‘যদি আড়ি পাতা না যায় জঙ্গিবাদ-সন্ত্রাস দমন করব কীভাবে’

শেখ হাসিনা
বৃহস্পতিবার চলতি একাদশ জাতীয় সংসদের ২১তম অধিবেশনের সমাপনী ভাষণে বক্তব্য দেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। ছবি: পিআইডি

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, 'ডিজিটাল বাংলাদেশ করেছি এটা ঠিক। এরমধ্য দিয়ে আবার দেখা যায় বিভিন্ন অ্যাপসের মাধ্যমে কীভাবে বোমা বানাবে, জঙ্গিবাদ করবে, সেগুলো দেখায়। এগুলো যদি আড়ি না পাতা যায় আমরা জঙ্গিবাদ সন্ত্রাস দমন করব কীভাবে? তাদের এ সমস্ত তথ্য আমরা পাব কীভাবে? কাজেই আমাদের তো এ ব্যাপারে ব্যবস্থা নিতে হবে।'

বৃহস্পতিবার চলতি একাদশ জাতীয় সংসদের ২১তম অধিবেশনের সমাপনী ভাষণে সংসদ নেতা শেখ হাসিনা এসব কথা বলেন।

তিনি আরও বলেন, 'আড়ি পাতা নিয়ে অনেকে কথা বলেন। কারণটা কী? ঠিক কোন রহস্যের কথা বলবেন যেটা সরকার শুনে ফেললে সমস্যা হবে? সরকার শোনে না। এটা আইন শৃঙ্খলা রক্ষাকারী সংস্থায় জঙ্গিবাদ সন্ত্রাস এধরনের কর্মকাণ্ড সেগুলো রোধ করার জন্য যেটুকু করার সেটুকুই করে। তার বেশি আর কিছু করে না। আর এটা করা যায় বলেই..এটা আইনসিদ্ধ। এটা করা যায় বলেই এটা সব দেশে আছে।'

অনির্বাচিত সরকারের দুঃস্বপ্ন থেকে বেরিয়ে আসার আহ্বান জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, 'অনির্বাচিত সরকারের স্বপ্ন যারা দেখছেন সেই দুঃস্বপ্ন থেকে বেরিয়ে আসবেন দয়া করে। এটা আর জীবনে হবে না। আর ক্ষমতায় যাওয়ার ইচ্ছা যাদের, আসেন নির্বাচন করেন। জনগণ যাকে মেনে নেবে সেই ক্ষমতায় যাবে। এখানে আওয়ামী লীগ কোনোদিন হস্তক্ষেপ করবে না, করে না।'

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, 'গণতান্ত্রিক ধারা অব্যাহত আছে বলে, ১৪ বছর ধরে ধারাবাহিক সরকার আছে বলে দেশে উন্নয়ন হচ্ছে। মানুষ সুফল পাচ্ছে।'

প্রধানমন্ত্রী বলেন, 'এদেশের কিছু লোক বিদেশে গিয়ে নালিশ করে। দেশের ভাবমূর্তি নষ্ট করে। এদেশের নাকি কিছুই হচ্ছে না। কিন্তু আজকে আন্তর্জাতিক পর্যায়ে স্বীকৃত, বাংলাদেশ উন্নয়নের রোল মডেল।'

শেখ হাসিনা বলেন, 'পরিবর্তন তাদের চোখে পড়ে না। এখন তারা আনতে চায় অনির্বাচিত সরকার। আমরা দেখেছি অনির্বাচিত সরকারে ব্যবসা বাণিজ্য উন্নয়ন ধ্বংস হয়েছে। উৎপাদন ব্যাহত হয়েছে। ভয়ঙ্কর অবস্থা হয়েছিল। সারা দেশের মানুষ আতঙ্কের মধ্যে থেকেছে। আবার কি এ দেশের মানুষকে আতঙ্কের মধ্যে নিয়ে যেতে চায়? আবার কি এ দেশের মানুষের ভাগ্য নিয়ে ছিনিমিনি খেলতে চায়?'

