রনি-মালিকের তাণ্ডবে ম্লান মুশফিক-হৃদয়ের ঝড়

ছবি ফিরোজ আহমেদ

শুরুতে রয়েসয়ে খেলা তৌহিদ হৃদয় পরে ডানা মেলে পেলেন ক্যারিয়ারসেরা ইনিংসের দেখা। আসরে প্রথম ফিফটির স্বাদ নিলেন মুশফিকুর রহিম। তাতে জুতসই পুঁজি পেল সিলেট স্ট্রাইকার্স। তবে রনি তালুকদার ঝড় তুলে রংপুর রাইডার্সকে বেঁধে দিলেন জয়ের সুর। বাকি পথ পাড়ি দেওয়ার কাজটা সারলেন পাকিস্তানের শোয়েব মালিক।

শনিবার বিপিএলে মিরপুর শেরে বাংলা স্টেডিয়ামে সিলেটকে ৮ উইকেটে হারিয়েছে রংপুর। টস হেরে আগে ব্যাটিংয়ে নেমে নির্ধারিত ২০ ওভারে ২ উইকেটে ১৭০ রান তোলে সিলেট। জবাবে ২ ওভার হাতে রেখে রংপুর ২ উইকেটে ১৭৬ রান করে জয় নিশ্চিত করে।

রংপুরের হয়ে ম্যাচসেরা রনি ব্যাট হাতে ছিলেন খুনে মেজাজে। ওপেনিংয়ে নেমে সাজঘরে ফেরার আগে তিনি খেলেন ৬৬ রানের চমৎকার ইনিংস। মাত্র ৩৫ বল মোকাবিলায় মারেন ৮ চার ও ৩ ছক্কা। তিনে নামা মালিক ২৪ বলে ৪ চার ও ১ ছয়ে ৪১ রানে অপরাজিত থাকেন। এর আগে সিলেটের পক্ষে ওপেনার হৃদয় ইনিংসের শেষ পর্যন্ত টিকে থেকে ৫৭ বলে ৮৫ রান করেন। তার ব্যাট থেকে আসে ১৩ চার ও ২ ছক্কা। মুশফিক ৫ চার ও ৩ ছক্কায় ৩৫ বলে ৫৫ রানে অপরাজিত থাকেন।

আসরের পয়েন্ট তালিকার শীর্ষে থাকা সিলেটের এটি ১১ ম্যাচে তৃতীয় হার। ১৬ পয়েন্ট অর্জন অধিনায়ক মুশফিকের দলের। চারে অবস্থান করছে টানা পঞ্চম ও সব মিলিয়ে সপ্তম জয়ের দেখা পাওয়া রংপুর। নুরুল হাসান সোহানের নেতৃত্বাধীন দলের পয়েন্ট ১০ ম্যাচে ১৪। দুই দলই ইতোমধ্যে নিশ্চিত করেছে প্লে-অফে খেলা।

পাওয়ার প্লেতে সিলেট ধুঁকছিল রান তুলতে। ৬ ওভারে দুই ওপেনার হৃদয় ও নাজমুল হোসেন শান্ত আনতে পারেন মোটে ২৬ রান। আফগানিস্তানের পেসার আজমতউল্লাহ ওমরজাই নিজের প্রথম দুই ওভারই নেন মেডেন। তবে শুরুর দারুণ বোলিংয়ের ধারা পরে বজায় রাখতে পারেনি রংপুর।

নবম ওভারে শান্তর মন্থর ইনিংসের ইতি ঘটান হাসান মাহমুদ। ১৫ রান করতে ২২ বল খেলে ফেলেন তিনি। তিনে নেমে সুবিধা করতে পারেননি জাকির হাসান। একাদশ ওভারে তাকে বিদায় করেন শেখ মেহেদী হাসান।

৫৯ রানে ২ উইকেট হারানো সিলেটের বিপদ আরও বাড়তে পারত। মুশফিক ফিরতে পারতেন মুখোমুখি হওয়া দ্বিতীয় বলেই। কিন্তু স্লগ সুইপে উঠে যাওয়া তার ক্যাচ লুফে নিতে পারেননি শামিম হোসেন। উল্টো বল সীমানা পেরিয়ে হয়ে যায় ছক্কা।

মুশফিক জীবন পাওয়ার পর থেকে শুরু হয় সিলেটের ঘুরে দাঁড়ানো। অবিচ্ছিন্ন তৃতীয় উইকেট জুটিতে হৃদয়ের সঙ্গে ৫৭ বলে ১১১ রান যোগ করেন তিনি। আসরে নিজের পঞ্চম হাফসেঞ্চুরি হৃদয় স্পর্শ করেন ৪৩ বলে। এরপর তার ব্যাট হয়ে ওঠে উত্তাল। অভিজ্ঞ মুশফিক ফিফটি পূরণ করেন ৩০ বলে।

৪ ওভারে ওমরজাই খরচ করেন মাত্র ১৭ রান। যদিও উইকেটের দেখা পাননি তিনি। রংপুরের জার্সিতে সবচেয়ে খরুচে ছিলেন পেসার হাসান। তার ৪ ওভারে আসে ৪৮ রান।

লক্ষ্য তাড়ায় রংপুরকে উড়ন্ত শুরু পাইয়ে জয়ের ভিত গড়ে দেন দুই ওপেনার রনি ও নাঈম শেখ। নাঈম প্রথমে বাউন্ডারি পেলেও রনি ছিলেন খুনে মেজাজে। ফলে পাওয়ার প্লেতে চলে আসে বিনা উইকেটে ৫৯ রান।

আসরে নিজের দ্বিতীয় ফিফটির স্বাদ নিতে রনি মোকাবিলা করেন মাত্র ২৭ বল। তবে ইনিংসকে এরপর আর লম্বা করতে পারেননি। দশম ওভারে ঠিক ১০০ রানের উদ্বোধনী জুটি ভাঙে পাকিস্তানের পেসার মোহাম্মদ ইরফানের বলে তার বিদায়ে।

হাত খুলতে শুরু করা নাঈমকে ফেরান রেজাউর রহমান রাজা। ৬ চারে ৩২ বলে ৪৫ রান আসে তার উইলো থেকে। ততক্ষণে জয়ের কক্ষপথে পৌঁছে যায় রংপুর। অভিজ্ঞ মালিকের কল্যাণে অনায়াসে শেষ হাসি হাসে তারা।

সিলেটের বোলাররা একদমই লড়াই জমাতে ব্যর্থ হন। ছয় বোলারের পাঁচজনই ওভারপ্রতি ৮ বা তার চেয়ে বেশি রান দেন। কেবল জিম্বাবুয়ের রায়ান বার্ল ৭.৫০ ইকোনমিতে ২ ওভারে দেন ১৫ রান।

Comments

The Daily Star  | English
Khaleda Zia skips rally due to illness

Khaleda to return home from London on May 5

BNP Chairperson Khaleda Zia will return home on Monday after her medical check-up in London.

2h ago