টুইটারের ব্লু টিকের জন্য অর্থ দিতে চান না তারকারা

টুইটারের ব্লু টিক
টুইটার। ছবি: রয়টার্স ফাইল ফটো

চলতি এপ্রিলের ১ তারিখ থেকে যেসব ব্যবহারকারী তাদের ব্লু টিকের (টুইটার ব্লু প্রোগ্রাম) জন্য মাসে ৮ মার্কিন ডলার করে পরিশোধ না করবেন, তাদের ব্লু টিক সরানোর কাজ শুরু করবে টুইটার।

অনেক সেলিব্রেটি ইতোমধ্যে ঘোষণা দিয়েছেন যে, তারা তাদের ব্লু টিকের জন্য কোনো অর্থ পরিশোধ করবেন না। এর ফলে টুইটারের ব্লু টিকধারী ব্যবহারকারীর সংখ্যা কমবে।

টুইটার কেনার পর এটিকে লাভজনক করতে ইলন মাস্কের মহাপরিকল্পনার অংশ ছিল অর্থের বিনিময়ে ব্লু টিক চালু করা। কিন্তু অনেকেই বলছেন, যে কেউ যদি অর্থের বিনিময়ে ব্লু টিক কিনতে পারে, তাহলে আগে এটির যে আবেদন ছিল, সেটি আর থাকবে না। এমনকি অপব্যবহারকারীরা ব্লু টিক কিনে ভুয়া তথ্য ছড়ানোর কাজে লিপ্ত হবে। কিন্তু ইলন মাস্ক এসব উদ্বেগে কোনো গুরুত্ব দিচ্ছেন বলে মনে হচ্ছে না।

অন্য কেউ যাতে সেলিব্রেটিদের ছদ্মবেশ ধরতে না পারে, তা নিশ্চিত করতে ২০০৯ সালে টুইটার ব্লু টিক চালু করে।

এক ব্যক্তি সাবেক সেন্ট লুই কার্ডিনালের ম্যানেজার টনি লা রুসার ছদ্মবেশে টুইটারে অ্যাকাউন্ট খোলার পর লা রুসা টুইটারকে অ্যাকাউন্টটি বন্ধ করার অনুরোধের পরিবর্তে প্রতিষ্ঠানটির বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করে।

এর প্রেক্ষাপটে সেলিব্রেটি ও বিশিষ্ট ব্যক্তিদের প্রোফাইল যাতে সহজে চেনা যায়, সেজন্য তাদের নামের পাশে ব্লু টিক চালু করে টুইটার।

এখন সেলিব্রেটিদের অনেকে তাদের নামের পাশে ব্লু টিক হারাতে বসেছেন। যে ফিচারটি চালু হয়েছিল শুধুমাত্র সেলিব্রেটিদেরকে সুরক্ষা দেওয়ার জন্য, সেটি এখন সর্বসাধারণের জন্য উন্মুক্ত করে দেওয়া হয়েছে। ফলে সেলিব্রেটিদের কাছে এই ব্লু টিকের গুরুত্ব কমেছে। অনেকে টুইটারের ব্লু টিক না কেনার ঘোষণা দিয়েছেন।

মিউজিশিয়ান আইস স্পাইস বলেছেন, 'যেহেতু আমার অ্যাকাউন্টে ১২ লাখ ফলোয়ার আছে, তাই মানুষ সহজেই আমাকে চিনবে। আমার নামে ভুয়া প্রোফাইল করে এত ফলোয়ার পাওয়া সম্ভব না। তাই ব্লু টিক কেনার প্রয়োজন নেই।'

আইস স্পাইসের কথায় হয়তো যুক্তি আছে। কিন্তু মানুষ সবসময় প্রোফাইল আসল না নকল, তা যাচাই করতে প্রোফাইলে ক্লিক করে নাও দেখতে পারেন। তারা হয়তো ধরে নেবেন এটিই আসল। যদিও তা ভুয়া প্রোফাইল হতে পারে।

টুইটার যখন প্রথম এই ভেরিফিকেশন প্রোগ্রামটি চালু করে, তখন অনেকেই ৮ ডলার দিয়ে ব্লু টিক কিনে নিজেদের প্রোফাইল অন্য সেলিব্রেটিদের নামে পরিবর্তন করেন। এতে ব্যবহারকারীরা ভুল বোঝাবুঝির শিকার হন। তখন অনেকেই ব্লু টিক কিনে বাস্কেটবল সুপারস্টার ল্যাবরন জেমসের নামে প্রোফাইলের নাম পরিবর্তন করে ভুয়া তথ্য ছড়িয়েছিলেন।

ল্যাবরন জেমস এখন টুইটার ব্লু সাবসক্রাইব করবেন না বলে জানিয়েছেন। যুক্তরাষ্ট্রের বাস্কেটবল ইতিহাসে জেমস ল্যাবরন সবচেয়ে দামি খেলোয়াড়। প্রতি বছর তার আয় অন্তত ৪০ মিলিয়ন ডলার। অথচ তিনি টুইটার ব্লুর জন্য অর্থ দিতে রাজি না হওয়ায় এর প্রতীকী তাৎপর্য আছে।

তবে সেলিব্রেটিরা এখানে ৮ ডলারকে বড় করে দেখছেন না। যেমন, অভিনেতা উইলিয়াম শ্যাটনার ইলন মাস্ককে মেনশন করে টুইটে বলেছেন, 'আপনি এখন আমাকে এমন একটা জিনিসের জন্য অর্থ দিতে বলছেন যেটা একসময় ফ্রি ছিল?'

অর্থের বিনিময়ে টুইটার ব্লু প্রোগ্রাম সাবস্ক্রাইব করাটাকে অনেক সেলিব্রেটি আকর্ষণীয় নয় বলে বিবেচনা করছেন। অনেকে আবার এ নিয়ে মজাও করেছেন।

বাস্কেটবল সেলিব্রেটি প্যাট্রিক মাহোমস টুইটে বলেছেন, 'আমি ৮ ডলার দিতে পারব না। আমাকে বাচ্চাদের পেছনে খরচ করতে হয়।'

সেলিব্রেটিদের মধ্যে সবচেয়ে বড় উদ্বেগের জায়গা হচ্ছে এখন যে কেউ ৮ ডলার খরচ করলেই যে কারো ছদ্মবেশী প্রোফাইল তৈরি করতে পারবেন। এতে প্রতারণা ও ভুয়া তথ্য ছড়ানোর আশঙ্কা অনেক বেশি।

এখন দেখার বিষয় টুইটার এমন পরিস্থিতি সামাল দেয় কীভাবে।

সূত্র: টেক ক্রাঞ্চ

গ্রন্থনা: আহমেদ হিমেল

Comments

The Daily Star  | English

13 former BDR members walk out of jail after 16 years

Family members expressed overwhelming joy at the release, reuniting with their loved ones

21m ago