আদর্শকে বইমেলায় স্টল না দেওয়ায় ৫৯ নাগরিকের উদ্বেগ

অমর একুশে গ্রন্থমেলায় প্রকাশনা সংস্থা আদর্শকে স্টল বরাদ্দ না দেওয়ায় গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন দেশের ৫৯ নাগরিক।

আজ শনিবার সংবাদ বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে তারা উদ্বেগ প্রকাশ করেন।

বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, 'আদর্শ প্রকাশনার প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা ও প্রকাশক মাহাবুব রাহমান জানিয়েছেন, আসন্ন অমর একুশে গ্রন্থমেলায় প্রকাশনাটির স্টল বরাদ্দ স্থগিত করে রাখা হয়েছে। মাহাবুব রাহমান মনে করছেন, ভিন্নমত প্রকাশে বাধা দিতেই এই হীন চেষ্টা করা হয়েছে।'

৫৯ নাগরিক তাদের বিবৃতিতে বলেন, 'বায়ান্নর মহান ভাষা আন্দোলন ও স্বাধীনতা সংগ্রামের মধ্য দিয়ে অর্জিত বাংলাদেশের মহৃলনীতি ছিল; মানবিক মর্যাদা, আইনের শাসন ও মৌলিক অধিকারের নিশ্চয়তা রাষ্ট্র দেবে। সেক্ষেত্রে একজন লেখকের বইয়ে তার মতামত প্রকাশের স্বাধীনতাও রতি হবে বলেই আমরা বিশ্বাস করি। কিন্তু গভীর উদ্বেগের সঙ্গে আমরা লক্ষ্য করছি যে, আদর্শ প্রকাশনাকে ৩টি বইয়ের উল্লেখ করে বইমেলায় অংশগ্রহণের ন্যায্য অধিকার থেকে বঞ্চিত করার চেষ্টা চলছে। এটা বাকস্বাধীনতা হরণের পাশাপাশি আইনের শাসনের প্রতিও বৃদ্ধাঙ্গুলি দেখানো হয়েছে বলে আমরা মনে করি।'

'কোনো রকম নিয়ম-নীতির তোয়াক্কা না করে এভাবে আদর্শ প্রকাশনাকে বইমেলায় অংশগ্রহণে বাধা দেওয়া গণতান্ত্রিক মূল্যবোধের পরিপন্থী। বাংলা একাডেমিকে বলা হয় "বাঙালির মেধা ও মননের প্রতীক"। সেই বাংলা একাডেমি কেন নিজেদের দলীয়করণের সুযোগ দেবে?'

'এটা শুধু নিন্দনীয় নয়, একই সঙ্গে লেখকের মত প্রকাশের স্বাধীনতায় হস্তক্ষেপের শামিল। এখানে দেখা যাচ্ছে কণ্ঠরোধ করতে বাংলা একাডেমিকে ব্যবহার করা হচ্ছে। পাশাপাশি বইমেলাকে কেন্দ্র করে সারা বছরের প্রস্তুতি, আর্থিক বিনিয়োগসহ প্রকাশনা সংশ্লিষ্ট আরও অনেকের কর্মসংস্থানেও বাধা সৃষ্টি করবে।'

'আমরা দ্রুত আদর্শকে বইমেলায় প্রাপ্য অনুযায়ী স্টল বরাদ্দের পাশাপাশি বইমেলাকে কেন্দ্র করে লেখক, প্রকাশকের স্বাধীনতা যাতে অক্ষুণ্ণ থাকে তা নিশ্চিতের জোর দাবি জানাই।'

