লিটনের ক্যারিয়ার সেরা ইনিংসে টাইগারদের বিশাল পুঁজি

ছবি: ফিরোজ আহমেদ

অফস্টাম্পের বেশ বাইরে ছিল বলটি। ছেড়ে দিলে ওয়াইড হতে পারতো। কিন্তু রানের নেশায় পেয়ে বসেছিল লিটন দাসকে। এগিয়ে ড্রাইভ করতে গিয়েই ভুলটা করে বসেন। ব্যাটের কানায় লেগে চলে যায় উইকেটরক্ষকের হাতে। টি-টোয়েন্টি ক্যারিয়ারের প্রথম সেঞ্চুরির আশা জাগিয়ে ফিরতে হলো তাকে। তবে এর আগেই অনেক কীর্তি গড়েছেন লিটন। তার ব্যাটে বাংলাদেশও পেয়েছে বিশাল পুঁজি।

বুধবার চট্টগ্রামের জহুর আহমেদ চৌধুরী স্টেডিয়ামে আয়ারল্যান্ডকে ২০৩ রানের লক্ষ্য দিয়েছে বাংলাদেশ। প্রথমে ব্যাট করতে নেমে নির্ধারিত ১৭ ওভারে ৩ উইকেটে ২০২ রান করেছে টাইগাররা। প্রথম ম্যাচে ১৯.২ ওভারেই ২০৭ রান তুলেছিল বাংলাদেশ। নিজেদের ইতিহাসে প্রথমবারের টানা দুই ম্যাচে ২০০ বা এর বেশি রানের স্কোর গড়ল টাইগাররা।

আন্তর্জাতিক তো বটেই, ঘরোয়া কোনো টি-টোয়েন্টি আসরেও সেঞ্চুরি নেই লিটনের। এদিন যেভাবে ব্যাট করছিলেন তাতে মনে হয়েছিল তিন অঙ্ক ছোঁয়া সময়ের ব্যাপারই মাত্র। কিন্তু লিটন আউট হলেন লিটনের মতো করেই। আরও একটি সফট ডিসমিসালে হতাশায় পুড়তে হলো এ ব্যাটারকে।

তবে বিস্ফোরক ব্যাটিংয়ে খেলেছেন ক্যারিয়ার সেরা ৮৩ রানের ইনিংস। মাত্র ৪১ বলে এ রান করেন তিনি। নিজের ইনিংসটি সাজাতে ১০টি চার ও ৩টি ছক্কা মারেন এ ওপেনার। এই ইনিংসে দ্রুততম ফিফটির পাশাপাশি রনি তালুকদেরের সঙ্গে দেশের সর্বোচ্চ ওপেনিং জুটির রেকর্ডও গড়েন লিটন।

রনির সঙ্গে ইনিংসের গোড়াপত্তনে নেমে শুরু থেকেই ঝড় তুলতে থাকেন এ ওপেনার। রনিও তার সঙ্গে তাল মিলিয়েছিলেন দারুণভাবে। দুই ব্যাটারের আগ্রাসনে পাঁচ ওভারের পাওয়ার প্লেতেই আসে ৭৩ রান। আগের ম্যাচেই পাওয়ারপ্লেতে নিজেদের রেকর্ড গড়ে ৮১ রান তুলেছিল বাংলাদেশ। তবে এদিন বৃষ্টির কারণে পাওয়ারপ্লের পরিধি কমে এক ওভার। অন্যথায় হয়তো নতুন আরও একটি রেকর্ড দেখতে পারতো টাইগাররা।

দানবীয় ব্যাটিংয়ে মাত্র ১৮ বলে নিজের ফিফটি পূরণ করেছেন লিটন। আন্তর্জাতিক টি-টোয়েন্টিতে যা বাংলাদেশের দ্রুততম ফিফটি। ভাঙেন মোহাম্মদ আশরাফুলের ১৬ বছরের পুরোনো রেকর্ড। ২০০৭ সালে জোহানেসবার্গে ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে ২০ বলে ফিফটি করেছিলেন তিনি।

রনিও কম যাননি। ফলে মাত্র ২১ বলেই আসে ওপেনিং জুটির ফিফটি। আর ৪৩ বলে আসে জুটির শতরান। এ সংস্করণে দেশের ক্রিকেটের দ্রুততম। একই সঙ্গে দেশের সর্বোচ্চ ওপেনিং জুটিও। ২০২১ সালে জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে ১০২ রানের ওপেনিং জুটি গড়েছিলেন মোহাম্মদ নাইম শেখ ও সৌম্য সরকার।

শেষ পর্যন্ত রনির বিদায়ে দলীয় ১২৪ রানে ভাঙে টাইগারদের ওপেনিং জুটি। বেন হোয়াইটকে ছক্কায় হাঁকাতে গিয়ে লংঅনে ধরা পড়েন এই ওপেনার। ২৩ বলে দুটি ছক্কা ও তিনটি চারে ৪৪ রান করেন রনি। তার বিদায়ের পর উইকেটে আসেন সাকিব আল হাসান। প্রথম বলেই বাউন্ডারি মেরে তিনিও যোগ দেন আগ্রাসনে।

রনি আউট হওয়ার পর রানের গতিতে কিছুটা লাগাম দিতে পারে আইরিশরা। পরের ১৬ রান করতে খেলতে হয় তাদের ১৪টি বল। একাদশ ও দ্বাদশ ওভারে ইনিংসের সর্বনিম্ন ৫ রান করে আসে। এরমধ্যেই আউট হয়ে যান লিটন। বেন হোয়াইটের দ্বিতীয় শিকারে পরিণত হন তিনি।

এরপর সাকিবের সঙ্গে এরপর জুটি বাঁধেন তরুণ তাওহিদ হৃদয়। মার্ক অ্যাডাইরের বলে আউট হওয়ার আগে সাকিবের সঙ্গে ২৯ বলে গড়েন ৬১ রানের জুটি। অপরাজিত ৩৮ রানের ইনিংস খেলেন সাকিব। ২৪ বলে ৩টি চার ও ২টি ছক্কায় এ রান করেন তিনি। ১৩ বলে ৩টি চার ও ১টি ছক্কায় ২৪ রান করেন হৃদয়।

এর আগে সাগরিকায় এদিন টস হওয়ার পরপরই শুরু হয় বৃষ্টি। ফলে নির্ধারিত সময়ে খেলা শুরু করা যায়নি। ম্যাচের পরিধি এক ওভার কমিয়ে নতুন সময় নির্ধারিত হয় কিন্তু এর পর পরই আবার নামে বৃষ্টি। দ্বিতীয় দফায় নামা বৃষ্টি থামলে ফের আরেক দফা ম্যাচের পরিধি কমিয়ে নির্ধারিত হয় ১৭ ওভারে।

Comments

The Daily Star  | English

Consensus key to reforms, election

Chief Adviser Muhammad Yunus yesterday said reforms without consensus and elections without reforms would not be able to take Bangladesh forward.

9h ago