চট্টগ্রাম-৮ উপনির্বাচন

জয় নিয়ে আত্মবিশ্বাসী আ. লীগ প্রার্থী, সুষ্ঠু নির্বাচন নিয়ে ‘উদ্বেগ’

চট্টগ্রাম-৮
চট্টগ্রাম-৮ উপনির্বাচনের আওয়ামী লীগ প্রার্থী নোমান আল মাহমুদের প্রচারণা। ছবি: সংগৃহীত

চট্টগ্রাম-৮ (বোয়ালখালী-চান্দগাঁও-পাঁচলাইশ-বায়েজিদ) আসনের উপনির্বাচন ঘনিয়ে আসায় প্রার্থীরা এখন প্রতিদিন বিকেল থেকে মধ্যরাত পর্যন্ত প্রচারণায় ব্যস্ত সময় পার করছেন।

স্থানীয় ভোটারদের মতে, বিএনপি নির্বাচনে অংশগ্রহণ না করায় এবং দলটির কোনো নেতা স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবেও প্রতিদ্বন্দ্বিতা না করায় আওয়ামী লীগ প্রার্থী স্বস্তিজনক অবস্থানে রয়েছেন।

ঈদুল ফিতরের ছুটির পরপরই ২৭ এপ্রিল অনুষ্ঠেয় এই নির্বাচনে আওয়ামী লীগের প্রার্থীসহ মোট পাঁচজন প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন।

প্রার্থীরা হলেন আওয়ামী লীগের নোমান আল মাহমুদ, বাংলাদেশ ইসলামি ফ্রন্টের সেহাব উদ্দিন মোহাম্মদ আবদুস সামাদ, ন্যাশনাল পিপলস পার্টির কামাল পাশা, ইসলামিক ফ্রন্ট বাংলাদেশের এসএম ফরিদ উদ্দিন ও স্বতন্ত্র প্রার্থী রমজান আলী।

নির্বাচন কমিশন (ইসি) সূত্র জানায়, উপনির্বাচনে মোট ভোটার সংখ্যা ৫ লাখ ১৭ হাজার ৬৫২ জন।

গত ৫ ফেব্রুয়ারি আওয়ামী লীগের সংসদ সদস্য মোসলেম উদ্দিন আহমেদের মৃত্যুতে আসনটি শূন্য হয়।

প্রার্থীরা পাড়া-মহল্লায় ভোটারদের কাছে এলাকায় উন্নয়নের জন্য একগুচ্ছ অঙ্গীকার দিয়ে প্রচারণা চালাচ্ছেন।

বুধবার নগরীর পাঁচটি ওয়ার্ডসহ বোয়ালখালী উপজেলার আটটি ইউনিয়নে প্রচারণা চালান আওয়ামী লীগের প্রার্থী নোমান। এই প্রথম তিনি কোনো নির্বাচনে প্রার্থী হিসেবে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন।

যোগাযোগ করা হলে, চট্টগ্রাম মহানগর আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক নোমান বলেন, 'আমি ১৯৭০ সালে ছাত্রজীবন থেকে রাজনীতি করছি। এর আগে কোনো নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতার সুযোগ পাইনি। আমাকে মনোনয়ন দেওয়ায় আমি আমার নেত্রী শেখ হাসিনার কাছে কৃতজ্ঞ।'

স্থানীয় আওয়ামী লীগ নেতাদের ভাষ্য, ৫০ বছরের বেশি রাজনৈতিক জীবনে নোমান একজন পরিচ্ছন্ন ভাবমূর্তির নেতা হিসেবে পরিচিতি পেয়েছেন। দলের প্রতি আত্মনিবেদনের পুরস্কার হিসেবে তাকে মনোনয়ন দেওয়া হয়েছে।

দ্য ডেইলি স্টারের সঙ্গে আলাপকালে নোমান নিজেও বিষয়টি স্বীকার করেছেন। তিনি বলেন, আমার মনোনয়ন পাওয়ার মধ্য দিয়ে প্রমাণিত হয়েছে যে তৃণমূল থেকে নিবেদিতপ্রাণ নেতাকর্মীরা দলে মূল্যায়িত হচ্ছেন। মনোনয়ন পাওয়ার ক্ষেত্রে অর্থ ও পেশিশক্তির কোনো স্থান নেই, এই বার্তাটাও দেওয়া হয়েছে।

জয়ের ব্যাপারে আত্মবিশ্বাসী নোমান বলেন, 'দলের সব নেতাকর্মী ঐক্যবদ্ধ হয়ে আমার জন্য কাজ করছেন।'

তবে নোমানের প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থীদের প্রত্যেকেই বলছেন নির্বাচন সুষ্ঠু হলে তারাও জয়ের ব্যাপারে আশাবাদী।

 'চেয়ার' প্রতীক নিয়ে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করা এসএম ফরিদ উদ্দিন দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, 'আমি আমার জয়ের ব্যাপারে আত্মবিশ্বাসী, নির্বাচন যদি অবাধ ও সুষ্ঠু হয়।'

তিনি বলেন, 'আমি যেখানেই প্রচারণায় যাচ্ছি ব্যাপক ইতিবাচক সাড়া পাচ্ছি। ভোটাররা ভোট দেওয়ার জন্য উদগ্রীব হয়ে আছেন। এখন ইসির দায়িত্ব হলো সুষ্ঠু নির্বাচন নিশ্চিত করা।'

তিনি বলেন, আমরা আশা করি ইসি সুষ্ঠু নির্বাচন আয়োজন করবে।

তার কথার প্রতিধ্বনি করে 'মোমবাতি' প্রতীকের সেহাব উদ্দিন মোহাম্মদ আবদুস সামাদ বলেন, ভোটাররা ভোট দেওয়ার জন্য উত্সাহী, তবে তারা নির্বিঘ্নে ভোট দিতে পারবে কি না, তা নিয়ে উদ্বিগ্ন।

তিনি বলেন, আশা করছি ইসি এলাকায় এমন পরিবেশ তৈরি করবে যাতে ভোটাররা ভোটকেন্দ্রে আসতে উৎসাহী হয়।

তিনি বলেন, 'নির্বাচনের স্বচ্ছতার জন্য আমরা প্রতিটি ভোটকেন্দ্রে সিসি ক্যামেরা স্থাপনের জন্য ইসিকে প্রস্তাব দিয়েছিলাম। কিন্তু সিসি ক্যামেরা স্থাপন অত্যন্ত ব্যয়বহুল এবং এর জন্য তাদের কাছে বাজেট নেই বলে ইসি তা প্রত্যাখ্যান করেছে।

যোগাযোগ করা হলে চট্টগ্রাম জেলা নির্বাচন কর্মকর্তা জাহাঙ্গীর হোসেন বলেন, ইলেকট্রনিক ভোটিং মেশিনের মাধ্যমে ভোট হবে। ভোট কেন্দ্রে সিসি ক্যামেরা স্থাপনের বিষয়ে তিনি বলেন, সিসি ক্যামেরা স্থাপনের বিষয়ে ইসির কোনো নির্দেশনা তারা পাননি।

তিনি বলেন, শান্তিপূর্ণভাবে নির্বাচন অনুষ্ঠানের জন্য প্রায় সব ধরনের প্রস্তুতি নেওয়া হয়েছে।

Comments

The Daily Star  | English

13 former BDR members walk out of jail after 16 years

Family members expressed overwhelming joy at the release, reuniting with their loved ones

34m ago