জঙ্গি ছিনতাইয়ে সরাসরি জড়িত ছিলেন সোহেলের স্ত্রী শিখা

ছবি: সংগৃহীত

ঢাকার আদালত চত্বর থেকে দুই জঙ্গি ছিনতাইয়ের পরিকল্পনায় সরাসরি জড়িত ছিলেন পলাতক জঙ্গি আবু সিদ্দিক সোহেলের স্ত্রী ফাতিমা তাসনিম শিখা।

আজ শনিবার ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) অতিরিক্ত কমিশনার ও কাউন্টার টেররিজম অ্যান্ড ট্রান্সন্যাশনাল ক্রাইম (সিটিটিসি) ইউনিটের প্রধান আসাদুজ্জামান এক সংবাদ সম্মেলনে এসব কথা জানান।

তিনি বলেন, 'নিষিদ্ধ জঙ্গি সংগঠন আনসার আল ইসলামের দুই সদস্যকে পুলিশ হেফাজত থেকে ছিনিয়ে নেওয়ার ৬ মাস আগে শিখা কারাগারে তার স্বামী আবু সিদ্দিক সোহেলের সঙ্গে দেখা করেন এবং এই পরিকল্পনার কথা জানান।'

গতকাল রাতে নারায়ণগঞ্জের সাইনবোর্ড এলাকা থেকে শিখাকে এক অভিযানে আটক করেছে সিটিটিসির একটি দল। অভিযানে তাকে আশ্রয় দেওয়া আরেক নারী সহযোগীকেও আটক করা হয়েছে।

সিটিটিসি প্রধান জানান, পলাতক দুই জঙ্গি- সোহেল ও মইনুল হাসান শামীম দেশের ভেতরেই কোথাও লুকিয়ে আছে।

প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে শিখার কাছ থেকে পাওয়া তথ্য অনুযায়ী, যে বাড়ি থেকে শিখাকে গ্রেপ্তার করা হয়েছিল আদালত চত্বর থেকে ছিনিয়ে নেওয়ার পর সোহেল সেখানে গিয়েছিলেন।

২০১৫ সালে প্রকাশক ফয়সাল আরেফিন দীপনকে হত্যার দায়ে সোহেল ও শামীম দুজনের মৃত্যুদণ্ড হয়।

দুই আসামির পালানো গোয়েন্দাদের জন্য ব্যর্থতা কি না, জানতে চাইলে সিটিটিসি প্রধান বলেন, 'পুলিশের পক্ষে সবকিছু জানা সম্ভব নয়।

'জঙ্গিরা খুব গোপনে এটা করেছিল। জেলে স্বামী-স্ত্রীর দেখা হলে তারা ইশারা-ইঙ্গিত দিয়ে পরিকল্পনার বিষয়ে আলোচনা করেছিল। আমরা যারা তাদের ওপর নজর রাখি তাদের মনোযোগ এড়িয়ে তারা এটা করতে পেরেছিল।'

গত ২০ নভেম্বর ঢাকার চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতের প্রাঙ্গণে শিখা উপস্থিত ছিলেন এবং দুই জঙ্গিকে পুলিশ হেফাজত থেকে ছিনিয়ে নেওয়ার পর তিনি তাদেরকে একটি আনসার আল ইসলামের ক্যাম্পে নিয়ে যান।

সিটিটিসি প্রধান বলেন, 'জঙ্গিরা দুটি পৃথক মোটরসাইকেলে পালিয়ে যায়। শিখা এবং আনসার আল ইসলামের সামরিক শাখার প্রধান আয়মান পুরো ঘটনাটি তদারকি করেন। প্রায় ১০ থেকে ১৩ জন এই ছিনতাইয়ে অংশ নেন।'

জঙ্গিদের ছিনতাইয়ের পরিকল্পনা নিষিদ্ধ সংগঠনটির শীর্ষ পর্যায় থেকে এসেছে বলে জানান তিনি।

পরিকল্পনা বাস্তবায়নের জন্য, আনসার আল-ইসলামের সদস্যরা ভুয়া এনআইডি ব্যবহার করে ঢাকা ও আশপাশের জেলায় বেশ কয়েকটি বাড়ি ভাড়া নিয়েছিলেন।

শিখা ২০১৪ সালে মিলিটারি ইনস্টিটিউট অব সায়েন্স অ্যান্ড টেকনোলজি থেকে প্রকৌশলে স্নাতক সম্পন্ন করেছেন। আয়মান ও তিনি এ পরিকল্পনার জন্য আনসার আল-ইসলাম সদস্যদের সঙ্গে নিয়মিত বৈঠক করেছেন।

সিটিটিসি প্রধান আরও বলেন, 'আমরা অন্যদের নাম পেয়েছি যারা পরিকল্পনার অংশ ছিল। তবে তদন্তের স্বার্থে আমরা তাদের নাম প্রকাশ করছি না।'

শিখা তার ভাই মোজ্জাম্মেল হোসেন ওরফে সাইমনের মাধ্যমে আনসার আল ইসলামের আদর্শের সঙ্গে পরিচিত হয়। পরে ভাইয়ের মাধ্যমে তার সোহেলের সঙ্গে পরিচয় ও বিয়ে হয়। বিয়ের পর তিনি নিষিদ্ধ সংগঠনটির সক্রিয় সদস্য হয়ে ওঠেন বলে সিটিটিসি জানায়।

Comments

The Daily Star  | English

7 colleges to continue operating under UGC until new university formed

Prof AKM Elias, principal of Dhaka College, to be appointed as the administrator

1h ago