বিবৃতিতে সই করেছেন লেখক ও রাজনীতিবিদ বদরুদ্দীন উমর, অধ্যাপক সিরাজুল ইসলাম চৌধুরী, অধ্যাপক আবুল কাসেম ফজলুল হক, কবি ও চিন্তক ফরহাদ মজহার, অধ্যাপক ড. দিলারা চৌধুরী, অধ্যাপক আনু মুহাম্মদ, নারীনেত্রী ফরিদা আকতার, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন বিভাগের অধ্যাপক ড. আসিফ নজরুল, জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক সাঈদ ফেরদৌস, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের অধ্যাপক রোবায়েত ফেরদৌস, লেখক ও সংগঠক মুনির হাসান, জাতীয় প্রেসক্লাবের সাবেক সাধারণ সম্পাদক ইলিয়াস খান, প্রকাশক মাহরুখ মহিউদ্দীন, বেলার নির্বাহী প্রধান সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান, ব্যারিস্টার জ্যোতির্ময় বড়ুয়া, অধ্যাপক ড. তানজীম উদ্দিন খান, লেখক ও প্রকৌশলী চমক হাসান, লেখক ও অধ্যাপক রাগিব হাসান, কথাসাহিত্যিক ও সাংবাদিক মাহবুব মোর্শেদ, গণসংহতি আন্দোলনের প্রধান সমন্বয়ক জোনায়েদ সাকি, রিভারাইন পিপলের মহাসচিব শেখ রোকন, প্রকাশক দীপগ্ধকর দাশ, লেখক ও সংগঠক ফিরোজ আহমেদ, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক কামরুল হাসান মামুন, লেখক ও রাজনৈতিক বিশ্লেষক ড. মারুফ মল্লিক, লেখক রাখাল রাহা, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক মোহাম্মদ আজম, প্রকাশক মেসবাহউদ্দিন, লেখক ও রাজনীতিবিদ ড. জাহেদ উর রহমান, সাংবাদিক ও কথাসাহিত্যিক সালাহ উদ্দিন শুভ্র, কথাসাহিত্যিক বাকি বিল্লাহ, লেখক ও প্রকাশক নাজিম উদ্দিন, কবি ও সাংবাদিক ফারুক ওয়াসিফ, সাংবাদিক ও কথাসাহিত্যিক এহসান মাহমুদ, নির্মাতা তাসমিয়া আফরিন মৌ, লেখক ও গবেষক জাকারিয়া পলাশ, নাগরিক পরিষদের আহ্বায়ক মোহাম্মদ শামসুদ্দীন, গবেষক সাইমুম পারভেজ, লেখক ও সাংবাদিক শিবলী আহমেদ, কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক মুতাসিম বিল্লাহ, লেখক ও সাংবাদিক সোহেল রানা, পেশাজীবী অধিকার পরিষদের আহ্বায়ক জাফর মাহমুদ, হালখাতার সম্পাদক ও কবি শওকত হোসেন, রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের আরবি বিভাগের অধ্যাপক ড. ইফতিখারুল আলম মাসউদ, জাতীয় প্রেসক্লাবের সাবেক সাধারণ সম্পাদক ও লেখক সৈয়দ আবদাল আহমদ, গবেষক ও মানবাধিকার কর্মী রোজীনা বেগম, শিক্ষক খোরশেদ আলম, এক্টিভিস্ট ও সাংস্কৃতিক কর্মী নুসরাত জাহান, গবেষক ও এক্টিভিস্ট দিলশানা পারুল, ইস্তাম্বুল গেলিশিম ইউনিভার্সিটির গবেষক ও শিক্ষক ড. রহমত উল্লাহ, সাংবাদিক ও রাজনৈতিক এক্টিভিস্ট আরিফুল ইসলাম আদীব, লেখক ড. হাফিজুর রহমান, ব্যারিস্টার শিহাব উদ্দিন খান, গবেষক ও এক্টিভিস্ট মাহা মির্জা, গার্ডিয়ান পাবলিকেশন্সের প্রকাশক নূর মোহাম্মাদ আবু তাহের, অধিকারকর্মী রেজাউর রহমান লেনিন, লেখক ও গবেষক ড. একরাম উদ্দীন সুমন, সাংবাদিক তন্ময় ইমরান এবং প্রকাশক ও লেখক শামীম রেজায়ী।

Comments

The Daily Star  | English

Election in first half of April 2026

In his address to the nation, CA says EC will later provide detailed roadmap

11h ago