রিজওয়ানা হাসানের গাড়িতে হামলার নিন্দা জানিয়ে ৫২ নাগরিকের বিবৃতি

রিজওয়ানা হাসান
সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান। ছবি: সংগৃহীত

বাংলাদেশ পরিবেশ আইনবিদ সমিতির (বেলা) প্রধান নির্বাহী ও সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী সৈয়দা রিজওয়ানা হাসানের গাড়িতে হামলার ঘটনায় উদ্বেগ ও নিন্দা জানিয়েছেন দেশের ৫২ নাগরিক।

আজ শনিবার এক বিবৃতিতে গত ২৬ জানুয়ারি চট্টগ্রাম নগরে আকবরশাহ এলাকায় সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান, বেলার অন্যান্য কর্মকর্তা ও সাংবাদিকদের ওপর আক্রমণ ও তাদের বহনকারী গাড়ি আটকে রাখার ঘটনায় উদ্বেগ ও নিন্দা জানান তারা।

এ ঘটনার নিরপেক্ষ তদন্ত দাবি করে জড়িতদের বিচারের দাবি জানিয়েছেন তারা।

বিবৃতিতে বলা হয়, আকবরশাহ থানাধীন লেকসিটি আবাসিক এলাকায় পাহাড় কেটে ভরাট করা ছড়া পরিদর্শনের সময় চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের ৯ নম্বর উত্তর পাহাড়তলী ওয়ার্ডের কাউন্সিলর জহুরুল আলম ওরফে জসিমের নেতৃত্বে তার অনুসারী দুর্বৃত্তরা এ ঘটনা ঘটিয়েছে। তাদের কাছে দেশীয় ধারাল অস্ত্র ছিল।

বেলার প্রধান নির্বাহী সৈয়দা রিজওয়ানা হাসানের গাড়ি লক্ষ্য করে ঢিল ছোড়া হয়েছে। এ সময় তার সফরসঙ্গী বেলার কর্মকর্তা ও সাংবাদিকদের সঙ্গে দুর্ব্যবহার করা হয়। কমিশনারের লোকজন প্রতিনিধি দলের গাড়িটি আটকে রাখে। পরে পুলিশ এসে গাড়ি ছাড়িয়ে নেয়।

বিবৃতিদাতারা বলেন, অবৈধ পাহাড় কাটার অভিযোগে অভিযুক্ত কাউন্সিলর জসিমের বিরুদ্ধে চট্টগ্রাম পরিবেশ অধিদপ্তর একটি মামলা দায়ের করেছে আকবর শাহ থানায়। এরআগেও ২০১৫ সালে তার বিরুদ্ধে আরও একটি মামলা করেছিল পরিবেশ অধিদপ্তর। এ আক্রমণের ঘটনার ব্যাপারেও আকবরশাহ থানায় একটি অভিযোগ দায়ের করা হয়েছে।

বিবৃতিতে বলা হয়, 'পরিবেশ, মানবাধিকার ও অধিকার ভিত্তিক সংগঠনগুলো প্রায়শই এ ধরনের অভিযোগের ভিত্তিতে সংশ্লিষ্ট এলাকা পরিদর্শন করে প্রকৃত ঘটনা সংবাদ মাধ্যম এবং সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের কাছে তুলে ধরে তাদের নাগরিক দায়িত্ব পালন করে আসছে। তাই অধিকার ভিত্তিক সংগঠনের ওপর এ ধরনের ন্যক্কারজনক হামলার ঘটনা উদ্বেগজনক এবং আমরা এ ঘটনায় তীব্র ক্ষোভ ও নিন্দা জানাচ্ছি। রাষ্ট্রের অভ্যন্তরে নাগরিকদের চলাফেরা ও নিরাপত্তা পাওয়ার অধিকার প্রত্যেকের সাংবিধানিক অধিকার। তাই রাষ্ট্রকে সব নাগরিকের এই অধিকার নিশ্চিত করতে হবে।

যে তিনটি দাবি তারা জানান সেগুলো হলো-- এ ঘটনার নিরপেক্ষ ও সুষ্ঠু তদন্তের মাধ্যমে চিহ্নিত অপরাধীদের গ্রেপ্তার ও দ্রুত বিচারের মাধ্যমে উপযুক্ত শাস্তির ব্যবস্থা করা, এ ঘটনার অন্তরালে যারা আছে তাদেরও চিহ্নিত করে গ্রেপ্তার ও কঠোর শাস্তি নিশ্চিত করা এবং ভবিষ্যতে কোনো দখলদার, পাহাড়খেকো, নদীখেকো ও ভূমিদস্যু যেন এ ধরনের ঘটনা ঘটাতে সাহস না দেখায় তার জন্য সরকারকে কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণ করা।

