মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত জঙ্গিরা বাইরে যোগাযোগ করে কীভাবে, তদন্তের দাবি দীপনের স্ত্রীর

জাগৃতি প্রকাশনীর স্বত্বাধিকারী ফয়সল আরেফিন দীপন। ছবি: সংগৃহীত

প্রকাশক ফয়সাল আরেফিন দীপন হত্যা মামলায় মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত ২ আসামিকে ঢাকার আদালত চত্বর থেকে ছিনতাইয়ের ঘটনায় উদ্বেগ জানিয়েছে দীপন স্মৃতি সংসদ। এ ছাড়া জঙ্গিবাহিনীর সদস্যদের সঙ্গে কারাবন্দি আসামিদের সুপরিকল্পিত যোগাযোগ কীভাবে ঘটে সে বিষয়টিও তদন্তের দাবি করা হয়েছে। 

আজ মঙ্গলবার গণমাধ্যমে পাঠানো এক বিবৃতিতে দীপন স্মৃতি সংসদের সদস্য সচিব ও দীপনের স্ত্রী ডা. রাজিয়া রহমান জলি এই উদ্বেগ প্রকাশ করে।

বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, গত ২০ নভেম্বর রোববার দুপুরে পুরনো ঢাকার চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট (সিএমএম) আদালতের প্রধান ফটকের সামনে এক পুলিশ কনস্টাবলের ওপর অতর্কিত হামলা চালিয়ে প্রকাশক দীপন হত্যায় মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত ২ জঙ্গিকে ছিনিয়ে নেওয়ার অস্বাভাবিক ঘটনায় আমরা স্তম্ভিত, বিস্মিত ও ক্ষুব্ধ।

আদালতের মতো জনগুরুত্বপূর্ণ জায়গায় কোনোপ্রকার আগ্নেয়াস্ত্র ছাড়া শুধু পিপার স্প্রে ব্যবহার করে শহরের সবচেয়ে ব্যস্ততম যানজটপূর্ণ এলাকা থেকে ফাঁসির দণ্ড পাওয়া আসামিদের ছিনিয়ে নেওয়ার অস্বাভাবিক ঘটনা রাষ্ট্র ও সরকারের নিরাপত্তা ব্যবস্থাকে প্রশ্নবিদ্ধ করেছে। আদালত প্রাঙ্গণের নিরাপত্তায় অব্যবস্থাপনা এবং দায়িত্বরত পুলিশ সদস্যদের চরম অবহেলা, অসতর্কতা বা সহযোগিতায় প্রশিক্ষিত জঙ্গিগোষ্ঠির নিখুঁত পরিকল্পনা সহজতরভাবে বাস্তবায়ন হওয়ায় দীপন স্মৃতি সংসদের পক্ষ থেকে আমরা গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করছি। জঙ্গিবাহিনীর সদস্যদের সঙ্গে কারাবন্দি আসামিদের সুপরিকল্পিত যোগাযোগ কীভাবে ঘটে সে বিষয়টিও তদন্তের দাবি রাখে।

২০১৭ সালে উচ্চ আদালতের রায় অনুযায়ী, আসামিকে ডাণ্ডাবেড়ি পরিয়ে আদালতে উপস্থাপন নিষিদ্ধ ঘোষণা করা হয়। তাই আসামি পরিবহনের জন্য যথাযথ নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে সাধারণ ১ জন আসামির জন্য ৩ জন ও জঙ্গিদের ক্ষেত্রে ৪ জন পুলিশ রাখার বিধান রয়েছে। ২০ নভেম্বর দীপন এবং অভিজিৎ হত্যায় মৃত্যুদণ্ড পাওয়া ১২ আসামিকে অন্য একটি মামলায় আদালতে হাজির করা হয়। হাজিরা শেষে ৪ জন আসামিকে ১৬ জনের পরিবর্তে মাত্র ১ জন পুলিশ কনস্টেবল দিয়ে গারদে নিয়ে আসার সময় ফাঁসির দণ্ডপ্রাপ্ত দুর্ধর্ষ ২ আসামি ছিনতাই করা হয় বলে প্রত্যক্ষদর্শীর বরাতে জানা যায়। এ ছাড়া দণ্ডপ্রাপ্ত আসামিকে আদালতে হাজির না করার নির্দেশনা আছে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী ও আইনমন্ত্রীর।

দেশে আইনের শাসন বহাল রাখার জন্য দুষ্টের দমন ও শিষ্টের লালনের নীতি বাস্তবায়নের ব্যাপারে রাষ্ট্র ও সরকারের বিভিন্ন বিভাগের আরও বেশি সতর্ক ও আন্তরিক হওয়া জরুরি। শহরের সব সড়ক ও গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনা সিসিটিভির আওতায় থাকার পরও তথ্য-প্রযুক্তির এই যুগে ৪৮ ঘণ্টার মধ্যেও আসামিদের উদ্ধার করতে না পারা দুঃখজনক।

বিবৃতিতে আরও বলা হয়েছে, পালিয়ে যাওয়া জঙ্গিদের দ্রুততর সময়ের মধ্যে ধরতে এবং তাদের সহযোগীদের চিহ্নিত করে আইনের আওতায় আনতে সরকারের বিভিন্ন বাহিনীর আন্তরিক তৎপরতার জোরদারের দাবি জানাই। গুরুত্বপূর্ণ এই দুটি মামলার বিচারকাজ কেন এতদিনেও চূড়ান্ত হয়নি এবং দণ্ড কার্যকর করা হয়নি সে বিষয়েও দীপনের বাবা অধ্যাপক আবুল কাশেম ফজলুল হক, দীপন স্মৃতি সংসদের সভাপতি অধ্যাপক আবুল বারকাত ক্ষোভ প্রকাশ করছে।

 

Comments

The Daily Star  | English

Public admin reforms: Cluster system may be proposed for ministries

The Public Administration Reform Commission is likely to recommend reducing the number of ministries and divisions to 30 from 55 to improve coordination and slash the government’s operational cost.

7h ago