ব্যাটিংয়ে না নামার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন সাকিবই
নিয়মিত আগ্রাসী ব্যাট চালিয়ে এবার বাংলাদেশ প্রিমিয়ার লিগে (বিপিএল) সবচেয়ে ধারাবাহিকভাবে ব্যাটিং করেছেন সাকিব আল হাসান। প্রায় প্রতি ম্যাচেই তার আক্রমণে ভালো পুঁজি মিলেছে ফরচুন বরিশালের। সেখানে এলিমিনেটর রাউন্ডের মহা গুরুত্বপূর্ণ ম্যাচে ব্যাটিংয়েই নামেননি এ অলরাউন্ডার। এমন বিস্ময়কর সিদ্ধান্ত নিয়েছেন স্বয়ং সাকিবই।
মিরপুরে এদিন রংপুর রাইডার্সের কাছে ৪ উইকেটে হেরে আসর থেকে বিদায় নিয়েছে বরিশাল। প্রথমে ব্যাট করতে নেমে নির্ধারিত ২০ ওভারে ৩ উইকেটে ১৭০ রান করে তারা। অথচ যেভাবে শুরু করেছিল দলটি তাতে দুইশ কিংবা তার কাছাকাছি রান হতেই পারতো। রানের গতি বাড়াতে পারেননি আগের দিনই দলের সঙ্গে যোগ দেওয়া আন্দ্রে ফ্লেচার ও রাজাপাকশেরা।
ম্যাচ শেষে সাকিবের ব্যাটিংয়ে না নামার কারণ ব্যাখ্যা করে দলের প্রধান কোচ নাজমুল আবেদীন ফাহিম বলেন, 'ওর (সাকিব) মনে হয় মাথায় কাজ করেছিল রাজাপাকশে বা করিম জানাতকে ফ্রি করে দিলে ওরা যদি ফ্রিলি খেলে... নো মেটার ওরা যতটুকু রান করতে পারুক না কেন ওটা যদি ভালো রেটে করতে পারে সেটা দলের কাজে আসবে। ও শেষে গিয়ে ওর কাজটা করবে।'
'কিন্তু মনে হয় না সেই পরিকল্পনাটা কাজে লেগেছে। করিমকে পাঠানো হয়েছে বা রাজাপাকশেকে পাঠানো হয়েছে। আমরা যেটা প্রত্যাশা করেছিলাম সেটা করতে পারেনি। সেটা উইকেটের কারণে হোক বা অন্য কোনো কারণে বা ভালো বোলিংয়ের কারণে হোক কিংবা ওদের নিজেদের ইনটেন্টের কারণে হোক সেটা করতে পারেনি। সেটার কারণেই কিন্তু আমরা পিছিয়ে গিয়েছি।'
তবে যে ধারায় দলটি শুরু করেছিল তাতে দলের সংগ্রহ ১৯০ এর বেশি হতে পারতো বলেই মনে করেন ফাহিম, 'যে ফাউন্ডেশন শুরুতে দিয়েছিল আমাদের সুযোগ ছিল ১৯০ বা তারও বেশি স্কোর ছাড়িয়ে যাওয়ার। সেই ব্যাটিং শক্তি কিন্তু আমাদের শেষের দিকে ছিল। যেটা আমরা ব্যবহার করতে পারিনি।'
এই ম্যাচ ছাড়া এর আগে কেবল এক ম্যাচেই ব্যাটিংয়ে নামেননি সাকিব। সেটাও এই রংপুরের বিপক্ষেই। গ্রুপ পর্বে দুই দলের প্রথম লড়াইয়ে রংপুরের দেওয়া ১৫৯ রানের লক্ষ্য তাড়ায় নেমে ব্যাট করতে হয়নি সাকিবের। মূলত সেদিন টপ অর্ডার ব্যাটাররাই দলকে জয় এনে দিলে আর নামতে হয়নি তার।
এবারের আসরে ১৩ ম্যাচে ১১ ইনিংসে ব্যাটিং করে ৪১.৬৬ গড়ে দ্বিতীয় সর্বোচ্চ ৩৭৫ রান করেছেন সাকিব। যেখানে তিনবার খেলেছেন পঞ্চাশোর্ধ্ব ইনিংস। স্ট্রাইক রেট ১৭৪.৭১। কমপক্ষে ১০০ রানের বেশি করা ব্যাটারদের মধ্যে সেরা। অথচ সেই সাকিব এদিন শেষ দিকে ব্যাটিং করার চিন্তা করেন।
আর সিদ্ধান্তটা সাকিব নিজেই নিয়েছেন বলে জানান বরিশাল কোচ, 'অধিনায়কের কল তো ছিলই। নট দ্যাট আমাদের সঙ্গে আলাপ করেনি। ও নিজে থেকে কমফোরটেবল ফিল করছিল যে ওরা ভালো খেলোয়াড়। ওরা যদি যায় দুই–এক ওভার এক্সেলারেট করে দিয়ে আসতে পারে…সেরকম একটা অবস্থায় আমরা ছিলামও। ১-২ উইকেট হারালেও অসুবিধা হতো না আমাদের। কিন্তু সেই সুযোগটা সেভাবে কাজে লাগাতে পারিনি আমরা।'
আর সাকিব আগে নামলে পরিস্থিতি বদলে যেতে পারতো বলেও মনে করেন এ কোচ, 'সাকিবের চেয়ে ভালো কোনো অপশন আমার মনে হয় না আছে। খুব ভালো হতো ও যদি নিজে খেলতো এবং নিজের মতো করে খেলত সেটা আমাদের দলের জন্য ভালো হতো। এটা এখন হয়তো সাকিবেরও উপলব্ধিতে আসবে।'
Comments