গুলিস্তানে বিস্ফোরণ

একসঙ্গে শবে বরাত পালনের কথা ছিল ৭ বন্ধুর, চলে গেলেন ১ জন

৩ বন্ধুর সঙ্গে সিয়াম (মাফলার পরা)। ছবি: সংগৃহীত

শবে বরাত ঘিরে ১ সপ্তাহ ধরে নানা রকমের পরিকল্পনা করেছিল ৭ বন্ধু। কোন কোন মসজিদে নামাজ পড়বে, কবর জিয়ারত করবে এবং কোথায় গিয়ে খাবে। ছোটবেলা থেকেই তারা সবাই একত্রে এভাবেই শবে বরাত পালন করে আসছিল। তবে রাজধানী ঢাকার গুলিস্তানের সিদ্দিকবাজারের বিস্ফোরণে এক বন্ধুর মৃত্যুতে এবার সব ওলট-পালট হয়ে গেছে।

বিস্ফোরণে বন্ধু মো. আব্দুল হালিম সিয়াম (১৯) আহত হয়েছে শুনে তৎক্ষণাৎ ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালে ছুটে আসে বাকি ৬ বন্ধু। আহত বন্ধুকে বাঁচাতে রক্ত প্রয়োজন শুনে তড়িঘড়ি করে জোগারও করেছিল রক্ত। কিন্তু, এরপরেও তাদের বন্ধুকে বাঁচানো যায়নি। রাত ১১টার দিতে চিকিৎসক জানান, তাদের বন্ধু সিয়াম আর নেই।

সিয়ামকে চিরতরে হারিয়ে ঢামেক হাসপাতালের জরুরি বিভাগের ওয়ান-স্টপ সেন্টারের সামনে থাকা ৬ বন্ধু তখন চিৎকার করে কেঁদে ওঠে। এক বন্ধু মো. রাতুল (১৯) আর্তনাদের স্বরে বলতে থাকে, 'আমার বন্ধু আমার ভাইয়ের চেয়েও বেশি। নিজের হাতে কীভাবে আমি তাকে মাটি দেবো? আমাকে রেখে আমার বন্ধু কীভাবে চলে গেল?'

রাতুল দ্য ডেইলি স্টারকে জানায়, সিয়ামের বাসা দক্ষিণ কেরানীগঞ্জের কবুতর পাড়ায়। বাকি ৬ বন্ধুও একই এলাকার। ছোটবেলা থেকেই একসঙ্গে তাদের বেড়ে ওঠা। সিয়ামের বাবার নাম মো. দুলাল মিয়া। ২ ভাইয়ের মধ্যে সিয়াম ছিল বড়।

'ওই ভবনটির একটি স্যানিটারি পণ্যের দোকানে কাজ করত সিয়াম। পরিকল্পনা মোতাবেক আমরা ৭ বন্ধু মিলে শবে বরাত পালন করার কথা ছিল। দোকানের কাজ সেরে সন্ধ্যায় সিয়ামের আসার কথা ছিল। কিন্তু বিকেলের বিস্ফোরণে সিয়াম গুরুতর আহত হয়। খবর পেয়ে আমরা তৎক্ষণাৎ ঢামেক হাসপাতালে ছুটে যাই। রক্তের প্রয়োজন শুনে তা জোগারও করেছিলাম। কিন্তু দ্বিতীয় ব্যাগ রক্ত দেওয়ার সময় সিয়াম মারা যায় বলে হাসপাতাল থেকে আমাদের জানানো হয়,' বলেন রাতুল।

গুলিস্তানের এই বিস্ফোরণে এখন পর্যন্ত ১৭ জন নিহত হয়েছেন। আর আহত হয়েছেন অন্তত ১০০ জন।

Comments

The Daily Star  | English

A rush to heal exposed banking wounds

In October, a video on social media showed the manager of Social Islami Bank’s Agargaon branch breaking down in tears after enduring harsh verbal abuse from frustrated customers seeking to withdraw cash.

5h ago