হাঁটু পানির ব্রহ্মপুত্র

ব্রহ্মপুত্রে হাঁটু পানি
ব্রহ্মপুত্রে হাঁটু পানি পার হয়ে জনসাধারণের চলাচল। এস দিলীপ রায়/স্টার

কুড়িগ্রামে ব্রহ্মপুত্র নদে নাব্যতা সংকটের কারণে নৌকা চলাচল চরমভাবে বাধাগ্রস্ত হচ্ছে। গত ২ সপ্তাহ ধরে জেলার চিলমারী বন্দরের রমনাঘাট থেকে রৌমারী উপজেলার কর্তিমারী রুটে নৌকা চলাচল বন্ধ আছে।

কুড়িগ্রাম সদর উপজেলার যাত্রাপুরঘাট ও চিলমারী উপজেলার রমনাঘাট থেকে প্রতিদিন ২ শতাধিক যাত্রীবাহী নৌকা অর্ধ শতাধিক রুটে চলাচল করছে। নৌকায় গন্তব্যে পৌঁছাতে মাঝিদের চরম বেগ পেতে হচ্ছে।

চিলমারী বন্দরের রমনাঘাটের ইজারাদার সহিদুল্ল্যাহ কায়সার দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, 'নদে পানি কম। প্রতিটি রুটে নৌকায় গন্তব্যে পৌঁছতে স্বাভাবিক সময়ের চেয়ে দেড় থেকে ২ ঘণ্টা বেশি সময় লাগছে। এতে মাঝিদের তেলের খরচ বেশি হচ্ছে।'

রমনা-কর্তিমারী রুটে নৌকা চলাচল বন্ধ আছে বলে জানান তিনি।

ব্রহ্মপুত্রে হাঁটু পানি
ব্রহ্মপুত্রে নাব্যতা সংকটের কারণে বিঘ্নিত নৌ চলাচল। এস দিলীপ রায়/স্টার

রমনাঘাটে নৌকার মাঝি মোসলেম উদ্দিন ডেইলি স্টারকে বলেন, 'পানি কম থাকার কারণে ঠিকমতো নৌকা চালাতে পারছি না। রোজগার কমে গেছে। গন্তব্যে পৌঁছাতে বেশ কয়েকটি স্থানে নৌকা আটকে যাচ্ছে। যাত্রীরাও বিরক্ত।'

তিনি মনে করেন, খনন করে নাব্যতা সংকট কাটানো প্রয়োজন।

যাত্রাপুরঘাটে নৌকার মাঝি আশরাফুল ইসলাম ডেইলি স্টারকে বলেন, 'পানি কম থাকার কারণে নৌকা চলাচল বাধাগ্রস্ত হওয়ায় অনেক মাঝি ঘাটে নৌকা বেঁধে রেখেছেন। কখনো নদের মাঝখানেও নৌকা আটকে যাচ্ছে। খনন ছাড়া নাব্যতা স্বাভাবিক করা সম্ভব নয়।'

রমনাঘাটে নৌকার যাত্রী মনোয়ারুল ইসলাম সরকার ডেইলি স্টারকে বলেন, 'চিলমারী-রৌমারী রুটে নৌকায় যাওয়া-আসা করতে প্রায় ৪ ঘণ্টা সময় লাগছে। নাব্যতা স্বাভাবিক থাকলে এই রুট নৌকায় ২ ঘণ্টায় পাড়ি দেওয়া যায়।'

'বর্তমানে নৌকায় চলাচল করতে অনেক সময় লাগছে। সময়মত গন্তব্যে পৌঁছতে পারছি না। আমরা ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছি।'

ব্রহ্মপুত্রে হাঁটু পানি
ব্রহ্মপুত্রের বুকে বিস্তৃর্ণ বালুচর। এস দিলীপ রায়/স্টার

চিলমারী উপজেলার ব্যাঙমারা চরের কৃষক নবিউল ইসলাম ডেইলি স্টারকে বলেন, 'নদে এখন পানি নেই বললেই চলে। কোথাও কোথাও হাঁটু পানি। নদের বিশাল অংশ পায়ে হেঁটে পাড়ি দিতে হচ্ছে। নৌকায় যেতে যে সময় লাগে তার চেয়ে কম সময়ে হয়তো পায়ে হেঁটেই যাওয়া যাবে।'

চিলমারী নৌ বন্দরে বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌ পরিবহন কর্তৃপক্ষ বিআইডব্লিউটিএর প্রধান পাইলট মাহবুবুর রহমান ডেইলি স্টারকে বলেন, 'ব্রহ্মপুত্রে নাব্যতা সংকট চরম। নৌকায় গন্তব্যে পৌঁছতে অনেক সমস্যায় পড়ছে। নদের বেশ কয়েকটি স্থানে খনন করা প্রয়োজন। বিষয়টি ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানানো হয়েছে।'

কুড়িগ্রাম পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী আব্দুল্ল্যাহ আল মামুন ডেইলি স্টারকে বলেন, 'নদের বুকে অসংখ্য ছোট-বড় চর জেগেছে। পানি প্রবাহ বিঘ্নিত হচ্ছে। নদে নাব্যতা সংকট দেখা দিয়েছে। খনন ছাড়া নাব্যতা স্বাভাবিক সম্ভব নয়। এ ব্যাপারে বিআইডব্লিউটিএ কর্তৃপক্ষ ব্যবস্থা নিবেন।'

Comments

The Daily Star  | English

$14b lost to capital flight a year during AL years

Bangladesh has lost around $14 billion a year on average to capital flight during the Awami League’s 15-year tenure, according to the draft report of the committee preparing a white paper on the economy.

9h ago