আনোয়ারায় উপশহর গড়ার দুয়ার খুলে দিচ্ছে বঙ্গবন্ধু টানেল

বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান টানেল। ছবি: স্টার ফাইল ফটো

কর্ণফুলী নদীর তলদেশে নির্মিত বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান টানেল কেবল বন্দরনগরীর সঙ্গে দক্ষিণ চট্টগ্রামের সংযোগ স্থাপন করবে না, একইসঙ্গে তা আনোয়ারা উপজেলায় উপশহর গড়ে তোলার দুয়ারও খুলে দেবে।

নগর পরিকল্পনাবিদরা বলছেন, একটি বড় শহরের পাশে সব ধরনের নাগরিক সুযোগ সুবিধা নিয়ে উপশহর গড়ে উঠে। একটি উপশহর গড়ে উঠার প্রধান অন্তরায় যোগাযোগ ব্যবস্থা। বঙ্গবন্ধু টানেল যেহেতু যোগাযোগ ব্যবস্থার উন্নয়ন ঘটাবে, সেহেতু আনোয়ারাকে উপশহর হিসেবে গড়ে তোলা আর কঠিন হবে না।

এ বিষয়ে পরিকল্পিত চট্টগ্রাম ফোরামের ভাইস প্রেসিডেন্ট ও নগর পরিকল্পনাবিদ সুভাষ চন্দ্র বড়ুয়া দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, 'যোগাযোগ ব্যবস্থা উন্নত থাকলে অন্যান্য সুযোগ-সুবিধাও অনায়াসে গড়ে উঠবে। টানেল সেই দুয়ার খুলে দিচ্ছে।'

সংশিষ্টদের অভিমন, চীনের সাংহাই নগরীর মতো চট্টগ্রামকে 'ওয়ান সিটি টু টাউন' হিসেবে গড়ে তোলার জন্যই মূলত টানেল নির্মিত হচ্ছে।

২০২০ সালের ৯ সেপ্টেম্বর কর্ণফুলী নদীর তলদেশ দিয়ে নির্মাণাধীন বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান টানেলের নির্মাণকাজের অগ্রগতি পর্যালোচনা সভায় আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের বলেছিলেন, 'কর্ণফুলী টানেলের কাজ শেষ হলে চট্টগ্রামের দৃশ্য বদলে যাবে। এ টানেলের নির্মাণ শেষে চীনের সাংহাই নগরীর মতো চট্টগ্রাম হবে 'ওয়ান সিটি টু টাউন'। কাজ শেষ হলে নদীর ওপারে গড়ে উঠবে আরেক চট্টগ্রাম।'

চট্টগ্রামের উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের (সিডিএ) ১৯৯৫ সালের মাস্টারপ্ল্যানে আনোয়ারাকে 'গ্রোথ সেন্টার' হিসেবে উল্লেখ করা হয়েছে।

নগর পরিকল্পনাবিদদের ভাষ্য, শহরতলীতে যেসব 'গ্রোথ সেন্টার' আছে সেগুলোতে সব ধরনের নাগরিক সুযোগ সুবিধার ব্যবস্থা করা গেলে তা উপশহর হিসেবে ঘোষণা করা যায়। এছাড়া চট্টগ্রাম শহরের উপর জনসংখ্যার চাপ দিন দিন বাড়ছে। তাই এই নগর বর্ধিত করাও দরকার।

সিডিএর মাস্টারপ্ল্যান প্রণয়ন কমিটির সদস্য সুভাষ চন্দ্র বড়ুয়া বলেন, 'একজন নাগরিকের মৌলিক সব সুযোগ-সুবিধা থাকতে হবে একটি উপশহরে। আনোয়ারাকে উপশহর ঘোষণা করার পর সেখানকার নাগরিকরা যদি সেবা নিতে চট্টগ্রাম শহরে আসেন তাহলে সেটি উপশহর হবে না। তাই পরিকল্পিতভাবে উপশহর গড়ে তুলতে হবে।'

দেশের প্রথম এই টানেলের সংযোগ পথের এক প্রান্ত শিল্প জোন হিসেবে পরিচিত দক্ষিণ চট্টগ্রামের প্রবেশ পথ আনোয়ারায়।

এই উপজেলার বিভিন্ন এলাকা ঘুরে দেখা গেছে, বঙ্গবন্ধু কর্ণফুলী টানেল নির্মাণের ফলে পাল্টে যাচ্ছে আনোয়ারা, কর্ণফুলী ও পুরো দক্ষিণ চট্টগ্রামের চিত্র।

বর্তমানে সিইউএফএল, কাফকো, ডিএপি ফার্টিলাইজার কোম্পানি, কোরিয়ান ইপিজেড, চায়না ইকোনমিক জোন ও পারকি সৈকত রয়েছে আনোয়ারায়।

আনোয়ারার বাসিন্দা ও জনপ্রতিনিধিরাও বলছেন, এই টানেল আনোয়ারার আর্থসামাজিক উন্নয়নের ক্ষেত্রে বড় ভূমিকা রাখবে।

আনোয়ারার বৈরাগ ইউনিয়নের বাসিন্দা নুরুল আমিন ডেইলি স্টারকে বলেন, 'টানেল ঘিরে ইতোমধ্যে আমাদের এলাকায় শিল্প প্রতিষ্ঠানগুলো জমি কেনা শুরু করেছে। জমির দাম আগের তুলনায় অনেক বেড়ে গেছে।'

আনোয়ারা উপজেলা চেয়ারম্যান তৌহিদুল হক চৌধুরী বলেন, 'অচিরেই আনোয়ারা কেবল উপশহর নয়, একটি আন্তর্জাতিক বিজনেস হাবে পরিণত হবে।'

Comments

The Daily Star  | English

Remittance-rich Sylhet ranks poorest in new index

Long seen as the “London of Bangladesh” for its foreign earnings and opulent villas, Sylhet has been dealt a sobering blow. The country’s first Multidimensional Poverty Index (MPI) has revealed that the division is, in fact, the poorest in Bangladesh when measured by access to education, healthc

5h ago