক্তারা। ছবি: এমরান হোসেন/স্টার

সংবাদপত্রের স্বাধীনতার পরিপন্থী যেকোনো আইন প্রণয়ন বন্ধ করতে সরকারের প্রতি আহ্বান জানিয়েছে সম্পাদক পরিষদ। এ ছাড়া, সরকারের কাছে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন বাতিলের দাবিও জানানো হয়েছে।

আজ মঙ্গলবার জাতীয় প্রেসক্লাবে এক আলোচনা সভায় পরিষদের সভাপতি এবং দ্য ডেইলি স্টারের সম্পাদক ও প্রকাশক মাহফুজ আনাম এসব দাবি তুলে ধরেন।

আগামীকাল বিশ্বব্যাপী বিশ্ব মুক্ত গণমাধ্যম দিবস পালিত হতে যাচ্ছে। দিনটি উপলক্ষে 'মতপ্রকাশের স্বাধীনতা সকল প্রকার মানবাধিকারের চালিকাশক্তি' শীর্ষক আলোচনা সভা আয়োজন করে সম্পাদক পরিষদ।

সভায় সভাপতির বক্তব্যে মাহফুজ আনাম বলেন, প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষভাবে মুক্ত গণমাধ্যমের কণ্ঠস্বর রোধ করে এমন ৯টির মতো আইন বর্তমানে দেশে কার্যকর রয়েছে।

এ ছাড়া, প্রস্তাবিত প্রেস কাউন্সিল আইনসহ এ ধরনের আরও ৪টি আইনের খসড়া প্রস্তুত করা হয়েছে বলেও জানান তিনি।

তিনি বলেন, 'সম্পাদক পরিষদ বারবার সরকারকে প্রস্তাবিত প্রেস কাউন্সিল আইনের খসড়া কপি শেয়ার করার আহ্বান জানালেও, সরকার এখন পর্যন্ত তাতে সাড়া দেয়নি।'

সরকারকে এ ধরনের 'গোপন রাখার সংস্কৃতি' থেকে বেরিয়ে আসার আহ্বান জানান মাহফুজ আনাম।

এ সময় তিনি নিম্নোক্ত দাবিগুলো তুলে ধরেন। সেগুলো হলো: স্বাধীন ও মুক্ত সাংবাদিকতা বিরোধী আরও যেসব আইনের খসড়া তৈরি করা হয়েছে, সেগুলোর প্রক্রিয়া এখনই স্থগিত করতে হবে। এই খসড়া আইনগুলো চূড়ান্ত করার আগে সব অংশীজন, বিশেষ করে সাংবাদিক ও গণমাধ্যম প্রতিনিধিদের সঙ্গে আলোচনা করতে হবে।

২. গণমাধ্যমের কার্যক্রমকে প্রভাবিত করে এমন সকল বিদ্যমান আইন সংশোধন করতে হবে এবং এসব আইনে থাকা গণমাধ্যমের স্বাধীনতাবিরোধী ধারা বাতিল করতে হবে।

৩. ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন বাতিল করতে হবে কিংবা এটিকে এমনভাবে সংশোধন করতে হবে, যেন এটি শুধুমাত্র স্পষ্টভাবে সংজ্ঞায়িত সাইবার অপরাধের ক্ষেত্রে ব্যবহার করা হয় এবং মুক্ত গণমাধ্যম বা মত প্রকাশের স্বাধীনতাকে কোনোভাবেই বাধাগ্রস্ত না করে। ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন বাতিল বা সংশোধন না হওয়া পর্যন্ত এর ব্যবহার স্থগিত রাখতে হবে।

৪. সাংবাদিকদের বিরুদ্ধে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে দায়ের করা সব মামলা প্রত্যাহার করতে হবে।

৫. মুক্ত গণমাধ্যমের বিকাশে সহায়ক আইন প্রণয়ন করতে হবে এবং বর্তমানে যে ভয়-ভীতি প্রদর্শনের পরিবেশ তৈরি হয়েছে, তা দূর করতে হবে।

আলোচনা সভায় নিউ এজ পত্রিকার সম্পাদক নুরুল কবির বলেন, 'মূলত রাজনৈতিক প্রতিপক্ষ এবং স্বাধীন মতামত প্রকাশ ও সংবাদপত্রে দেশের অসঙ্গতি নিয়ে যারা লিখতে চান, তাদের বিরুদ্ধে ব্যবহার করা হয়েছে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন।'

সভাটি সঞ্চালনা করেন পরিষদের সাধারণ সম্পাদক ও বণিক বার্তার সম্পাদক দেওয়ান হানিফ মাহমুদ। তিনি বলেন, 'বিশ্ব মুক্ত গণমাধ্যম দিবস বিশ্বব্যাপী প্রতিটি সরকারকে মুক্ত গণমাধ্যমের প্রতি তাদের অঙ্গীকারের কথা স্মরণ করিয়ে দেয়।'

আলোচনা সভায় আরও বক্তব্য রাখেন দৈনিক ইত্তেফাকের সম্পাদক তাসমিমা হোসেন, সমকালের সম্পাদক মোজাম্মেল হোসেন, সাংবাদিক নেতা মঞ্জুরুল আহসান বুলবুল, প্রথম আলোর ব্যবস্থাপনা সম্পাদক আনিসুল হক, ফাইন্যান্সিয়াল এক্সপ্রেসের সম্পাদক শামসুল হক জাহিদ, দেশ রূপান্তরের ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক মোস্তফা মামুন প্রমুখ।

Comments

The Daily Star  | English

‘Shockingly insufficient’

"The proposed decision to allocate USD 250 billion per year for all developing countries is shockingly insufficient," said the adviser

4h ago