তেল বরাদ্দ কমায় ফরিদপুর জেনারেল হাসপাতালে দেড় মাস তালাবদ্ধ ২ অ্যাম্বুলেন্স

জ্বালানি তেল বাবদ বরাদ্দ কমে যাওয়ায় ফরিদপুর জেনারেল হাসপাতালের দুটি অ্যাম্বুলেন্স গত দেড় মাস ধরে তালাবদ্ধ অবস্থায় আছে। এতে হাসপাতালের রোগীদের দুর্ভোগে পড়তে হয়েছে। সবচেয়ে বেশি ভোগান্তিতে পড়ছেন দরিদ্র রোগীরা।
তেল বরাদ্দ কমায় ফরিদপুর জেনারেল হাসপাতালে দেড় মাস তালাবদ্ধ ২ অ্যাম্বুলেন্স
ফরিদপুর জেনারেল হাসপাতালের দুটি অ্যাম্বুলেন্স গত দেড় মাস ধরে তালাবদ্ধ অবস্থায় আছে। ছবি: স্টার

জ্বালানি তেল বাবদ বরাদ্দ কমে যাওয়ায় ফরিদপুর জেনারেল হাসপাতালের দুটি অ্যাম্বুলেন্স গত দেড় মাস ধরে তালাবদ্ধ অবস্থায় আছে। এতে হাসপাতালের রোগীদের দুর্ভোগে পড়তে হয়েছে। সবচেয়ে বেশি ভোগান্তিতে পড়ছেন দরিদ্র রোগীরা।

অ্যাম্বুলেন্স ব্যবহার বন্ধ থাকায় এই হাসপাতাল থেকে ফরিদপুর বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে যেতেও বেসরকারি অ্যাম্বুলেন্স ভাড়া করতে হচ্ছে রোগীদের। এর জন্য গুনতে হচ্ছে বাড়তি টাকা।

ফরিদপুর জেনারেল হাসপাতাল সূত্র জানায়, ১৯১৭ সালে ফরিদপুর শহরের প্রাণকেন্দ্র নিলটুলী মহল্লার মুজিব সড়কের পাশে স্থাপিত হয় এ হাসপাতালটি। বর্তমানে এ হাসপাতালের শয্যা সংখ্যা ১০০। হাসপাতালের অ্যাম্বুলেন্স সংখ্যা ২টি।

বৃহস্পতিবার ফরিদপুর জেনারেল হাসপাতালে গিয়ে দেখা যায়, হাসপাতাল ক্যাম্পাসের পশ্চিম পাশে তত্ত্বাবধায়কের কার্যালয়ের কাছে ৪টি গ্যারেজ আছে। এর মধ্যে ২টি গ্যারেজে হাসপাতালের অ্যাম্বুলেন্স কলাপসিবল গেটের ভেতরে তালাবদ্ধ অবস্থায় আছে।

ফরিদপুর শহরের আলীপুর মহল্লার বাসিন্দা শেখ মফিজুর রহমান দ্য ডেইলি স্টারকে জানান, গত ১৩ ডিসেম্বর মঙ্গলবার তার এক আত্মীয় অসুস্থ হলে তাকে জেনারেল হাসপাতালে নিয়ে যান তারা। হাসপাতালের কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে ফরিদপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে স্থানান্তর করেন।

তখন জেনারেল হাসপাতালের অ্যাম্বুলেন্স নিতে চাইলে তাকে জানানো হয় সচল থাকলেও, তেল সংকটে হাসপাতালের দুটি অ্যাম্বুলেন্স চলাচল বন্ধ আছে।

পরে ৫০০ টাকা খরচ করে একটি বেসরকারি অ্যাম্বুলেন্স ভাড়া করতে হয় তাদের।

শহরের পূর্ব খাবাসপুর মহল্লার বাসিন্দা জাহিদ হোসেন ডেইলি স্টারকে জানান, অসুস্থ বাবাকে ঢাকা নেওয়ার জন্য তিনি জেনারেল হাসপাতালের অ্যাম্বুলেন্সের জন্য যোগাযোগ করেছিলেন। কিন্তু অ্যাম্বুলেন্স না পেয়ে তাকে ৬ হাজার টাকা দিয়ে ঢাকা যেতে হয়েছে। সরকারি অ্যাম্বুলেন্স পাওয়া গেলে ৩ হাজার টাকা খরচ হতো।

অ্যাম্বুলেন্স দুটির চালক মোতাহার হোসেন (৫১) ও ইমরান হোসেন (৪০) অবশ্য প্রতিদিনই হাজিরা দেন হাসপাতালে।

জেনারেল হাসপাতালের আবাসিক মেডিকেল কর্মকর্তা গণেশ কুমার আগরওয়ালা ডেইলি স্টারকে বলেন, 'তেল বরাদ্দ না পাওয়ায় এ সমস্যা তৈরি হয়েছে। যে পেট্রল পাম্প থেকে হাসপাতালের অ্যাম্বুলেন্সের তেল নেওয়া হতো, সেখানে প্রায় সাড়ে ৩ লাখ টাকা বকেয়া পড়েছে।'

এ কারণে গত ১ নভেম্বর থেকে রোগীদের অ্যাম্বুলেন্স সেবা দেওয়া যাচ্ছে না বলে জানান তিনি।

হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক ছিদ্দীকুর রহমান ডেইলি স্টারকে বলেন, 'গত ২০২১-২২ অর্থবছরে তেল বরাদ্দ বাবদ দেওয়া হয় ৩০ লাখ টাকা। অথচ ২০২২-২৩ অর্থবছরে বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে মাত্র ৭২ হাজার টাকা। বরাদ্দ বাড়বে ভেবে আমরা নির্ধারিত পেট্রল পাম্প থেকে এ পর্যন্ত সাড়ে ৩ লাখ টাকার তেল বাকিতে ব্যবহার করেছি। কিন্তু এখন আর তেল বাকিতে পাওয়া যাচ্ছে না।'

তিনি আরও বলেন, 'এ সংকট সমাধানে আমরা স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের পরিচালককে (অর্থ) দুই দফা এবং স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ে একবারসহ মোট ৩ বার লিখিত চিঠি দেওয়া হয়েছে। কিন্তু কোনো সদুত্তর পাইনি।'

Comments

The Daily Star  | English
Bangladeshi-Americans eager to help build new Bangladesh

July uprising and some thoughts of Bangladeshi-Americans

NRBs gathered in New Jersey showed eagerness to assist in the journey of the new Bangladesh forward.

3h ago