মোংলা বন্দর চট্টগ্রাম বন্দরের বিকল্প হয়ে উঠবে: নৌপরিবহন প্রতিমন্ত্রী

সোমবার মোংলা বন্দরের আপগ্রেডেশন প্রকল্প ব্যবস্থাপনা পরামর্শক সংক্রান্ত চুক্তিপত্র সই অনুষ্ঠানে নৌপরিবহন প্রতিমন্ত্রী খালিদ মাহমুদ চৌধুরী। ছবি: সংগৃহীত

মোংলা বন্দরের আপগ্রেডেশন কাজ সম্পন্ন হলে এটি চট্টগ্রাম বন্দরের সক্ষমতার কাছাকাছি চলে যাবে বলে নৌপরিবহন প্রতিমন্ত্রী খালিদ মাহমুদ চৌধুরী মন্তব্য করেছেন।

সোমবার রাজধানীর একটি হোটেলে মোংলা বন্দরের আপগ্রেডেশন প্রকল্প ব্যবস্থাপনা পরামর্শক সংক্রান্ত চুক্তিপত্র সই অনুষ্ঠানে বক্তব্য দেওয়ার সময় তিনি এ মন্তব্য করেন।

চুক্তিপত্রে সই করেন মোংলা বন্দরের চেয়ারম্যান রিয়ার অ্যাডমিরাল মোহাম্মদ মুসা এবং ইজিস ইন্ডিয়া কনসাল্টিং ইঞ্জিনিয়ার্স প্রাইভেট লিমিটেড গ্রুপের সিইও লরেন্ট জার্মেইন।

নৌপরিবহন মন্ত্রণালয়ের এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বাধীন সরকার বিভিন্ন পদক্ষেপ নেওয়ায় মোংলা বন্দরে বর্তমানে জাহাজ, কার্গো, কনটেইনার এবং গাড়ি হ্যান্ডলিং গড়ে ১৭ শতাংশ, ১৯ শতাংশ, ৮ শতাংশ এবং ১৩ শতাংশ বেড়েছে। সমীক্ষায় দেখা গেছে, ২০৪০ সালের শেষ নাগাদ মোংলা বন্দরে কার্গো, কনটেইনার এবং গাড়ি হ্যান্ডলিং যথাক্রমে ২, ১৫ ও ৩ গুণ বৃদ্ধি পাবে।

ক্রমবর্ধমান চাহিদা মোকাবিলায় মোংলা বন্দরের সক্ষমতা বৃদ্ধির জন্য 'আপগ্রেডেশন মোংলা বন্দর প্রকল্প' নেওয়া হয়েছে। প্রকল্পটি বাস্তবায়নে সম্ভাব্য ব্যয় ধরা হয়েছে ৬ হাজার ১৪ কোটি টাকা। এর মধ্যে বাংলাদেশ সরকারের অর্থ ১ হাজার ৫৫৫ কোটি এবং প্রকল্প সহায়তা ৪ হাজার ৪৫৯ টাকা। প্রকল্পের বাস্তবায়নকাল ২০২০ সালের জানুয়ারি থেকে ২০২৪ সালের জুলাই। 

আপগ্রেডেশন প্রকল্পে থাকবে কনটেইনার টার্মিনাল নির্মাণ, কনটেইনার হ্যান্ডলিং ইয়ার্ড নির্মাণ, কনটেইনার ডেলিভারি ইয়ার্ড নির্মাণ, নিরাপত্তা ব্যবস্থাসহ সংরক্ষিত এলাকা সম্প্রসারণ, সার্ভিস ভেসেল জেটি নির্মাণ, ৮টি জলযান সংগ্রহ, বন্দর আবাসিক কমপ্লেক্স এবং কমিউনিটি সুবিধা নির্মাণ, বন্দর ভবন এবং মেকানিক্যাল ওয়ার্কশপ সম্প্রসারণ, স্লিপওয়ে এবং যন্ত্রপাতিসহ মেরিন ওয়ার্কশপ কমপ্লেক্স নির্মাণ, দিগরাজে রেলক্রসিং ওভারপাস নির্মাণ, মোংলা বন্দরের বিদ্যমান সড়ক ৬ লেনে সম্প্রসারণ, বহুতল কার ইয়ার্ড নির্মাণ ইত্যাদি।

চুক্তিপত্র সই অনুষ্ঠানে জানানো হয়, প্রকল্পটি বাস্তবায়ন হলে মোংলা বন্দর বছরে ১ হাজার ৮০০টি জাহাজ, ১ কোটি ৫০ লাখ মেট্রিক টন কার্গো, ৪ লাখ টিইইউস কন্টেইনার, ১০ হাজার গাড়ি হ্যান্ডলিং করতে পারবে। এছাড়া মোংলা বন্দরের বার্ষিক আয় ১৫০ কোটি টাকা এবং কাস্টমস ও অন্যান্য সংস্থার আয় ৩ হাজার কোটি টাকা বাড়বে বলে আশা করা হচ্ছে।

এ সময় নৌপরিবহন প্রতিমন্ত্রী খালিদ মাহমুদ চৌধুরী বলেন, 'আওয়ামী লীগ সরকার ১৯৯৬ সালে স্তিমিত মোংলা বন্দর সচল করার পদক্ষেপ নেয়। বন্দরটি বর্তমানে লোকসান কাটিয়ে লাভের ধারায় ফিরে এসেছে। পশুর নদীর আউটারবারে ড্রেজিং করায় হারবাড়িয়া পর্যন্ত সাড়ে ৯ মিটার ড্রাফটের জাহাজ আসতে পারে। ইনারবারে ড্রেজিং কার্যক্রম চলছে যেন বন্দর জেটিতে সাড়ে ৯ মিটার ড্রাফটের জাহাজ আসতে পারে।' 

'মোংলা বন্দরের আপগ্রেডেশন কাজটি সম্পন্ন হলে এটি অনন্য উচ্চতায় চলে যাবে। চট্টগ্রাম বন্দরের সক্ষমতার কাছাকাছি চলে যাবে। চট্টগ্রাম বন্দরের বিকল্প হিসেবে গড়ে উঠবে। এর মাধ‍্যমে শুধু বাংলাদেশ নয়, প্রতিবেশী দেশগুলোও উপকৃত হবে,' যোগ করেন তিনি।

মোংলা বন্দরের চেয়ারম্যানের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে অন্যান্যের মধ্যে বক্তব্য রাখেন বাংলাদেশে নিযুক্ত ভারতের হাইকমিশনার প্রণয় ভার্মা।
 

Comments

The Daily Star  | English

Dhaka airport receives 2nd bomb threat

Operations at HSIA continue amid heightened security

2h ago