বোরো ফলন ভালো হলেও ন্যায্যমূল্য নিয়ে শঙ্কায় কৃষক

বোরো মৌসুম, ধান, কৃষক,
সাভারের আশুলিয়ায় একটি খেত থেকে কাটা বোরো ধান পরিবহনে তুলছেন কৃষকরা। গত বছরের মতো এবারও ফলন নিয়ে কৃষকরা খুশি। ছবিটি গত বৃহস্পতিবার তোলা। ছবি: আনিসুর রহমান

চলতি বোরো মৌসুমে ভালো ফলন হলেও কৃষকরা বলছেন, সরকার উৎপাদিত ফসলের ক্রয়মূল্য না বাড়ালে তারা ক্ষতির সম্মুখীন হবেন।

কৃষকরা বলছেন, সরকার কেজিপ্রতি ৩০ টাকা ক্রয়মূল্য দিলে তাদের উৎপাদন খরচের খুব কমই উঠে আসবে।

এছাড়া, সরকার আগামী ৭ মে থেকে ফসল ক্রয় শুরু করার আগে যেসব কৃষক তাদের উৎপাদিত ফসল বিক্রি করতে বাধ্য হচ্ছেন, তারা স্থানীয় ব্যবসায়ীদের কাছ থেকে অনেক কম দাম পাচ্ছেন। ফলে, লোকসানে পড়তে হচ্ছে তাদের।

চলতি বছর দেশের ৪৯ দশমিক ৯ লাখ হাজার হেক্টর জমিতে বোরো ধানের আবাদ হয়েছে এবং ২ দশমিক ১৫ কোটি মেট্রিক টন ফসল কাটার লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করেছে সরকার।

এ পর্যন্ত কৃষকরা হাওর এলাকা থেকে ৮৪ শতাংশ ধান সংগ্রহ করেছেন এবং সারা দেশে ২১ শতাংশ ধান কাটা হয়েছে।

দিনাজপুরের বিরল উপজেলার কৃষক কাঞ্চি কর্মকার বলেন, 'এক মণ ধান উৎপাদন করতে আমাকে প্রায় ১ হাজার ২০০ টাকা খরচ করতে হয়েছে। কিন্তু, সরকার নির্ধারিত ক্রয় মূল্য প্রায় একই।'

এই কৃষক প্রশ্ন করেন, 'তাহলে আমি কীভাবে লাভ করব?'

রাজশাহীর গোদাগাড়ী উপজেলার যোগপুর গ্রামের কৃষক মাজেদ আলী বলেন, 'আমাদের এলাকায় ধানের দাম মণ প্রতি ১ হাজার ৫০ থেকে ১ হাজার ২০০ টাকার মধ্যে ওঠানামা করছে। নিম্নমানের অজুহাত দেখিয়ে ব্যবসায়ীরা আমাদের কম দাম দিচ্ছেন।'

দাম কম হওয়া সত্ত্বেও অনেক কৃষক তাদের ফসল বিক্রি করতে বাধ্য হচ্ছেন। কারণ সংসারের প্রতিদিনের খরচ যোগাতে তাদের অর্থের প্রয়োজন।

আগামী ৩১ আগস্ট পর্যন্ত সরকার বোরো ধান সংগ্রহ করবে।

লালমনিরহাট সদর উপজেলার মহেন্দ্রনগর গ্রামের কৃষক আতিয়ার রহমান (৬৭) বলেন, 'সরকারি দর অনুযায়ী প্রতি মণের দাম পড়বে প্রায় ১ হাজার ২০০ টাকা। কিন্তু, সেই পর্যন্ত অপেক্ষা করা (সরকারি ক্রয় শুরু পর্যন্ত) আমার জন্য সম্ভব নয়। কারণ, সংসারের নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্য কিনতে আমার এই মুহূর্তে অর্থ প্রয়োজন।'

তিনি আরও বলেন, 'আমি প্রতি মণ ধান ৯০০ থেকে ৯৫০ টাকায় বিক্রি করছি।'

রাজশাহী অঞ্চলে সম্প্রতি তুষারপাত ও শিলাবৃষ্টি হলেও আবহাওয়া অনুকূলে থাকায় এ বছর ভালো ফলনের আশা করছেন কৃষকরা।

পাবনার ফরিদপুর উপজেলার দনিয়াবাড়ি গ্রামের কৃষক জিয়াউদ্দিন বলেন, 'আমি ১৫ বিঘা জমিতে ধান চাষ করেছি এবং প্রতি বিঘা থেকে ৩০ মণ ধান পাওয়ার আশা করছি। কারণ, এ বছর ধান খেতে কোনো রোগবালাই ছিল না।'

দিনাজপুর ও রংপুর অঞ্চলের অধিকাংশ কৃষক জানান, এ বছর তারা ভালো ফলনের আশা করছেন।

সিলেট অঞ্চলে ব্রি ধান-২৮ চাষ করা কয়েকজন কৃষক জানান, ছত্রাকের কারণে সৃষ্ট ব্লাস্ট রোগে তাদের ফসলের ক্ষতি হয়েছে।

সেখানকার কৃষকরা অভিযোগ করেন, স্থানীয় কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের কর্মকর্তারা ফসল রক্ষায় তাদের সহযোগিতা করেননি।

Comments

The Daily Star  | English

Stocks fall on poor performance of large companies

Indexes of the stock market in Bangladesh declined yesterday on rising the day before, largely due to the poor performance of Islami Bank Bangladesh along with the large-cap and blue-chip shares amid sales pressures..Large-cap refers to shares which account for large amounts in market capi

4h ago