ব্রাহ্মণবাড়িয়া-২ উপনির্বাচন

স্বতন্ত্র প্রার্থী আসিফের খোঁজ পেতে প্রধানমন্ত্রীর সহায়তা চাইলেন স্ত্রী

নিখোঁজ স্বতন্ত্র প্রার্থী আবু আসিফ আহমেদের স্ত্রী মেহেরুন্নিসা মেহেরুন। ছবি: স্টার

ব্রাহ্মণবাড়িয়া-২ আসনের উপনির্বাচনে স্বতন্ত্র প্রার্থী আবু আসিফ আহমেদের খোঁজ পেতে তার স্ত্রী মেহেরুন্নিসা মেহেরুন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সহায়তা কামনা করেছেন।

আজ বুধবার বিকেলে আশুগঞ্জ উপজেলা সদরের বাড়িতে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে এ অনুরোধ জানান তিনি।

মোটরগাড়ি প্রতীক নিয়ে নির্বাচনে অংশ নেওয়া আবু আসিফ আহমেদ গত ৫ দিন ধরে নিখোঁজ।

মেহেরুন্নিসা বলেন, 'যেহেতু নির্বাচনের প্রধান প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থী আবু আসিফ আহমেদ নিখোঁজ, সেহেতু এই এলাকার জনগণ কেন্দ্রে যাওয়া থেকে বিরত থেকে ভোট প্রত্যাখ্যান করেছেন। মূল প্রতিদ্বন্দ্বীকে গায়েব করে ফেলায় নিঃসন্দেহে এই নির্বাচন প্রশ্নবিদ্ধ হয়েছে। এই এলাকার জনগণ অভিনব প্রতিবাদ করে বুঝিয়ে দিয়েছেন যে, তারা আবু আসিফ আহমেদকে ভালোবাসেন এবং নির্বাচন কমিশনের প্রতি তাদের কোনো আস্থা নেই। কোনো এমপি নির্বাচন এত কম ভোটারের উপস্থিতিতে হয় না। এই নির্বাচন ইতিহাসের সাক্ষী হয়ে থাকবে। আপনারাও এর সাক্ষী হয়ে থাকবেন।'

তিনি বলেন, 'আমি ভোটকেন্দ্রে গিয়েছিলাম দুপুর ১টা থেকে দেড়টার মধ্যে। সকাল ৯টার দিকে আমার ফোনে খবর আসছিল ভোটকেন্দ্র থেকে আমার এজেন্টদের বের করে দেওয়া হচ্ছে এবং আমার ভোটার যারা কেন্দ্রে গিয়েছিলেন তাদেরও বের করে দেওয়া হচ্ছে। যেহেতু আমরা জনগণের জন্য কাজ করি এবং তাদের জন্যই ভোটে দাঁড়িয়েছি, তাদের কল্যাণের উদ্দেশ্যে, তাদের আশা পূরণ করার জন্য আমরা নির্বাচন করেছি, জয়লাভও করতাম। আপনারা ইতোমধ্যেই অবগত আছেন, অন্যতম প্রধান প্রতিদ্বন্দ্বী হয়েও আমরা বিগত ৭-৮ দিন ধরে প্রচার-প্রচারণায় অংশ নিতে পারিনি। সেজন্য আমি নির্বাচন কমিশনের কাছে দাবি জানিয়েছিলাম। এমতাবস্থায় আমি কোনো কিছুতেই নির্বাচনে ভোট দিতে পারি না। তাছাড়া আমার স্বামীও নিখোঁজ। তাহলে আমি ভোটকেন্দ্রে গিয়ে কী করব।'

আবু আসিফ আহমেদেরে স্ত্রী বলেন, 'একটা শান্তি, উৎসব-আমেজে মানুষ ভোট দেয়, কিন্তু এখানে কোনো পরিবেশই নেই। পাশাপাশি এই নির্বাচন নিয়ে অনেকে হাসি-ঠাট্টাও করছেন। সেজন্য কেন্দ্রে গিয়েও আমি ভোট না দিয়ে ফিরে এসেছি। আজ সকাল থেকেই যখন শুনছিলাম যে, ভোটকেন্দ্রে গেলেই এজেন্টদের বের করে দিচ্ছে, আর গতকাল রাত থেকেই এজেন্টদের ভয়-ভীতি দেখানো হয়েছে, এমতাবস্থায় এটা কী নির্বাচন হলো আমি বুঝতে পারিনি। তবে আমাকে সবাই বলেছিল, যেহেতু এই নির্বাচনে আসিফ আহমেদ জয়লাভ করবে এমন একটা স্বপ্ন ছিল, সেজন্য আমি ভোট দিতে কেন্দ্রে গিয়েছিলাম। ভোটকেন্দ্রে গিয়ে দেখলাম প্রশাসনের লোকজনের সামনেই একজনের ফিঙ্গারপ্রিন্ট নেওয়ার পর স্বতন্ত্র প্রার্থী আব্দুস সাত্তার ভূঁইয়ার পক্ষের লোকেরা চাপ দিয়ে ভোটারের ভোট দিয়ে দিচ্ছেন। স্বয়ং প্রিসাইডিং কর্মকর্তার চোখেও বিষয়টি ধরা পড়েছে। এরপর প্রশাসনকে বিষয়টি জানানোর পরও তারা কোনো ব্যবস্থা নেয়নি। সেজন্যই নির্বাচন কমিশনকে আমি বিষয়টি জানিয়েছি।'

তিনি বলেন, 'এমনিতেই আমার স্বামী নিখোঁজ। এখন আমি কীভাবে ভোট দেই। যদি নির্বাচন কমিশন সুন্দর ও শান্তিপূর্ণ নির্বাচন আয়োজন করতো, তাহলে তা হতো গণতন্ত্রের একটি নতুন অভিযাত্রা।'

এর আগে, দুপুরে আশুগঞ্জ উপজেলা সদরের শ্রম কল্যাণকেন্দ্র ভোটকেন্দ্রে গিয়ে নির্বাচনে ভোট ডাকাতির অভিযোগ এনে এই নির্বাচন স্থগিতের দাবি জানান মেহেরুন্নিসা।

Comments

The Daily Star  | English

Govt publishes gazette of 1,558 injured July fighters

Of them, 210 have been enlisted in the critically injured "B" category, while the rest fall under the "C" category of injured fighters

7h ago