জরায়ুমুখ ক্যানসার কী, প্রতিরোধে যা করবেন

জরায়ুমুখ ক্যান্সার কী, প্রতিরোধে যা করবেন
ছবি: সংগৃহীত

নারীদের যত ধরনের ক্যান্সার হয় তার মধ্যে জরায়ুমুখের ক্যানসার অন্যতম। বাংলাদেশে প্রতিবছর জরায়ুমুখের ক্যানসারে হাজার হাজার নারী আক্রান্ত হন এবং মৃত্যুবরণ করেন। 

২০১৮ সালের ইন্টারন্যাশনাল এজেন্সি অব রিসার্স অন ক্যানসার-এর (আইএআরসি) এর তথ্য মতে, বাংলাদেশে প্রতি বছর ১২ হাজারের বেশি নারী জরায়ুমুখ ক্যানসারে আক্রান্ত হন এবং প্রায় সাড়ে ৬ হাজার নারী মারা যান সার্ভিকাল ক্যানসার বা জরায়ুমুখ ক্যানসারে। 

একটু সচেতন থাকলেই খুব সহজে জরায়ুমুখ ক্যানসার প্রতিরোধ করা সম্ভব হয়। জরায়ুমুখ ক্যানসার প্রতিরোধ বিষয়ে গণস্বাস্থ্য সমাজভিত্তিক মেডিকেল কলেজের অধ্যাপক ডাক্তার দেলোয়ার হোসেনের কাছ থেকে চলুন জেনে নেই - 

জরায়ুমুখ ক্যানসার হয় এক ধরনের ভাইরাসের আক্রমণে, যার নাম প্যাপিলোমা ভাইরাস। সাধারণত এই ভাইরাসটি ছড়ায় ওই ভাইরাস আছে এমন কারও সাথে যৌন মিলনের ফলে। যৌন মিলনের সময় পুরুষদের কাছ থেকে নারীদের দেহে এই ভাইরাসটি ঢুকে যায়। তবে ভাইরাস শরীরে ঢোকার সঙ্গে সঙ্গে ক্যানসারহয় না। ক্যানসার হতে বেশ কয়েক বছর লাগতে পারে। 

জরায়ুমুখ ক্যানসারের মূল অসুবিধে হলো এটি শেষ পর্যায়ে গেলেই শুধু ব্যথা দেয়। প্রাথমিক পর্যায়ে লক্ষণগুলোকে অনেকেই মাসিকের মেয়েলি সমস্যা বলে মনে করেন। ক্যানসার যখন একেবারে শেষ পর্যায়ে চলে যায় তখন রোগটা অনেকদূর ছড়িয়ে যায়। 

যারা ঝুঁকিতে আছেন

  • ১৬ বছর বয়সের আগে যৌন সঙ্গমের অভিজ্ঞতা থাকলে কিংবা পিরিয়ড শুরুর এক বছরের মধ্যে যৌনসঙ্গম শুরু করলে।  
  • স্বামী বা যৌনসঙ্গীর শরীরে ভাইরাসটি থাকলে। 
  • একাধিক যৌনসঙ্গী থাকলে। 
  • জন্মনিয়ন্ত্রণের জন্য দীর্ঘদী, বিশেষ করে ৫ বছরের বেশি সময় ধরে পিল খেতে থাকলে।
  • শরীরের রোগপ্রতিরোধ ক্ষমতার ঘাটতি থাকলে। 
  • যৌনসঙ্গমের মাধ্যমে ছড়ায় এমন কোনো রোগ থাকলে যেমন এইডস, সিফিলিস, গনোরিয়া ইত্যাদি। 

লক্ষণ

  • যৌন মিলনের পর যোনি পথে রক্ত পাত। 
  • অনিয়মিত মাসিক, অতিরিক্ত রক্তপাত বা ২ মাসিকের মধ্যে রক্তপাত। 
  • অতিরিক্ত সাদা স্রাব, দুর্গন্ধযুক্ত স্রাব বা চাল ধোয়া পানির মতো স্রাব অথবা কোনো সময় রক্ত মিশ্রিত স্রাব যাওয়া। 
  • মেনোপজ এরপর আবার রক্তপাত, তলপেটে ব্যথা, কোমরে ব্যথা, হাড়ে ব্যথা, কাশি, কাঁশির সঙ্গে রক্ত যাওয়া ইত্যাদি উপসর্গও থাকতে পারে

প্রতিরোধ ব্যবস্থা

  • কম বয়সে মেয়েদের বিয়ে না দেওয়া। 
  • অধিক সন্তান ধারণা করা।  
  • ধূমপান না করা। 
  • যৌন-প্রজননস্বাস্থ্য সম্পর্কে সচেতনতা বৃদ্ধি করা। 
  • একাধিক যৌনসঙ্গী না রাখা। 
  • ৯ থেকে ৪৫ বছর বয়সী নারীদের জরায়ুমুখ ক্যানসার প্রতিরোধক টিকা গ্রহন করা। 
  • ৩০ থেকে ৩৫ বছর পর্যন্ত নারীদের প্রতি ৩ বছর পরপর ভায়া টেস্ট করা। 
  • উপরের লক্ষণগুলোর কোনো একটি নিয়মিত হতে থাকলে ডাক্তারের সঙ্গে পরামর্শ করা।

  

Comments

The Daily Star  | English

What if the US election ends in a Trump-Harris tie?

While not highly likely, such an outcome remains possible, tormenting Americans already perched painfully on the edge of their seats ahead of the November 5 election

2h ago