‘আমরা সাধারণ কৃষক, কাগজপত্রের ঝামেলা বুঝি না’

কারাগার থেকে বের হয়ে পরিবারের কাছে ফিরেছেন ঋণের দায়ে গ্রেপ্তার কৃষকরা
কারাগার থেকে মুক্ত হওয়ার পর রজব আলি, মাহতাবসহ ভারইমারি গ্রামের ১২ কৃষক। ছবি: সংগৃহীত

'আমরা খুব সাধারণ কৃষক। জমিতে কীভাবে উৎপাদন করতে হয়, তা জানলেও কীভাবে নিজেকে বাঁচাতে কাগজপত্রের কাজ সারতে হয়, তা বুঝি না। তাই এমন হয়রানি হতে হয়েছে।'

ঋণের দায়ে গ্রেপ্তারের ২ দিন পর জামিন পেয়ে পরিবারের কাছে ফিরে এ কথা বললেন পাবনার ভারইমারি গ্রামের কৃষক রজব আলি।

রোববার বিকেলে আদালতের জামিননামা জেলগেটে পৌঁছানোর পর ওই গ্রাম থেকে গ্রেপ্তার ১২ কৃষক জেল থেকে ছাড়া পান।

রজব দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, 'জেল থেকে মুক্ত আকাশে বের হয়ে নিজের পরিবারের কাছে ফিরতে পেরে আনন্দিত বোধ করছি। জেলের ২ দিন অনেক দীর্ঘ ছিল।'

রজবের স্ত্রী বুলিয়া খাতুন ডেইলি স্টারকে বলেন, 'আমার স্বামীকে গ্রেপ্তারের পর কীভাবে তাকে মুক্ত করব, তা নিয়ে হতাশায় ছিলাম। আমরা সাধারণ দরিদ্র কৃষক পরিবারের মানুষ। আইন-আদালতের অত জটিলতা আমরা বুঝি না।'

স্বামীকে ফিরে পেয়ে তিনি আদালতের প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন এবং গণমাধ্যমকে ধন্যবাদ জানান।

গ্রেপ্তার আরেক কৃষক মাহাতাব ও তার বাবা গ্রেপ্তার হয়েছিলেন। কারাগার থেকে বাবা-ছেলে একসঙ্গে ঘরে ফিরতে পেরে দুজনেই আনন্দিত।

মাহাতাব দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, 'ঋণ নিলেও কাগজপত্রের সব কাজ না বোঝার কারণেই আজকে দুর্ভোগ পোহাতে হয়েছে।'

বিকেলে পাবনার জেলগেট থেকে ছাড়া পাওয়ার সময় ১২ কৃষকের পরিবার ও এলাকাবাসী তাদের ফুল দিয়ে বরণ করেন।

মামলার অপর ২৫ জন কৃষক স্বেচ্ছায় আদালতে হাজির হয়ে, জামিন আবেদন করলে আদালত ৩৭ জন কৃষককেই জামিন দেন।

ঈশ্বরদী উপজেলার ছলিমপুর ইউনিয়নের ভারইমারি গ্রামের ১২ জন কৃষককে ঋণ খেলাপির মামলায় গ্রেপ্তার করে শুক্রবার জেলহাজতে পাঠায় পুলিশ। তারা বাংলাদেশ সমবায় ব্যাংক নামের একটি আর্থিক প্রতিষ্ঠান থেকে ২০১৬ সালে ৩০-৪০ হাজার টাকা করে ঋণ নিয়েছিলেন। 

তার সবাই ভারইমারি উত্তরপাড়া সবজি চাষি সমবায় সমিতির সদস্য। এই সমিতির ৪০ জন কৃষক মোট ১৬ লাখ টাকা ঋণ নিয়েছিলেন।

ঋণ পরিশোধ না করায় ৩৭ জন কৃষকের কাছে সুদাসলে প্রায় ১৩ লাখ টাকা পাওনা হয়। ঋণ আদায়ে প্রতিষ্ঠানটি ২০২১ সালে ৩৭ জন কৃষকের নামে মামলা করে। 

পাবনার সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালত ১৫ নভেম্বর কৃষকের বিরুদ্ধে পরোয়ানা জারি করলে পুলিশ ১২ জনকে গ্রেপ্তার করে জেলহাজতে পাঠায়।

Comments

The Daily Star  | English

Cyber protection ordinance: Draft fails to shake off ghosts of the past

The newly approved draft Cyber Protection Ordinance retains many of the clauses of its predecessors that drew flak from across the world for stifling freedom of expression.

11h ago