চীনে করোনায় নতুন করে ১০ লাখ মানুষের মৃত্যুর আশঙ্কা: গবেষণা

চীনে করোনায় নতুন করে মৃত্যুর আশঙ্কা
সাংহাইয়ে করোনা পরীক্ষাকেন্দ্রে এক স্বাস্থ্যকর্মী। ছবি: এএফপি

'শূন্য-করোনা' নীতি থেকে কোনো প্রস্তুতি ছাড়াই আচমকা সরে আসায় চীনে নতুন করে ১০ লাখ মানুষের মৃত্যু হতে পারে বলে এক গবেষণায় আশঙ্কা করা হয়েছে।

গতকাল সোমবার মার্কিন সংবাদমাধ্যম সিএনএন এ তথ্য জানিয়েছে।

প্রতিবেদনে বলা হয়, চীন সরকার গত ৩ বছর ধরে কঠোর লকডাউন, কোয়ারেন্টিন, গণ-পরীক্ষা ও ভাইরাস মোকাবিলায় কনটাক্ট ট্রেসিং মেনে চলেছে।

স্বাভাবিক জীবনযাত্রা ব্যাহত হওয়ার পাশাপাশি ব্যবসা-বাণিজ্য স্থবির হয়ে পড়ায় দেশজুড়ে বিক্ষোভ শুরু হলে গত মাসে এই ব্যয়বহুল ব্যবস্থা থেকে সরে আসে চীন।

কিন্তু, বিশেষজ্ঞরা বলছেন—'শূন্য-করোনা' নীতি থেকে আচমকা সরে এলেও চীনের করোনার বিস্তার মোকাবিলায় তেমন কোনো প্রস্তুতি নেই। তাদের মতে, চীনে প্রবীণদের ভ্যাকসিন দেওয়ার হার তুলনামূলক হারে কম।

এ ছাড়াও, মহাপ্রাচীরের দেশটির হাসপাতালগুলোয় নিবিড় পরিচর্যা ইউনিটের সংখ্যা ও ভাইরাস মোকাবিলায় প্রয়োজনীয় ওষুধের মজুদ তুলনামূলকভাবে কম।

হংকং বিশ্ববিদ্যালয়ের ৩ অধ্যাপকের মতে, এমন পরিস্থিতিতে চীনে করোনায় নতুন করে প্রতি ১০ লাখ মানুষের মধ্যে ৬৮৪ জনের মৃত্যু হতে পারে। সেই হিসাবে দেশটির ১৪০ কোটি মানুষের মধ্যে ৯৬ লাখ ৪ হাজার ৪০০ বা প্রায় ১০ লাখ মানুষের মৃত্যুরে আশঙ্কা আছে।

গবেষণার খসড়ায় বলা হয়েছে, আক্রান্তর সংখ্যা বেড়ে গেলে 'দেশজুড়ে স্বাস্থ্যসেবায় বাড়তি চাপ পড়তে পারে'।

এই গবেষণাটি আনুষ্ঠানিকভাবে এখনো প্রকাশ করা হয়নি উল্লেখ করে সংবাদ প্রতিবেদনে বলা হয়, এখন এর পর্যালোচনা চলছে।

চীনে করোনায় নতুন করে মৃত্যুর আশঙ্কা
চীনের ঝেংঝু শহরে গণ-পরীক্ষা। ছবি: রয়টার্স

গবেষণা অনুসারে, একসঙ্গে সব প্রদেশ থেকে করোনার বিধিনিষেধ তুলে নেওয়ায় হাসপাতালে রোগী ভর্তির সংখ্যা দেড় থেকে আড়াই গুণ বেড়ে যেতে পারে।

তবে চীন যদি দ্রুত বুস্টার ডোজ ও অ্যান্টি-ভাইরাল ওষুধের ব্যবস্থা করতে পারে তাহলে মৃত্যুর হার কমানো সম্ভব।

এতে আরও বলা হয়, ৮৫ শতাংশ মানুষকে টিকার চতুর্থ ডোজ ও ৬০ শতাংশ মানুষকে অ্যান্টি-ভাইরাল ওষুধ দেওয়া গেলে মৃতের সংখ্যা ২৬ শতাংশ থেকে ৩৫ শতাংশ পর্যন্ত কমানো যেতে পারে।

চীনের সেন্টার ফর ডিজিজ অ্যান্ড প্রিভেনশন ও হংকং সরকার এই গবেষণায় আর্থিকভাবে সহায়তা করেছে বলে প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে।

এতে আরও বলা হয়, গতকাল বেইজিংয়ে করোনায় ২ জনের মৃত্যুর কথা চীনের স্বাস্থ্য বিভাগ থেকে জানানো হয়েছে।

গত ৭ ডিসেম্বর চীনে করোনা বিধিনিষেধ শিথিল করার পর এই প্রথম মৃত্যুর কথা আনুষ্ঠানিকভাবে জানানো হলো।

তবে চীনের সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে বলা হয়েছে, গত কয়েক সপ্তাহ থেকে বেইজিংয়ের সৎকার প্রতিষ্ঠানগুলো তুলনামূলক হারে বেশি মরদেহ গ্রহণ করছে।

বেইজিংয়ের উপকণ্ঠে এক সৎকার প্রতিষ্ঠানের কর্মী সিএনএনকে বলেছেন, 'মরদেহ দাহের জন্য স্বজনদের অন্তত একদিন অপেক্ষা করতে হচ্ছে।'

Comments

The Daily Star  | English

Mindless mayhem

The clashes between students of three colleges continued yesterday, leaving over 100 injured in the capital’s Jatrabari.

5h ago