সরকার গণমাধ্যমের স্বাধীনতা নিশ্চিত করেছে: তথ্যমন্ত্রী

হাছান মাহমুদ
তথ্যমন্ত্রী হাছান মাহমুদ। ফাইল ফটো

কিছু কিছু পত্রিকায় উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবে নেগেটিভ রিপোর্ট করা হয় বলে মন্তব্য করেছেন তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রী এবং বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক হাছান মাহমুদ।

আজ শুক্রবার চট্টগ্রাম নগরীর দেওয়ানজী পুকুর পাড়ের বাসায় সমসাময়িক বিষয়ে সাংবাদিকদের ব্রিফিংকালে তথ্যমন্ত্রী এ মন্তব্য করেন।

হাছান মাহমুদ বলেন, 'অব্যাহতভাবে দেশ যে এগিয়ে যাচ্ছে, দারিদ্র্যতা কমছে, দেশের সমৃদ্ধির সঙ্গে প্রতিটি মানুষের সমৃদ্ধি এবং সচ্ছলতা এসেছে, বঙ্গবন্ধুকন্যার নেতৃত্বে বাংলাদেশের এই অর্থনৈতিক সমৃদ্ধি অনেকের পছন্দ হয় না। সেজন্য দেখা যায়, কিছু কিছু পত্রিকায় উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবে নেগেটিভ রিপোর্ট করা হয়। বিদেশ থেকে চিহ্নিত ব্যক্তি বিশেষ বাংলাদেশের বিরুদ্ধে অপপ্রচার চালিয়ে মানুষকে বিভ্রান্ত করার চেষ্টা করে। কিন্তু এতে বাংলাদেশকে দমিয়ে রাখা যায়নি।'

'কূটনীতিকদের আমাদের অভ্যন্তরীণ বিষয়ে নাক গলানো সমীচীন নয়। প্রয়োজনে কূটনীতিকদের আচরণ সম্পর্কিত ভিয়েনা কনভেনশন তাদেরকে স্মরণ করিয়ে দেওয়া হবে। আমারা বাজেটের জন্য ভিক্ষার ঝুলি নিয়ে কারো দ্বারে দ্বারে ঘুরে বেড়াই না। বরং আমাদেরকে সাহায্য দেওয়ার জন্য তারা অর্থের ঝুলি নিয়ে আমাদের কাছে আসে এখন। আমাদেরকে খাটো করার সময় চলে গেছে।'

তথ্যমন্ত্রী বলেন, 'বঙ্গবন্ধুকন্যা জননেত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে আজকে করোনা মহামারি এবং বিশ্ব মন্দা পরিস্থিতির মধ্যেও দেশ যেভাবে এগিয়ে চলেছে, অর্থনীতিক সমৃদ্ধি যেভাবে অব্যাহত আছে, এটি পৃথিবীর বিভিন্ন পত্রপত্রিকা প্রশংসা করছে।'

'সম্প্রতি ব্লুমবার্গ একটি রিপোর্ট প্রকাশ করেছে। সেখানে তারা বলেছে, অর্থনীতিক সমৃদ্ধি এবং করোনার মধ্যেও অর্থনৈতিক স্থিতিশীলতা বজায় রাখার কারণে আগামী নির্বাচনেও জননেত্রী শেখ হাসিনা জয়লাভের সম্ভাবনা এবং তিনি চতুর্থ মেয়াদের মতো নির্বাচিত হতে যাচ্ছেন। ব্লুমবার্গ এটির কারণ হিসেবে উল্লেখ করেছে, শেখ হাসিনার নেতৃত্বে যেভাবে অর্থনৈতিক সমৃদ্ধি এসেছে এবং অর্থনৈতিক স্থিতিশীলতা যেভাবে তিনি ধরে রাখতে সক্ষম হয়েছেন, সেই কারণেই তিনি চতুর্থবারের মতো নির্বাচিত হওয়ার উজ্জ্বল সম্ভাবনা।'

হাছান মাহমুদ বলেন, 'আমাদের সরকার গণমাধ্যমের স্বাধীনতা নিশ্চিত করেছে এবং স্বাধীনতা নিশ্চিত করতে এবং তা অব্যাহত রাখতে আমরা বদ্ধপরিকর।'