অনির্বাচিত সরকার যারা চায় তারা ব্যক্তিস্বার্থকে বড় করে দেখে মন্তব্য করে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, 'এদের সম্পর্কে দেশবাসীকে সাবধান থাকতে হবে। সজাগ থাকতে হবে। এরা কোথা থেকে কি পয়সা পাবে সে লোভে অন্যের কাছ থেকে পয়সা খেয়ে আমার দেশে অরাজক অবস্থা সৃষ্টি করতে চায়। আমার দেশের মানুষের উপর বিশ্বাস আছে, আস্থা আছে। বাংলাদেশের মানুষ আজকে যে জীবনে একটা স্থিতিশীলতা পেয়েছে, নিশ্চয় তারা তা ধ্বংস হতে দেবে না। এটা হালে পানি পাবে না।'

প্রধানমন্ত্রী বলেন, 'অনির্বাচিত সরকারের নামে যাদের ক্ষমতায় আসার ইচ্ছা তাদেরকে বলব রাজনীতি করেন, মানুষের কাছে যান, জনগণের ভোট নেন, নির্বাচিত হয়ে ক্ষমতায় আসেন। কোনো আপত্তি নাই। মানুষ যাকে ভোট দেবে তারাই সরকারে আসবে। নির্বাচন যে অবাধ সুষ্ঠু নিরপেক্ষ হয় তাতো আমরা প্রমাণ করে দিয়েছি।'

রমজান সামনে রেখে অনেক পত্রিকা নানা কিছু লিখছে জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী আশ্বস্ত করে বলেন, 'রমজানে খাদ্যের অভাব নেই। প্রয়োজনীয় পণ্য ক্রয়ে সমস্যা নেই। এলসি খুলতেও বাধা নেই। যারা এলসি নিয়ে দুই নাম্বারি করে বাধা তাদের জন্য। রমজানে ছোলা, চিনি, খেজুর, ডাল, তেল পর্যাপ্ত আছে। আরও কেনা হচ্ছে। ১৯ লাখ টন খাদ্য মুজদ আছে।'

প্রধানমন্ত্রী বলেন, কোনো কোনো দল আন্দোলন করছে, জোট করছে, মিছিল মিটিং করছে। বাধা দেওয়া হচ্ছে না। আওয়ামী লীগ বিরোধী দলে থাকতে প্রতিপদে বাধা ছিল।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, আমাদের মাঝে গণতান্ত্রিক সহনশীলতা আছে, আমরা তা দেখাচ্ছি এবং মিছিল মিটিং যাই করতে চায় আমরা করতে দিচ্ছি। তবে জনগণের জানমাল রক্ষা করা, জনগণের নিরাপত্তা দেওয়া এটা আমরা আমাদের কর্তব্য মনে করি। কাজেই যেখানে যারা অগ্নিসন্ত্রাসীরা যখনই মিছিল মিটিং করতে যায় তখনই আমরা আতঙ্কে থাকি যে, কখন কোন গাড়িতে আগুন দেবে, বাসে আগুন দেবে। নিরীহ মানুষকে পুড়িয়ে মারবে। সেটা যাতে মারতে না পারে সেজন্য আমাদের দল, দেশবাসী সবাইকে সজাগ থাকতে হবে। শান্তিপূর্ণ আন্দোলন করলে কেউ কিছু বলবে না। কোনো রকম অরাজকতা অগ্নি-সন্ত্রাস, ভাঙচুর, কোনো ধরনের জঙ্গিবাদি কাজ করতে গেলে তার বিরুদ্ধে যথাযথ ব্যবস্থা নেওয়া হবে, তাতে কোনো সন্দেহ নাই।'

Comments

The Daily Star  | English

What if the US election ends in a Trump-Harris tie?

While not highly likely, such an outcome remains possible, tormenting Americans already perched painfully on the edge of their seats ahead of the November 5 election

2h ago