তাইজুলের ৫ শিকার, গুটিয়ে গেল আয়ারল্যান্ড

Taijul Islam
৫ উইকেট নিয়েছেন তাইজুল ইসলাম। ছবি: ফিরোজ আহমেদ/স্টার

উইকেট ছিল ব্যাট করার জন্য বেশ সহায়ক। তাতে নেমে অভিজ্ঞতার অভাবে বেশিদূর এগুতে পারল না আয়ারল্যান্ড। তাইজুল ইসলামের বাঁহাতি স্পিনের ধাঁধা মেলাতে পারল না তারা। শেষ সেশনে কোনমতে দুইশো পার করেই গুটিয়ে গেছে সফরকারীরা।

মঙ্গলবার মিরপুর শেরে বাংলা ক্রিকেট স্টেডিয়ামে প্রথম ইনিংসে ২১৪ রানে অলআউট হয় আয়ারল্যান্ড। আইরিশদের আটকে দিতে বাংলাদেশের সেরা বোলার তাইজুল। ৫৮ রানে ৫ উইকেট নিয়েছেন তিনি। ৪৩ রানে ২ উইকেট নিয়েছেন মেহেদী হাসান মিরাজ, ৫৪ রানে ২ শিকার ধরেন ইবাদত হোসেনও। অধিনায়ক সাকিব আল হাসান বল করেছেন স্রেফ ৩ ওভার।

শেষ বিকেলে ব্যাট করতে নেমে ১০ ওভার খেলে নাজমুল হোসেন শান্ত ও তামিম ইকবালের উইকেট হারিয়ে  ৩৪ রান তুলেছে বাংলাদেশ। কোন রান না করে প্রথম বলে আউট হন শান্ত। দিনের একদম শেষ বলে ২১ রান করে উইকেট বিলিয়ে দেন তামিম। 

টস জিতে ব্যাট করতে নেমে সতর্ক শুরু এনেছিলেন জেমস ম্যাককুলাম আর মুরে কমিন্স। শুরুতেই আঘাত হানতে চারটি স্লিপ, একটি ওয়াইড স্লিপ নিয়ে আক্রমণ করতে থাকে বাংলাদেশ। বেশিক্ষণ প্রতিরোধ গড়তে পারেননি আইরিশ দুই ওপেনার। পঞ্চম ওভারে কমিন্সকে এলবিডব্লিউতে কাবু করেন শরিফুল ইসলাম।

অধিনায়ক বালবার্নিকে নিয়ে আরও কিছুক্ষণ চালিয়ে যান ম্যাককুলাম। জুটিটা বেড়ে উঠার আভাস দিতেই অবশ্য নিভে যায়। ইবাদতের বলে দ্বিতীয় স্লিপে ক্যাচ দিয়ে ফেরেন ম্যাককুলাম। ২৭ রানে দ্বিতীয় উইকেট হারায় তারা।

দ্বিতীয় উইকেটে প্রতিরোধের চেষ্টায় ছিলেন বালবার্নি-টেক্টর। আইরিশ অধিনায়ককে অনেকটা থিতুও মনে হচ্ছিল। প্রথম সেশনটা আর কোন বিপর্যয় ছাড়া পার করে দেওয়ার কাছে ছিলেন তারা।

Taijul Islam
ছবি: ফিরোজ আহমেদ/স্টার

তবে তাইজুলের বলে সুইপ করতে গিয়ে বিপদটা ডেকে আনেন বালবার্নি। ভেতরে ঢোকা বলে পায়ে লাগিয়ে এলবিডব্লিউতে কাবু হয়ে যান তিনি। ভেঙে যায় ২১ রানের ছোট্ট জুটি।  ৫০ বলে ১৬ করে ফেরেন বালবার্নি। ৪৮ রানে তৃতীয় উইকেট হারায় আয়ারল্যান্ড।

লাঞ্চ বিরতির আগে বাকিটা সময় টেক্টরের সঙ্গে দাঁড়িয়ে যান ক্যাম্ফার। লাঞ্চের পরও জমে যায় তাদের জুটি।  দুজনেই অভিষিক্ত। টেক্টরের এর আগে ১০টি প্রথম শ্রেণীর ম্যাচ খেললেও ক্যাম্ফারের ছিল স্রেফ একটি প্রথম শ্রেণীর ম্যাচ খেলার অভিজ্ঞতা।  তবে তারা যেভাবে ব্যাট করেছেন তাতে লাল বলে খুব একটা আনকোরা মনে হয়নি।

কাভার ড্রাইভ, পুলে বের করেছেন বাউন্ডারি। দ্বিতীয় সেশনও পার করে দেয়ার পথে ছিলেন তারা। এক প্রান্তে পেস, আরেক প্রান্তে স্পিন দিয়ে জুটি ভাঙার চেষ্টা করে হতাশ হচ্ছিল বাংলাদেশ।

শেষ পর্যন্ত মিরাজ আনেন ব্রেক থ্রো। ৪২তম ওভারে ভেতরে ঢোকা দারুণ এক ডেলিভারিতে ফিফটি করা টেক্টরকে বোল্ড করেন মিরাজ। এতে ভাঙে চতুর্থ উইকেটে ৭৪ রানের জুটি।

জুটি ভাঙতেই দ্রুত আরেক উইকেট হারিয়ে ফেলে আইরিশরা।  আয়ারল্যান্ডের এই দলের সবচেয়ে অভিজ্ঞ ছিলেন পিটার মুর। জিম্বাবুয়ে ছেড়ে আসার পর এই প্রথম আইরিশদের হয়ে খেলতে নামেন তিনি। নিজের সর্বশেষ টেস্টে ২০১৮ সালে এই মাঠেই ৮৩ রানের ইনিংস ছিল তার। অভিজ্ঞতায় ঋদ্ধ মুর করেন হতাশ। তাইজুলকে তুলে মারতে মিড অফে ক্যাচ দিয়ে থামেন তিনি। খানিক পর ক্যাম্ফারকেও এলবিডব্লিউতে বিদায় করেন তাইজুল। দুই রানের মধ্যে তিন উইকেট হারিয়ে চাপে পড়ে যায় সফরকারীরা।

প্রথম দুই সেশনে এক ওভারও বল করেননি সাকিব। তিনি বল করতে আসেন ৬৫ ওভারের পর। এসে তিন ওভার বল করে আর করেননি। অ্যান্ডি ম্যাকব্রেইনকে আউট করে ৭ম উইকেট তুলেন ইবাদত হোসেন। বাকি তিন উইকেট ভাগাভাগি করে নিয়েন তাইজুল-মিরাজ। কিপার ব্যাটার লোরকান টাকার লড়াইয়ে রেখেছিলেন আইরিশদের।

৮ম উইকেটে মার্ক অ্যাডায়ারকে নিয়ে ৪০ রান যোগ করেন তিনি। ৭৪ বলে ৩৭ করা টাকারকে তাইজুলের বলে স্টাম্পিং করে থামান লিটন দস। ৫২ বলে ৩২ করা অ্যাডায়ারকেও তুলে নেন তিনি। গ্রাহাম হিউমকে বোল্ড করে ইনিংস মুড়ে দেন মিরাজ।

Comments

The Daily Star  | English

Yunus urges Pakistan PM to settle issues of 1971

The two leaders also expressed their desire to extend cooperation in new areas

55m ago