চট্টগ্রামের ব্যস্ত সড়কে সক্রিয় ‘ব্লেড পার্টি’

ছবি: সংগৃহীত

চট্টগ্রামের ব্যস্ত রাস্তাগুলোতে এখন নতুন আতঙ্কের নাম 'ব্লেড পার্টি'। একটি চক্র মুখে ধারালো ব্লেড নিয়ে ঘুরছে। ছিনতাইয়ে বাধা দিলেই ব্লেড দিয়ে সাধারণ মানুষকে আহত করছে।

সূত্র বলছে, ব্যস্ত রাস্তায় কিংবা ট্রাফিক জ্যামের মধ্যে এই ঘটনাগুলো ঘটছে। বন্দর নগরীর ইপিজেড, সল্টগোলা, পতেঙ্গা ও ডবলমুরিংসহ নগরীর বেশ কিছু সড়কে সক্রিয় এই চক্রের সদস্যরা।

সূত্র আরও জানায়, কয়েকটি ধাপে কাজ করে এই চক্রের সদস্যরা। চক্রের কোনো সদস্য ধরা পড়ে গেলে তাকে বাঁচাতে আরেকজন নিজেকে পুলিশ পরিচয় দিয়ে এগিয়ে আসেন।

সর্বশেষ মঙ্গলবার দিবাগত রাতে নগরীর বন্দর থানাধীন কমিশনার গলিতে ব্যস্ত সড়কে ব্লেড মেরে মোবাইল ছিনতাইয়ের ঘটনা ঘটে। এ সময় আকাশ নামে এক ছিনতাইকারীকে ধরে পুলিশের হাতে তুলে দেয় জনতা। ছিনতাইকারীর হামলায় আহত হন ২ জন।

রমজান ও ঈদকে সামনে রেখে নতুন করে এই উৎপাতে চিন্তিত থানা পুলিশও। এর আগে আকাশ বন্দর থানা পুলিশের ২ সদস্যকে ছুরি মেরে আহত করেছেন বলে অভিযোগ রয়েছে।

ছিনতাইকারী ধরতে গিয়ে আহত লোহাগাড়া উপজেলার বাসিন্দা মো. শামসুদ্দিন দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, 'রাতে আমাদের এক বন্ধুকে চট্টগ্রাম শাহ আমানত বিমানবন্দরে বিদায় দিয়ে মাইক্রোবাসে আমরা ১১ জন বাড়ি ফিরছিলাম। বন্দর থানার কমিশনার গলিতে মূল সড়কে জ্যামের কারণে ধীরে ধীরে গাড়ি চলছিল। হঠাৎ জানালা দিয়ে আমাদের একজনের মোবাইল ফোন ছিনিয়ে নেন ৩ জন। আমরা গাড়ি থেকে নেমে একজনকে হাতেনাতে ধরে ফেলি।'

'সঙ্গে সঙ্গে সে মুখ থেকে ব্লেড বের করে আমাদের দুজনের হাতে টান দেন। একজনকে ধরতে পারলেও বাকি ২ জন পালিয়ে যান। একজনকে ধরে ফেলার পরে আমরা ৯৯৯ নম্বরে ফোন করি। সেই সময় সাদা পোশাকে পুলিশ পরিচয়ে আমাদের কাছে ২ জন আসেন এবং ছিনতাইকারীদের নিয়ে যেতে চান। তারা আইডি কার্ডও দেখান কিন্তু তাদের আচরণ সন্দেহজনক মনে হওয়ায় আমরা চ্যালেঞ্জ করি। এরপর থানা পুলিশের একটি টহল টিম ঘটনাস্থলে উপস্থিত হলে তারা পালিয়ে যান,' বলেন শামসুদ্দিন।

শামসুদ্দিনের বন্ধু আহত এরশাদ বলেন, 'থানা পুলিশ ঘটনাস্থলে এলে ছিনতাইকারী চক্রের বাকি ২ সদস্য নিজেদের নৌবাহিনীর লোক পরিচয় দেন এবং দাবি করেন আমরা অপহরণকারী। আমাদের রক্তাক্ত অবস্থায় দেখে পুলিশ জিজ্ঞাসাবাদ শুরু করলে এক সময় তারা সটকে পড়েন।'

বন্দর থানা এবং ইপিজেড থানা পুলিশ সূত্র জানিয়েছে, একাধিক ছিনতাইকারী চক্র মূল সড়কের ওপর এই ধরনের ছিনতাইয়ে জড়িত। অভিযানে আটক হচ্ছে, জামিনে মুক্ত হয়ে আবারও একই কাজে লিপ্ত হচ্ছে তারা।

বন্দর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সঞ্জয় কুমার সিনহা ডেইলি স্টারকে বলেন, 'আটক আকাশের বিরুদ্ধে ছুরি মেরে এক এসআই ও এএসআইকে আহত করার অভিযোগে মামলা রয়েছে। দীর্ঘদিন ধরে সে পুলিশের চোখ ফাঁকি দিয়ে এই কাজ করে আসছিল। তার বিরুদ্ধে ছিনতাই, ডাকাতি, পুলিশকে আহত করার অভিযোগে মোট ৪টি মামলা রয়েছে।'

'আমরা এই চক্রের বাকি সদস্যদের ধরার চেষ্টা করছি,' বলেন তিনি।

Comments

The Daily Star  | English

PSC announces major changes to ease BCS recruitment process

The PSC chairman says they want to complete the entire process — from prelims to recruitment — in 12 months

5h ago