'আমরা মনে করি গণমাধ্যমের স্বাধীনতার সঙ্গে রাষ্ট্রের বিকাশ, গণতন্ত্রের বিকাশ জড়িত। গণতান্ত্রিক রীতিনীতি চর্চার আমাদের যে সংস্কৃতি, সেটিকে আরও গভীরে প্রোথিত করা নির্ভর করে। কিন্তু একইসঙ্গে আমাদের সম্মিলিত দায়িত্বশীলতাও আছে। স্বাধীনতার নামে যদি আমরা কেউ অপসাংবাদিকতা করি, তাহলে দেশের আপামর জনগণ এবং সাংবাদিক সমাজ নিশ্চয়ই সেটিকে সমর্থন করে না। সংবাদ পরিবেশনের ক্ষেত্রে সাংবাদিকতার নামে রাজনীতি করা, সেটি যে সমীচীন নয়, সেটিও নিশ্চয়ই আপনারা আমার সঙ্গে একমত হবেন।'

প্রথম আলোর সাংবাদিক শামসুজ্জামানের গ্রেপ্তার বিষয়ে যুক্তরাষ্ট্রসহ ১২টি দেশ বিবৃতি দিয়েছে। এটি আমাদের অভ্যন্তরীণ বিষয়ে হস্তক্ষেপ কি না, সাংবাদিকদের এমন প্রশ্নে তথ্যমন্ত্রী হাছান মাহমুদ বলেন, '১২টি দেশের দূতাবাসের পক্ষ থেকে একটি বিবৃতি তাদের ওয়েবসাইটে দেওয়া হয়েছে।'

ভারতের দিকে তাকানোর কথা উল্লেখ করে তিনি বলেন, 'সেখানে কয়েকদিন ধরে বিবিসির কার্যালয়ে তল্লাশি করা হয়েছে, সেখানে কি বিভিন্ন দেশ এ ধরনের উদ্বেগ প্রকাশ, বিবৃতি দিয়েছে? দেওয়া হয়নি। কারণ ভারত বড় দেশ, ভারতের শক্তি-সামর্থ্য বেশি। সেজন্য সেখানে সেই সাহস দেখাতে পারেনি।'

কূটনীতিকদের সঙ্গে ইফতারে বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বাংলাদেশের গণতন্ত্র পুনরুদ্ধারে কূটনীতিকদের সহায়তা কামনা করেছেন। সাংবাদিকরা এ বিষয়ে জানতে চাইলে হাছান মাহমুদ বলেন, 'আমরা তো প্রথম থেকেই বলে আসছি, তারা জনগণের কাছে যায় না, তারা বিদেশি কূটনীতিকদের ধারে ধারে গিয়ে পদলেহন করে। আমি আশা করেছিলাম তারা দুঃস্থ মানুষের সঙ্গে ইফতার করবে। সেটি না করে ফাইভ স্টার হোটেলে বসে কূটনীতিকদের সঙ্গে ইফতার করেছে। সেখানে গিয়ে আমাদের অভ্যন্তরীণ বিষয়ে হস্তক্ষেপের জন্য অনুনয়-বিনয় করেছে।'

'আসলে দোষটা কূটনীতিকদের চেয়েও আমাদের অনেকের অনেক বেশি। কারণ আমরা গিয়ে তাদের হাতে-পায়ে ধরি একটু কিছু বলার জন্য এবং আমাদের আভ্যন্তরীণ বিষয়ে হস্তক্ষেপ করার জন্য। এটি আসলে দেশবিরোধী এবং দেশের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্রের শামিল', বলেন তিনি।

সেসময় চট্টগ্রাম মহানগর আওয়ামী লীগের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি মাহাতাব উদ্দিন চৌধুরী, সাধারণ সম্পাদক সাবেক মেয়র আ জ ম নাছির উদ্দিন, সাংগঠনিক সম্পাদক নোমান আল মাহমুদ, চট্টগ্রাম উত্তর জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি এম এ সালাম, দক্ষিণ জেলার ভারপ্রাপ্ত সভাপতি মোতাহেরুল ইসলাম, সাধারণ সম্পাদক মফিজুর রহমান, জাতীয় শ্রমিক লীগের কেন্দ্রীয় সহ-সভাপতি সফর আলী প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।

Comments

The Daily Star  | English

‘Shockingly insufficient’

"The proposed decision to allocate USD 250 billion per year for all developing countries is shockingly insufficient," said the adviser

8m ago