এখন বঙ্গবন্ধুর রক্তের ঋণ শোধ করার পালা: প্রধানমন্ত্রী

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। স্টার ফাইল ফটো

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, 'বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান নিজের রক্ত দিয়েই বাঙালি জাতির ভালবাসার ঋণ শোধ করেছিলেন। এখন তাঁর রক্তের ঋণ শোধ করার পালা। দেশের মানুষকে উন্নত, সমৃদ্ধশালী করতে পারলেই সেই রক্তের ঋণ শোধ হবে।'

আজ মঙ্গলবার বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের স্বদেশ প্রত্যাবর্তন দিবস উপলক্ষ্যে সংসদে আনা একটি সাধারণ প্রস্তাবের আলোচনায় অংশ নিয়ে তিনি একথা বলেন। সরকারি দলের সংসদ সদস্য মোস্তাফিজুর রহমান প্রস্তাবটি সংসদে আনেন। আলোচনা শেষে প্রস্তাবটি সর্বসম্মতিক্রমে গ্রহণ করা হয়।

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, 'বঙ্গবন্ধু চেয়েছিলেন জাতীয় উন্নয়ন সমৃদ্ধ দেশ। সেটা তাকে করতে দেওয়া হয়নি। তিনি নিজের জীবনে কিছু চাননি। জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ১০ জানুয়ারি সোহরওয়ার্দী উদ্যানে বলেছিলেন, রক্ত দিয়ে হলেও বাঙালি জাতির এই ভালোবাসার ঋণ শোধ করে যাবো।' তিনি রক্ত দিয়েই ঋণ শোধ করে গেছেন। এখন আমাদের পালা তার রক্তের ঋণ আমাদের শোধ করার। সেটা করতে পারবো কখন? দেশের প্রতিটি গৃহহীন গৃহ পাবে, অন্ন, বস্ত্র, চিকিৎসার ব্যবস্থা করে বাংলাদেশের মানুষকে যখন উন্নত, সমৃদ্ধশালী করতে পারবো, তখনই সেই রক্তের ঋণ আমরা শোধ দিতে পারবো।'

শেখ হাসিনা বলেন, 'বঙ্গবন্ধু এদেশের মানুষের মুক্তি চেয়েছিলেন। বঞ্চিত মানুষের ভাগ্য পরিবর্তনের জন্য আন্দোলন সংগ্রাম করেছিলেন। ধ্বংসস্তুপে দাঁড়িয়ে দেশকে গড়ে তুলেছিলেন। নির্বাচনী প্রক্রিয়ায় পরিবর্তন এনেছিলেন। সাধারণ স্কুল শিক্ষক জয়ী হয়েছিলেন। মানুষের ভোটের অধিকার মানুষের হাতে ফিরিয়ে দিয়েছিলেন। সংবিধান মোতাবেক ১৯৭৩ সালেই নির্বাচন দেন। বিপ্লব বা যুদ্ধের মাধ্যমে স্বাধীন হওয়ার পর এত অল্প সময়ের মধ্যে সাধারণ নির্বাচন দেওয়ার ইতিহাস বিশ্বের আর কোনো দেশে নেই।'

তিনি বলেন, 'বঙ্গবন্ধু দেশের প্রবৃদ্ধি ৯ ভাগের ওপরে তুলেছিলেন। জিয়া, এরশাদ, খালেদা জিয়া বাংলাদেশকে অর্থনৈতিকভাবে এগিয়ে নিতে পারেনি। আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় আসার পরে প্রবৃদ্ধি ৮ ভাগ পর্যন্ত পৌঁছেছিল। আওয়ামী লীগ যে কথা দেয়, সেটা রাখে। জাতির পিতা স্বাধীনতা দিবেন বলেছিলেন সেটা দিয়ে গেছেন। স্বল্পোন্নত দেশে রেখে গিয়েছিলেন। আওয়ামী লীগ সরকারে আসার পরে এই দেশের মানুষের কিছুটা হলেও অর্থনৈতিক সাশ্রয় এসেছে। মানুষ অন্তত দুইবেলা পেট ভরে খেতে পারছে।'

রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের কারণে নিষেধাজ্ঞা-পাল্টা নিষেধাজ্ঞা না থাকলে দেশের প্রবৃদ্ধি ৮ ভাগ থেকে আরও এগিয়ে নিয়ে যাওয়া যেত বলে জানান সরকার প্রধান। 

তিনি বলেন, 'যুদ্ধ ও অতিমারি কারোনার কারণে আমাদের খুব কঠিন অবস্থার মধ্যে দিয়ে যেতে হচ্ছে। যেখানে উন্নত দেশ নিজেদের অর্থনৈতিক মন্দা হিসাবে ঘোষণা দিয়েছে। আমরা সেখানে অর্থনৈতিক চাকা সচল রাখতে সক্ষম হচ্ছি।'

আওয়ামী লীগ যে ওয়াদা দিয়েছে সেটা পূরণ করেছে জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, '২০০৮, ২০১৪ ও ২০১৮ সালের নির্বাচনী ইশতেহার, প্রত্যোকটা কাজ আমরা কিন্তু বাস্তবায়ন করেছি। বাংলাদেশ উন্নয়নশীল দেশ ২০২৬ সালের মধ্যে এটা বাস্তবায়ন করে ৪১ সালের মধ্যে উন্নত, সমৃদ্ধ বাংলাদেশ আমরা গড়বো।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, 'বাংলাদেশ এগিয়ে যাচ্ছে। তিনি বলেন, জয় বাংলা বলেই আমরা এগিয়ে যাবো।'

অন্যদের মধ্যে সরকারি দলের সংসদ সদস্য আমির হোসেন আমু, মতিয়া চৌধুরী, শেখ ফজলুল করিম সেলিম, কামরুল ইসলাম, ওয়ার্কার্স পার্টির রাশেদ খান মেনন, জাসদের হাসানুল হক ইনু, জাতীয় পার্টির কাজী ফিরোজ রশীদ, আবু হোসেনসহ আরও অনেকে আলোচনায় অংশ নেন।

Comments

The Daily Star  | English
crimes against journalists

Ending impunity for crimes against journalists

Though the signals are mixed we still hope that the media in Bangladesh will see a new dawn.

16h ago