‘ভালো বলেও রান বের করার পথ খুঁজতে হবে’
খেলোয়াড়ি জীবনে সাঈদ আনোয়ারের সঙ্গে দারুণ ওপেনিং জুটি হতো আমির সোহেলের। পাকিস্তানের অনেক সাফল্যের পেছনে আছে তার অবদান। খেলা ছাড়ার পর ধারাভাষ্যে যোগ দেওয়া পাকিস্তানের সাবেক এই ব্যাটার এবার এসেছেন বিপিএলে, থাকবেন কমেন্ট্রি বক্সে। দ্য ডেইলি স্টারের সঙ্গে একান্ত সাক্ষাতকারে এই বাঁহাতি বাংলাদেশের ক্রিকেট নিয়ে দিয়েছেন তার নানান মত।
খেলোয়াড়ি জীবনে বাংলাদেশ নিয়ে কোন স্মৃতি আছে?
আমির সোহেল: আমার মনে হয় ১৯৯৩ সালে প্রথমবার এখানে এসেছিলাম। নিউজিল্যান্ড সফরের আগে আমরা এখানে কিছু ম্যাচ খেলেছিলাম। মনে পড়ে ১৯৮৫ সালে বাংলাদেশের পাকিস্তান সফরের সময় আমার কিছু বন্ধু হয়েছিল। যার মধ্যে ফারুখ আহমেদ একজন, যে পরে বিসিবির প্রধান নির্বাচক হয়। চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফিতে পরে এখানে খেলেছি (১৯৯৮ সালে আইসিসি নক আউট মিনি বিশ্বকাপ)। কাজেই ভালো কিছু স্মৃতি আছে।
বাংলাদেশের মানুষজন বিপিএলের সঙ্গে পিএসএলের তুলনা করে দেখছে অবস্থা। এই ব্যাপারে আপনার কি মত?
আমির সোহেল: বিপিএলের সময়ে অনেকগুলো ফ্র্যাঞ্চাইজি লিগ চলমান, কাজেই আপনি তুলনায় যেতে পারেন না। অনেক লিগ চলায় বিপিএলের ভিউয়ারশিপে প্রভাব পড়েছে। কিন্তু আমি যখন আমার বন্ধুদের সঙ্গে কথা বলি, তারা আসলে বিপিএল ফলো করছে। পিএসএল অনেক বেশি জনপ্রিয়তা পেয়ে গেছে কারণ ওই সময়টায় অন্য কোন লিগ হয় না।
বাংলাদেশ এখনো টেস্টে শক্ত দল করতে পারেনি। এর কারণ কি বলে মনে হয় আপনার?
আমির সোহেল: আগে বাংলাদেশের মানসম্পন্ন পেস বোলার ছিল না। কিন্তু এখন অনেক পেস বোলার আছে, বাংলাদেশের ভালো স্পিনার বরাবরই ছিল। একটা ব্যাপারই শুধু বাংলাদেশ রপ্ত করতে পারেনি। টেস্টে ২০ উইকেট নেওয়া আর প্রচুর রান করা।
একজন প্রাক্তন ওপেনার হিসেবে বাংলাদেশের ব্যাটারদের তিন সংস্করণে মানিয়ে নেওয়ার জন্য কি করার পরামর্শ থাকবে আপনার?
আমির সোহেল: খুবই সহজ ব্যাপার। সব সংস্করণে সফল হতে হলে আপনার ভালো টেকনিক থাকা লাগবে। খেলার দৈর্ঘ্য সম্পর্কে ধারণা থাকা লাগবে। ভালো বলেও রান বের করার পথ খুঁজতে হবে। কোন ব্যাটার যদি ঝুঁকি ছাড়া তা করতে পারে তাহলে সে সফল হবে।
সাঈদ আনোয়ারের সঙ্গে আপনার রসায়নের প্রশংসা করেন এখনো অনেকে। কীভাবে এত ভালো ওপেনিং জুটি হতো আপনাদের?
আমির সোহেল: আপনার সঙ্গীকে বোঝা খুব গুরুত্বপূর্ণ। তখন সাঈদ এসে আমাকে বলত আমার অমুক বোলারকে সামলানো উচিত। আমিও একই কাজ করতাম। আপনাকে কৌশল নিয়ে কথা চালিয়ে যাওয়া লাগবে। প্রতিপক্ষের বোলারদের কীভাবে সামলাবেন সেই আলাপ করতে হবে। খোলামেলা ও সৎ থাকতে হবে।
বাংলাদেশের ক্রিকেটারদের মধ্যে কারা আপনাকে মুগ্ধ করে?
আমির সোহেল: তাসকিন আহমেদ খুব উন্নতি করেছে। আরেকজন হচ্ছে আফিফ হোসেন। সে যেভাবে খেলছে আমার মনে হয় সে বাংলাদেশের এক ভবিষ্যৎ। আমার মনে হয় বিশ্বের সেরা ক্রিকেটার হতে হলে খেলোয়াড়দের ভেতর থেকেই তাড়না আসতে হয়। আরেকটা ব্যাপার হলো ম্যানেজমেন্ট তাদের কীভাবে সামলাচ্ছে সেটাও গুরুত্বপূর্ণ। ম্যানজেমেন্টকে খেলোয়াড়দের বন্ধু হতে হয়।
১৯৯২ সালে পাকিস্তানের বিশ্বকাপ জয়ের পথে আপনারও ভূমিকা ছিল। বাংলাদেশ এখনো বড় কোন ট্রফি জেতেনি। ট্রফি জিততে কোন ধরণের মানসিকতা দরকার?
আমির সোহেল: এটা একটা ভ্রমণ। আপনি যখন সর্বোচ্চ ধাপে খেলবেন, প্রথম চ্যালেঞ্জ হবে না হারা। টেস্টের বেলায় আপনি কিছু ম্যাচ হারবেন তারপর একটা ড্র করবেন। তারপর জেতার সুযোগ চলে আসবে। তারপর এটাকে অভ্যাসে পরিণত করে ছুটতে হবে। আমার মনে হয় ২০১২ সালে বাংলাদেশ খুব ভালো দল ছিল। বাংলাদেশ দল কয়েকজন খেলোয়াড়ের উপর প্রচণ্ড নির্ভর করে। বড় টুর্নামেন্ট জিততে হলে দল হিসেবে খেলাটা বেশি দরকার।
Comments