৫৫তম কায়রো আন্তর্জাতিক বইমেলায় ৭০ দেশের অংশগ্রহণ

মেলা থেকে বই সংগ্রহ করছেন আল-আজহার বিশ্ববিদ্যালয়ের বাংলাদেশি শিক্ষার্থীরা ছবি: সংগৃহীত

প্রাচীন সভ্যতার দেশ মিশরের রাজধানীর নিউ কায়রোর আন্তর্জাতিক প্রদর্শনী কেন্দ্রে শুরু হয়েছে পক্ষকালব্যাপী ৫৫তম কায়রো আন্তর্জাতিক বইমেলা।

দেশি-বিদেশি দর্শনার্থীদের সঙ্গে প্রবাসী বাংলাদেশি ও শিক্ষার্থীরাও মেলায় ভিড় করছেন।

২৪ জানুয়ারি বইমেলার আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করেন দেশটির প্রধানমন্ত্রী ড. মোস্তফা মাদবউলি।

বিশ্বের অন্যতম বৃহত্তম এ মেলায় অংশ নিয়েছে ৭০টি দেশের এক হাজার ২০০টিরও বেশি প্রকাশনী সংস্থা, রয়েছে পাঁচ হাজার ২৫০টি প্যাভিলিয়ন ও স্টল।

এ বছর প্রাচীন মিসরবিদ সেলিম হাসান ও শিশু সাহিত্যের অগ্রদূত ইয়াকুব আল-শারুনিকে কায়রো বইমেলার বর্ষসেরা ব্যক্তিত্ব হিসেবে ঘোষণা করা হয়।

সুউচ্চ চিত্তাকর্ষক পাঁচটি হল সমৃদ্ধ ৮০ হাজার বর্গমিটারেরও বেশি আয়তনের দৃষ্টিনন্দন প্রদর্শনী কেন্দ্রে বইমেলার সুবিন্যস্ত স্টলের পাশাপাশি রয়েছে বিভিন্ন দেশ, সংস্থা ও বিশ্ববিদ্যালয়ের নজরকাড়া প্যাভিলিয়ন।

বই বিক্রি ছাড়াও প্রতিদিন এসব প্যাভিলিয়নে দেশ-বিদেশের প্রখ্যাত ও বরেণ্য ব্যক্তিদের নিয়ে চলে সভা, সেমিনার এবং শিক্ষা, সাহিত্য ও সংস্কৃতির নানান বর্ণাঢ্য আয়োজন। প্রদর্শনীর পাশাপাশি মেলায় সাড়ে ৫০০ সাহিত্য ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান এবং আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হবে।

এবারের অতিথি দেশ নরওয়ে নিজেদের শিল্প, সাহিত্য ও সংস্কৃতি আরব পাঠকদের কাছে তুলে ধরছে 'জ্ঞান বিনির্মাণের মাধ্যমে আমরা শব্দের সুরক্ষা করব' প্রতিপাদ্যে।

গতকাল শনিবার বইমেলার চত্বরে কথা হয় আল-আজহার বিশ্ববিদ্যালয়ের কয়েকজন‌ বাংলাদেশি শিক্ষার্থীর সঙ্গে। বিভিন্ন দেশের প্যাভিলিয়নে ঘুরতে ঘুরতে তাদের সঙ্গে আলোচনা হয় বই ও বইমেলা নিয়ে।

শিক্ষার্থী আনোয়ার হোসেন আজাদ বলেন, 'ইসলামের ইতিহাস ও ঐতিহ্যের দেশ মিশর। আমি মনে করি, বইমেলা শুধুমাত্র বই বিপণনের জন্য নয় বরং এটি একটি সাংস্কৃতিক ও শিক্ষামূলক মিলন মেলা। বইমেলা থেকে শিক্ষামূলক অনেক কিছু শেখা যায়। তাই প্রতি বছর এই সময়টির অপেক্ষায় থাকি আমরা।'

শিক্ষার্থী আব্দুর রহমান বলেন, 'আল-আজহারের শিক্ষার্থীরা এই বইমেলার জন্য অপেক্ষায় থাকেন। কেননা এখান থেকে সূলভমূল্যে বই পাওয়া যায়, যেগুলো আমাদের পড়াশুনার জন্য অনেক কাজে লাগে। এ বছর আমি তাফসির, হাদিস বিষয়ক কিছু বই সংগ্রহ করবো।'

আরেক শিক্ষার্থী সাইমুম আল-মাহদী বলেন, 'মেলায় বিভিন্ন দেশের স্টল থাকলেও দুঃখের বিষয় হচ্ছে, এখানে বাংলাদেশের কোনো স্টল নেই। বাংলাদেশ সরকার ও মিশরে বাংলাদেশ দূতাবাসকে অনুরোধ করব, আগামীতে বিশ্বের এই বৃহত্তম মেলায় অন্তত একটি বাংলাদেশি স্টল রাখার জন্য, যেখানে থাকবে লাল-সবুজের একটি পতাকা।'

আরব বিশ্বের প্রাচীন ও বিশ্বের অন্যতম বৃহত্তম কায়রো আন্তর্জাতিক বইমেলাটি ১৯৬৯ সালে কায়রো শহর প্রতিষ্ঠার এক হাজার বছর পূর্তি উপলক্ষে শুরু হয়। কালক্রমে এর পরিধি ও সমৃদ্ধি এতটাই বৃদ্ধি পেয়েছে যে, বর্তমানে কোনো কোনো সমীক্ষায় একে ফ্রাঙ্কফুট বইমেলার পর বিশ্বের দ্বিতীয় বৃহত্তম বইমেলার স্বীকৃতি দেওয়া হয়েছে।

ইসলামি সাহিত্যের সবচেয়ে বড় বইমেলাটি প্রতি বছর জানুয়ারির শেষ সপ্তাহ শুরু হয়ে ফেব্রুয়ারির প্রথম সপ্তাহ পর্যন্ত চলে।

Comments

The Daily Star  | English
explanations sought from banks for unusual USD rates

Explanations sought from 13 banks for higher dollar rate

BB issued letters on Dec 19 and the deadline for explanation ends today

2h ago