চুরি যাওয়া গরুর জন্য বিলাপ থামছে না হাওরপাড়ের সুলেহার

কুলাউড়া থানায় অভিযোগ জানাতে আসা সুলেহা বেগম। ছবি: মিন্টু দেশোয়ারা/স্টার

পোষা হাঁসগুলো ভেসে গিয়েছিল গেল বন্যায়। পরে অভাব ঘোচাতে ঋণ নিয়ে ৪টি গরু কিনেছিলে হাকালুকি হাওরপাড়ের বাসিন্দা সুলেহা বেগম (৩৫)। সেই গরুগুলোও চুরি হয়ে গেছে তার। ঘুরে দাঁড়ানোর শেষ সম্বলটুকু হারিয়ে এখন পাগলপ্রায় দশা এই নারীর।

গত শুক্রবার মৌলভীবাজারের কুলাউড়া থানার সামনে দেখা মেলে সুলেহা বেগমের। কাঁদতে কাঁদতে তিনি বলছিলেন, 'আমার আর কিছুই রইলো না। আমি নিঃস্ব হয়ে গেলাম। একমাত্র সম্বল গরুগুলো চুরি হয়ে গেল। এখন আমার কীভাবে চলবে?'

কথা বলে জানা গেল, সুলেহা কুলাউড়ার মদনগৌরি গ্রামের কৃষক ইউনুস মিয়ার স্ত্রী। সম্প্রতি তার বসতঘর লাগোয়া গোয়ালঘর থেকে রাতের বেলায় ৪টি গরু চুরি হয়ে যায়।

সুলেহা বলেন, 'অনেকগুলো টাকা ঋণ করে গরুগুলো কিনেছিলাম। খুব ভালো স্বাস্থ্য হয়েছিল এগুলোর। মনে করেছিলাম এই মাসে একটি গরু বিক্রি করে আরও কিছু ঋণ নেবো। এখন আগের নেওয়া ঋণই বা কীভাবে শোধ করবো, কীভাবে সংসার চালাবো কিছুই বুঝতে পারছি না।'

এই মুহূর্তে সুলেহার আর কোনো সম্বল নেই জানিয়ে তিনি আরও বলেন, 'গরুগুলো বড় করার জন্য দিনরাত পরিশ্রম করেছি। ‍কিন্তু শেষরক্ষা হলো না। এখন কেবল ভাঙা ঘর ছাড়া আর কিছু নেই আমার।'

কুলাউড়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা আব্দুস সালেক জানান, সুলেহার গরু চুরির অভিযোগ তারা পেয়েছেন। গরুগুলো উদ্ধারে অভিযান অব্যাহত আছে তাদের।

এদিকে কুলউড়ায় গত কিছুদিন ধরে গরু ও মোটরসাইকেল চুরি বেড়ে গেছে বলে অভিযোগ করেছেন স্থানীয়রা।

এ বিষয়ে মৌলভীবাজার সাংবাদিক ফোরাম, প্রেসক্লাব কুলাউড়া ও কুলাউড়া সাংবাদিক সমিতি এক যৌথ বিবৃতিতে জানায়, কুলাউড়াসহ মৌলভীবাজারের বিভিন্ন জায়গায় মোটরসাইকেলসহ গরু ও বাসাবাড়িতে চুরি বেড়ে গেছে। প্রশাসন চোরচক্রের সদস্যদের চিহ্নিত করে আইনি ব্যবস্থা না নেওয়ায় চোরচক্রের দৌরাত্ম বেড়েই চলেছে।

বিবৃতিতে আরও বলা হয়, 'কোনো চুরির ঘটনা ঘটলে অভিযোগ জানানো হলে কিংবা মামলা দায়েরের পর চুরির সঙ্গে জড়িতদের চিহ্নিত করতে পুলিশের গড়িমসিতে ভুক্তভোগীরা নিরাশ হয়ে যান। এ জন্য চোরচক্র আরও বেপরোয়া হয়ে উঠেছে।'

Comments

The Daily Star  | English
fire at Secretariat

Secretariat fire sabotage or accident still not known: Fire service DG

Muhammad Jahed Kamal, director general of the Fire Service and Civil Defence, today said the cause of the devastating fire at Building No. 7 of the Bangladesh Secretariat still remains unknown

1h ago