বিশ্বের অসাধারণ ৫ পিরামিড

গিজার পিরামিড। ছবি: রয়টার্স
গিজার পিরামিড। ছবি: রয়টার্স

শুরুতে মিশরের রাজাদের সমাধিস্থ করার জন্যই পিরামিডগুলো নির্মাণ করা হয়েছিল। তবে পরবর্তীতে এই সুবিশাল স্থাপনাগুলো প্রকৌশলের জগতে এক অনন্য বিস্ময় হিসেবে যুগ যুগ ধরে সমাদৃত হয়ে এসেছে।

মিশরের গিজা পিরামিডের ছবি দেখলে বা নাম শুনলেই এর অসামান্য ও সৃষ্টিশীল কাঠামো আমাদের সঙ্গে প্রাচীন সংস্কৃতি ও সভ্যতার পরিচয় করিয়ে দেয়। সময়ের সঙ্গে সঙ্গে পিরামিডগুলো সপ্তম আশ্চর্যের তালিকায় তাদের অবস্থান তৈরি করেছে। তবে গিজার পিরামিড ছাড়াও পৃথিবীর বিভিন্ন দেশে রয়েছে আরও আকর্ষণীয় কিছু পিরামিড। 

ভ্রমণ পিপাসুদের আছে বিশ্বকে জানার আকাঙ্ক্ষা তীব্র। আর পিরামিড গুলো অতীতের প্রতিনিধিত্ব করে। আপনি যদি ভ্রমণপিয়াসী হয়ে থাকেন তাহলে আপনার ভ্রমণ তালিকায় যোগ করতে পারেন পিরামিড।

বিশ্বের বিভিন্ন দেশে ভ্রমণ গন্তব্য হিসেবে শীর্ষে থাকা ৫ পিরামিড নিয়ে আজকের আলোচনা:

সূর্য পিরামিড, সান হুয়ান টিওটিহুয়াকান, মেক্সিকো

ছবি: সংগৃহীত
ছবি: সংগৃহীত

টিওটিহুয়াকানের সবচেয়ে বড় স্থাপনা এবং বিশ্বের তৃতীয় বৃহত্তম পিরামিড এই 'সূর্য পিরামিড'। প্রত্নতাত্ত্বিকরা বিশ্বাস করেন যে, এই কাঠামোটি সম্ভবত কোনো দেবতাকে সম্মান প্রদর্শনের উদ্দেশ্যে নির্মাণ করা হয়েছে।

টিওটিহুয়াকান, একসময় মেক্সিকোর বৃহত্তম শহর ছিল। এর বাসিন্দারা মূলত মধ্য আমেরিকান আদিবাসী সভ্যতার প্রতিনিধি। এখানে ৫০০ বছর আগে মায়া সভ্যতা এবং প্রায় ১ হাজার বছর আগে অ্যাজটেক সভ্যতার নিদর্শন পাওয়া গেছে। অনেকে অনুমান করেন বৈরি জলবায়ু এবং দস্যুদের আক্রমণের কারণে প্রাচীন শহর ও সভ্যতা ধ্বংস হয়ে থাকতে পারে। এ অঞ্চলে এখনো প্রত্নতাত্ত্বিক অনুসন্ধান চলছে। এর পাশাপাশি আকর্ষণীয় জাদুঘরের কারণে এখন এটি ভ্রমণকারী ও ব্যাকপ্যাকারদের জন্য একটি আকর্ষণীয় ভ্রমণ স্থানে পরিণত হয়েছে।

বৃহদিশ্বর মন্দির, তামিলনাড়ু, ভারত

ছবি: সংগৃহীত
ছবি: সংগৃহীত

১০০৩ থেকে ১০১০ সাল পর্যন্ত চোলদের শাসক রাজারাজের আমলে নির্মিত হিন্দু দেবতা শিবের সম্মানে এ পিরামিড আকৃতির মন্দিরটি নির্মিত হয়। কাবেরী নদীর দক্ষিণ দিকে অবস্থিত, এই মন্দির তামিল ভাষায় 'থানজাই পেরিয়া কোভিল' নামেও পরিচিত। এটি চোল রাজবংশের সর্বশ্রেষ্ঠ স্থাপনা হিসেবে বিবেচিত।

