আজমত উল্লার আয় বেশি, জাহাঙ্গীরের সম্পদ

আজমত উল্লা খান ও জাহাঙ্গীর আলম। ছবি: সংগৃহীত

গাজীপুর সিটি করপোরেশন নির্বাচনে মেয়র পদে আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থী আজমত উল্লা খানের বার্ষিক আয় স্বতন্ত্র প্রার্থী হয়ে নির্বাচনে নামা জাহাঙ্গীর আলমের তুলনায় ৩ গুণেরও বেশি।

আগামী ২৫ মে অনুষ্ঠেয় ভোটে অংশ নিতে গত বৃহস্পতিবার মনোনয়নপত্র জমা দিয়েছেন এই ২ প্রার্থী। মনোনয়নপত্রের সঙ্গে আয় ও সম্পদের ঘোষণাসহ যে হলফনামা জমা দিয়েছেন তারা- তাতে এই তথ্য উল্লেখ আছে।

নির্বাচনী হলফনামায় আজমত উল্লা খান তার বার্ষিক আয় দেখিয়েছেন ৩১ লাখ ৬৫ হাজার ৫০৫ টাকা। একই পদে স্বতন্ত্র প্রার্থী জাহাঙ্গীর আলম তার বার্ষিক আয় দেখিয়েছেন সাড়ে ৯ লাখ টাকা।

তবে স্থাবর সম্পদ অর্থাৎ জমি ও দালান কোঠার দিক থেকে আজমত উল্লার তুলনায় অনেকটা এগিয়ে আছেন জাহাঙ্গীর।

২০১৮ সালে আওয়ামী লীগের মনোনয়ন পেয়ে বিপুল ভোটে জিতে মেয়র হয়েছিলেন জাহাঙ্গীর আলম। তবে এবার দলীয় মনোনয়ন পাননি তিনি। তার বদলে নৌকার প্রার্থী হিসেবে মনোনয়ন পেয়েছেন আজমত উল্লা।

বঙ্গবন্ধু ও একাত্তরে শহীদের সংখ্যা নিয়ে কটূক্তির অভিযোগ ওঠার পর ২০২১ সালের নভেম্বরে জাহাঙ্গীরকে দল থেকে বহিষ্কার করেছিল আওয়ামী লীগ। পরে মেয়র পদ থেকেও তাকে সাময়িক বরখাস্ত করে স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়। অবশ্য ক্ষমা চাওয়ায় দলের শৃঙ্খলা মেনে চলার শর্তে গত জানুয়ারিতে দল থেকে তার বহিষ্কারের আদেশ প্রত্যাহার করা হয়।

তবে ৪ মাস যেতে না যেতেই জাহাঙ্গীর দলের প্রার্থী আজমতের বিরুদ্ধে ভোটে দাঁড়িয়েছেন; মনোনয়নপত্র জমা দিয়েছেন তার মায়ের নামেও।

বৃহস্পতিবার জমা দেওয়া হলফনামায় আজমত উল্লা খান উল্লেখ করেছেন, তার মোট বার্ষিক আয়ের মধ্যে আইনজীবী পেশা থেকে আসে ৬ লাখ টাকা। এর বাইরে শেয়ার, সঞ্চয়পত্র, ব্যাংক সুদ থেকে তিনি পান ৬২ হাজার ৫০৫ টাকা। পাশাপাশি কৃষি ও তৈরি পোশাকের ৩টি প্রতিষ্ঠান থেকে তিনি বার্ষিক ২৪ লাখ ৩ হাজার টাকা সম্মানী ভাতা পান।

এর বাইরে লেখক হিসেবে আজমত উল্লা ২টি বই বিক্রি থেকে বছরে ১ লাখ টাকা পান বলে হলফনামায় উল্লেখ করেছেন। অস্থাবর সম্পদের মধ্যে নগদ ৪ লাখ ৩১ হাজার ৭৩৬ টাকা ও স্ত্রীর কাছে ২ লাখ ৩৪ হাজার ৫০৬ টাকা দেখিয়েছেন তিনি। আর নিজের কোনো গাড়ি না থাকলেও স্ত্রীর নামে একটি প্রাডো গাড়ি আছে বলে উল্লেখ করেছেন।