বিবৃতি প্রদানকারী ৫২ নাগরিক হলেন- মানবাধিকার সংস্কৃতি ফাউন্ডেশনের মানবাধিকার কর্মী ও চেয়ারপার্সন সুলতানা কামাল, অর্থনীতিবিদ ও তত্ত্বাবধায়ক সরকারের সাবেক উপদেষ্টা ওয়াহেদউদ্দিন মাহমুদ, পিপিআরসির নির্বাহী চেয়ারম্যান হোসেন জিল্লুর রহমান, গণস্বাক্ষরতা অভিযানের নির্বাহী পরিচালক রাাশেদা কে. চৌধুরী, মানুষের জন্য ফাউন্ডেশনের নির্বাহী পরিচালক শাহীন আনাম, 'নিজেরা করি'র সমন্বয়কারী ও এএলআরডির চেয়ারপার্সন খুশী কবির, মানবাধিকার কর্মী ড. হামিদা হোসেন, সাবেক মন্ত্রীপরিষদ সচিব আলী ইমাম মজুমদার' আইন ও সালিশ কেন্দ্রের সভাপতি অ্যাড. জেড আই খান পান্না, সিপিডির বোর্ড অব ট্রাস্ট্রি ড. দেবপ্রিয় ভট্টাচার্য, বাংলাদেশ হিন্দু বৌদ্ধ খ্রিস্টান ঐক্য পরিষদের সাধারণ সম্পাদক রাণা দাশগুপ্ত, অ্যসোসিয়েশ ফর ল্যান্ড রিফর্ম অ্যান্ড ডেভেলপন্টের (এএলআরডি) নির্বাহী পরিচালক শামসুল হুদা, গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রের ট্রাস্টি ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরী, অধ্যাপক    আনু মোহাম্মদ, নারীপক্ষের সদস্য শিরিন হক,  টিআইবির নির্বাহী পরিচালক ড. ইফতেখারুজ্জামান, আইনজীবী ড. শাহদীন মালিক, ড. স্বপন আদনান ভিজিটিং রিসার্স ফেলো, অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়, সুব্রত চৌধুরী সিনিয়র আইনজীবী, বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্ট, কাজল দেবনাথ, প্রেসিডিয়াম সদস্য, বাংলাদেশ হিন্দু বৌদ্ধ খ্রিস্টান ঐক্য পরিষদ, তবারক হোসেইন, সহ সভাপতি, সম্মিলিত সামাজিক আন্দোলন ও আইনজীবী, বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্ট, ড. আবুল বারকাত, অধ্যাপক, অর্থনীতি বিভাগ, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ও উপদেষ্টা, এইচডিআরসি, কবি ও লেখক রাহনুমা আহমেদ, ব্লাস্টের অনারারি নির্বাহী পরিচালক সারা হোসেন, বদিউল আলম মজুমদার, সম্পাদক, সুজন, সঞ্জীব দ্রং, সাধারণ সম্পাদক, 'বাংলাদেশ আদিবাসী ফোরাম', ড. শহিদুল আলম, আলোকচিত্রী ও সমাজকর্মী, ড. রুশাদ ফরিদী, অধ্যাপক, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়, মির্জা তাসলিমা সুলতানা, অধ্যাপক, জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়, রোজীনা বেগম, গবেষক ও অধিকার কর্মী', মাইদুল ইসলাম, সহযোগী অধ্যাপক, চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়, জাকির হোসেন, নির্বাহী পরিচালক, নাগরিক উদ্যোগ, অ্যাড. সালমা আলী, নির্বাহী পরিচালক, বিএনডব্লিউএলএ, ব্যারিস্টার আশরাফ আলী, আইনজীবী, বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্ট, অ্যাড. মিনহাজুল হক চৌধুরী, আইনজীবী, বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্ট, ব্যারিস্টার শাহাদাত আলম, বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্ট, অধ্যাপক ড. সুমাইয়া খায়ের, আইন বিভাগ, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়,      অ্যাড. সাইদুর রহমান, প্রধান নির্বাহী, মানবাধিকার সংস্কৃতি ফাউন্ডেশন, রেজাউল করিম চৌধুরী, নির্বাহী পরিচালক, কোস্ট ট্রাস্ট, অধ্যাপক রোবায়েত ফেরদৌস, গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগ, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়, অধ্যাপক ড. আসিফ নজরুল, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়, সঙ্গীতশিল্পী ও লেখক অরূপ রাহী, দীপায়ন খীসা, তথ্য ও প্রচার সম্পাদক, 'বাংলাদেশ আদিবাসী ফোরাম', অধ্যাপক ফিরদৌস আজিম, ব্র্যাক বিশ্ববিদ্যালয়, অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ তানজিম উদ্দিন খান, আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগ, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়, সহযোগী অধ্যাপক জোবাইদা নাসরীন কণা, নৃবিজ্ঞান বিভাগ, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়, পল্লব চাকমা, নির্বাহী পরিচালক, কাপেং ফাউন্ডেশন, ফারাহ তানজীন তিতিল, শিক্ষক, অর্থনীতি বিভাগ, ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়, রেজাউল করিম লেনিন, গবেষক ও মানবাধিকার কর্মী হানা শামস আহমেদ, 'আদিবাসী অধিকার কর্মী', তাসনীম সিরাজ মাহবুব, সহযোগী অধ্যাপক, ইংরেজি বিভাগ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়, মুক্তাশ্রী চাকমা, কোর গ্রুপ মেম্বার, সাঙ্গাত।

Comments

The Daily Star  | English
compensation for uprising martyrs families

Each martyr family to get Tk 30 lakh: Prof Yunus

Vows to rehabilitate them; govt to bear all expenses of uprising injured

6h ago