ঢাবিতে গাড়িচাপায় নারীর মৃত্যু: নিরাপদ ক্যাম্পাসের দাবিতে শিক্ষার্থীদের বিক্ষোভ

নিরাপদ ক্যাম্পাসের দাবিতে ঢাবি শিক্ষার্থীদের মশাল মিছিল। ছবি: সংগৃহীত

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় (ঢাবি) এলাকায় বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক এক শিক্ষকের গাড়িচাপায় এক নারীর মৃত্যুর ঘটনায় প্রতিবাদ জানিয়েছে সাধারণ শিক্ষার্থী ও বিশ্ববিদ্যালয়ের কয়েকটি ছাত্র সংগঠন।

তারা ঢাবি ক্যাম্পাসে অতিরিক্ত যানবাহন চলাচল বন্ধ করে শিক্ষার্থীদের জন্য নিরাপদ ক্যাম্পাসের দাবি জানান।

আজ শুক্রবার রাতে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য ভবনের সামনে মশাল মিছিল করে ক্যাম্পাসে নিরাপত্তার দাবি জানিয়েছে বিশ্ববিদ্যালয়ের কয়েকটি হল সংসদের নির্বাচিত নেতৃবৃন্দ, ঢাবি ছাত্র ইউনিয়ন এবং ছাত্র অধিকার পরিষদ। এতে সাধারণ শিক্ষার্থীরাও যোগ দেন। 

এর আগে সন্ধ্যা সাড়ে ৭টার দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের রাজু ভাস্কর্যের সামনে থেকে বিক্ষোভ মিছিল করে ঢাবি শাখা ছাত্র অধিকার পরিষদ। রাজু ভাস্কর্য থেকে শুরু হয়ে বিক্ষোভ মিছিলটি ঢাবি ভিসির বাসভবনের সামনে গিয়ে অবস্থান নেয়।

এদিকে ৩ দাবিতে উপাচার্যের বাসভবনের সামনে অবস্থান কর্মসূচি পালন করে বিভিন্ন হল সংসদের নির্বাচিত নারী নেত্রীরা। 

দাবিগুলো হলো: ১. ঢাবির রাস্তা সিটি করপোরেশনের অধীনে হলে, ঢাবি কর্তৃপক্ষের আওতায় আনা। ২. শিগগির ঢাবি ক্যাম্পাসে অনিয়ন্ত্রিত যানবাহন নিয়ন্ত্রণ এবং অভ্যন্তরীণ যানবাহনের ক্ষেত্রে চলনসীমা নিয়ন্ত্রণ। ৩.ক্যাম্পাসের সব প্রবেশমুখে চেকপোস্ট স্থাপন।

শুক্রবার বিকেলে ঢাবি ক্যাম্পাসে বিশ্ববিদ্যালয়ের এক সাবেক শিক্ষকের প্রাইভেটকারের চাপায় গুরুতর আহত হন এক নারী। পরে বিকেল সাড়ে ৪টার দিকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তিনি মারা যান।

রাজু ভাস্কর্য থেকে শুরু হয়ে বিক্ষোভ মিছিল ভিসির বাসভবনের সামনে অবস্থান নেয়। ছবি: সংগৃহীত

এ ঘটনার প্রতিবাদে ছাত্র অধিকার পরিষদের বিক্ষোভ মিছিলের আগে সংক্ষিপ্ত সমাবেশে সংগঠনটির ঢাবি শাখার সভাপতি আখতার হোসেন বলেন, 'বিশ্ববিদ্যালয়ে গাড়ি চলাচলের জন্য সঠিক কোনো নিয়ম মানা হয় না। গাড়ি উল্টোপথে যাচ্ছে কি না, তা দেখার জন্য কোনো নিরাপত্তারক্ষী নেই। আজকের ঘটনায় ঢাবি প্রক্টর দায় এড়ানোর চেষ্টা করেছেন। বিশ্ববিদ্যালয়ের ভেতরে এই হত্যাকাণ্ডের দায় বিশ্ববিদ্যালয়কে অবশ্যই নিতে হবে।'
 
ঢাবি ছাত্র ইউনিয়নের সাধারণ সম্পাদক আদনান আজিজ চৌধুরী ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, 'এটা কোনো দুর্ঘটনা নয় বরং একজন সাবেক শিক্ষকের দ্বারা নারীকে হত্যা করা হয়েছে। এজন্য বিশ্ববিদ্যালয় থেকে আনুষ্ঠানিকভাবে জানাতে হবে যে আমরা এটার জন্য নিন্দিত ও লজ্জিত।'

তিনি আরও বলেন, 'বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসের ভেতরের রাস্তাগুলোতে স্পিড লিমিট লেখা থাকতে হবে। বিশ্ববিদ্যালয়ের ভেতরে ভারি যানবাহন চলাচল বন্ধ করতে হবে।'

সংক্ষিপ্ত সমাবেশে কয়েকটি দাবি জানায় ছাত্র অধিকার পরিষদ। সেগুলো হলো— বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে সব শিক্ষার্থী ও দর্শনার্থীর নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে হবে। ক্যাম্পাসের প্রতিটি প্রবেশপথে চেকপোস্ট বসাতে হবে। কোনো প্রাইভেট কার বা অতিরিক্ত যানবাহন বিশ্ববিদ্যালয় এলাকায় প্রবেশ করতে পারবে না। ক্যাম্পাসের গুরুত্বপূর্ণ মোড়গুলোতে নিরাপত্তাকর্মী নিয়োগ দিতে হবে। বিশ্ববিদ্যালয়ের ভেতরে এ ধরনের অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনা যেন আর না ঘটে, সে বিষয়ে সর্বাত্মক ব্যবস্থা নিতে হবে। 

Comments