হলফনামার তথ্য অনুসারে আজমত উল্লার নির্মাণাধীন একটি বাড়ি আছে, কৃষিজমি নেই। অকৃষি জমি আছে ১৪০ দশমিক ৬৩ শতাংশ। স্ত্রীর নামে আছে আরও ২৩৭ দশমিক ৮ শতাংশ জমি। এ ছাড়া তার নিজের ২০ তোলা ও স্ত্রীর ৩০ তোলা সোনা আছে।

আগে আজমত উল্লার নামে একটি হত্যা মামলাসহ ৩টি মামলা থাকলেও টঙ্গী থানার হত্যা মামলার চার্জশিট থেকে তাকে অব্যাহতি দেওয়া হয়েছে এবং অন্য ২টি মামলা স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় থেকে প্রত্যাহার করা হয়েছে বলে হলফনামায় উল্লেখ করেছেন তিনি।

জাহাঙ্গীরের অকৃষি জমি ৩৩ শতাংশ থেকে বেড়ে ৮১৫ শতাংশ

জাহাঙ্গীর আলমের হলফনামা থেকে জানা গেছে, ৫ বছর আগে তার স্থাবর সম্পদের মধ্যে কৃষিজমি ছিল ১৪ দশমিক ১৫ একর, এবার তার কোনো কৃষি জমি নেই। আগে অকৃষি জমি ছিল ৩৩ দশমিক ৭১ শতাংশ, এবার তা বেড়ে ৮১৫ দশমিক ২১ শতাংশে দাঁড়িয়েছে।

৫ বছর আগে জাহাঙ্গীরের কৃষিখাত থেকে আয় ছিল দেড় লাখ টাকা। এবার তিনি কৃষিখাত থেকে আয় দেখিয়েছেন ২ লাখ ২০ হাজার টাকা। আগের নির্বাচনী হলফনামায় তিনি বাড়ি ও দোকান ভাড়া বাবদ প্রাপ্ত আয় দেখিয়েছিলেন ৪ লাখ ৩০ হাজার টাকা। এবারও তা একই আছে।

পাশাপাশি গতবার জাহাঙ্গীর ব্যবসা থেকে আয় দেখিয়েছিলেন ৯৪ লাখ ২০ হাজার টাকা, এবার সে আয় কমে ৩ লাখ টাকা হয়েছে।

এর বাইরে অস্থাবর সম্পদের মধ্যে জাহাঙ্গীরের হাতে নগদ ৪০ লাখ টাকা আছে। ৫ বছর আগে যার পরিমাণ ছিল ৭ কোটি ৪৮ হাজার ৯৬ টাকা। আগে ব্যাংকে ছিল ১ লাখ ৫৫ হাজার ৯৭১ টাকা। বর্তমানে তার জমা আছে ৫০ হাজার টাকা। এবার তিনি সঞ্চয়পত্রে বিনিয়োগ দেখিয়েছেন ১০ লাখ টাকা।

এ ছাড়া আগের হলফনামায় উল্লেখ করা ২টি গাড়ি, ৩৫ ভরি সোনা, একটি বন্দুক একই দেখিয়েছেন তিনি।

তবে ৫ বছর আগে জাহাঙ্গীরের বিরুদ্ধে কোনো ফৌজদারি মামলা না থাকলেও এবার তার বিরুদ্ধে ৮টি ফৌজদারি ও ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে মামলা আছে।

Comments

The Daily Star  | English
US dollar price rises

Explanations sought from 13 banks for higher dollar rate

BB issued letters on Dec 19 and the deadline for explanation ends today

1h ago