চোল দেয়ালচিত্র এবং শিবের মুখমন্ডলের আদলে নির্মিত এই পিরামিড কাঠামো গ্রানাইট পাথর দিয়ে তৈরি। মজার ঘটনা হলো, দুপুর বেলায় এর চূড়ায় ছায়ার পরিবর্তন হয় না। বৃহদিশ্বর মন্দিরের পিরামিড নির্মাণ শৈলীর দক্ষতার জন্য এখনো অক্ষত অবস্থায় রয়েছে। দক্ষিণ ভারতের অন্যতম জনপ্রিয় পর্যটন আকর্ষণ এই পিরামিডটি।

সেস্টিয়াস পিরামিড, রোম, ইতালি

ছবি: সংগৃহীত
ছবি: সংগৃহীত

এই রোমান পিরামিড একটি গ্রাহকের নির্দেশের তৈরি করা হয়েছিলো। ১৮ থেকে ১২ খ্রিস্টপূর্বাব্দের মধ্যে গাইয়াস সেস্টিয়াস নামে সে সময়ের অত্যন্ত ধনী এক ম্যাজিস্ট্রেট তার সমাধি হিসাবে এ পিরামিডটি নির্মাণ করিয়েছিলেন।

এই পিরামিড প্রতি মাসের দ্বিতীয় এবং চতুর্থ শনিবার দর্শনার্থীদের জন্য উন্মুক্ত করে দেয়া হয়, তাই কেউ যেতে চাইলে অবশ্যই আগে থেকে তাদের স্লট বুকিং করে যেতে হবে। রোমান দেওয়ালচিত্রের অলংকরণ করা হয়েছে পিরামিডে। উত্তর-পশ্চিম দিকে সাদা মার্বেল, প্রোটেস্ট্যান্ট কবরস্থানের কাছে অরেলিয়ান দেয়াল মূলত দেখার মূল আকর্ষণ।

মিশরের সাক্কারায় প্রথম ধাপযুক্ত 'জোসেরের' পিরামিড

জোসেরের পিরামিড। ছবি: রয়টার্স
জোসেরের পিরামিড। ছবি: রয়টার্স

মিশর পিরামিডের জন্য পরিচিত এবং মিশরকে বলা হয় পিরামিডের দেশ। ফারাও 'জোসের' এর শাসনামলে খ্রিস্টপূর্ব ২৬৩০ থেকে ২৬১১ সালের মাঝে এই ফারাও রাজা নিজের জন্য একটি সমাধি নির্মাণ করেন। অন্য সব পিরামিড 'কাদামাটির ঢিবি' আকারে নির্মাণ হলেও ফারাও জোসের তার প্রধান স্থপতি ইমহোটেপের পরামর্শে মিশরের ইতিহাসে প্রথমবারের মতো সিঁড়ি বা ধাপযুক্ত পিরামিড নির্মাণ করেন। ২০০ ফুট উঁচু চুনাপাথর দিয়ে পরপর ৬টি ছোট ধাপ তৈরির সিদ্ধান্ত নেয়া হয়।

জোসেরের পিরামিড একটি অনন্য স্থাপনা হিসেবে আজও টিকে রয়েছে। এখানে যেতে হলে ট্যুর গ্রুপের সঙ্গে যেতে হয়। সুতরাং আগে থেকে পরিকল্পনা করে যাওয়াই শ্রেয়।

মায়া সভ্যতার পরিচয়বাহী গুয়াতেমালার টিকাল ও পেটেন পিরামিড

ছবি: সংগৃহীত
ছবি: সংগৃহীত

টিকাল গুয়াতেমালার মায়া চিরহরিৎ বনের একেবারে গভীরে অবস্থিত। ইতিহাসবিদ ও প্রত্নতাত্ত্বিকরা বিশ্বাস করেন, এ অরণ্যে ছড়িয়ে থাকা মায়া সভ্যতার প্রায় ৩ হাজারেরও বেশি অবকাঠামো 'ইয়াক্স মুতাল' নামে ১ প্রাচীন শহরের ধ্বংসাবশেষ। এটি প্রাচীন মায়া সাম্রাজ্যের অন্যতম শক্তিশালী রাজ্যের রাজধানী ছিল।

আপনি শুধুমাত্র অগ্রিম টিকিট কিনে এবং ভিড়ের ট্যুর এড়াতে চাইলে একটি শাটল বুক করে  নিজেরাই পরিকল্পনা করে টিকালের পিরামিড ভ্রমণ করতে পারবেন।

 

Comments

The Daily Star  | English
The Indian media and Bangladesh-India relations

The Indian media and Bangladesh-India relations

The bilateral relationship must be based on a "win-win" policy, rooted in mutual respect, non-hegemony, and the pursuit of shared prosperity and deeper understanding.

11h ago