বেলাবো উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ছাত্রলীগের হামলা-ভাঙচুর, মামলা নেয়নি পুলিশ

নরসিংদীর বেলাবো উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ছাত্রলীগের নেতাকর্মীদের হামলা ও ভাঙচুরের ঘটনায় হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের লিখিত অভিযোগটি ১ দিন পার হয়ে গেলেও মামলা হিসেবে নেয়নি পুলিশ।
বেলাবো উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ছাত্রলীগের হামলা-ভাঙচুর, মামলা নেয়নি পুলিশ
বেলাবো উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স। ছবি: সংগৃহীত

নরসিংদীর বেলাবো উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ছাত্রলীগের নেতাকর্মীদের হামলা ও ভাঙচুরের ঘটনায় হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের লিখিত অভিযোগটি ১ দিন পার হয়ে গেলেও মামলা হিসেবে নেয়নি পুলিশ।

গতকাল বুধবার বেলা ১১টার দিকে বেলাবো উপজেলা ছাত্রলীগের সভাপতি সারোয়ার হোসেন ও সাধারণ সম্পাদক শাহরিয়ার তৌফিকের নেতৃত্বে অর্ধশতাধিক কর্মী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে হামলা ও ভাঙচুর চালায়।

ঘটনার পরপরই এর প্রতিবাদে হাসপাতালের সামনে একটি মানববন্ধন করে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ। প্রতিবাদে গতকাল দিনভর হাসপাতালটিতে চিকিৎসাসংক্রান্ত সব সেবা কার্যক্রম বন্ধ করে দেওয়া হয়।

হাসপাতালের স্বাস্থ্য বিভাগের কর্মকর্তারা বলছেন, গত ১৬ অক্টোবর বেলাবো স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে খাদ্য ও পথ্য সরবরাহসংক্রান্ত দরপত্র আহ্বান করা হয়। এতে অংশ নেন ছাত্রলীগের সভাপতি সারোয়ার হোসেনসহ একাধিক ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠান। এসব দরপত্র বর্তমানে মূল্যায়ন কমিটিতে যাচাই-বাছাই প্রক্রিয়ায় রয়েছে। দরপত্র অন্য কেউ পেয়ে যাচ্ছেন এমন খবর পেয়ে গতকাল হাসপাতালে হামলা-ভাঙচুর চালায় ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা।

কর্মকর্তারা জানান, গতকাল বেলা পৌনে ১১টার দিকে হঠাৎ ২ তরুণ হাসপাতালে ঢুকে প্রবেশমুখের সিসিটিভি ক্যামেরার তার কেটে দেন। এর মধ্যেই আরও কয়েকজন এসে আরও কয়েকটি সিসিটিভি ক্যামেরার তার কেটে ফেলেন। কিছু বুঝে ওঠার আগেই ৪০-৫০ জন ছাত্রলীগের নেতাকর্মী হাসপাতালে আসেন। তারা হাসপাতালের বিভিন্ন জায়গায় ভাঙচুর চালায়।

খবর পেয়ে পুলিশ ও প্রশাসনের সদস্যরা হাসপাতালে এসে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনেন।

অভিযোগের বিষয়ে জানতে চাইলে জেলা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক শাহ জালাল আহমেদ শাওন ডেইলি স্টারকে বলেন, 'আমরা বিষয়টি তদন্ত করছি। ছাত্রলীগের কোনো নেতাকর্মীর সংশ্লিষ্টতা পেলে আমরা তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেব।'

এ ঘটনায় সিসিটিভি ক্যামেরার ফুটেজ দেখে নাম-পরিচয় নিশ্চিত হয়ে ৫ জনের নাম উল্লেখ করে ও অজ্ঞাতনামা আরও ৪০ জনকে আসামি করে গতকাল বিকেলে থানায় লিখিত অভিযোগ দিয়েছে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ।

বেলাবো উপজেলা স্বাস্থ্য কর্মকর্তা নূর আসাদ-উজ-জামান বলেন, 'আজ বৃহস্পতিবার রাত পর্যন্ত লিখিত অভিযোগটি মামলা হিসেবে নেওয়া হয়নি।'

অভ্যন্তরীণ সূত্রে জানা গেছে, হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের সঙ্গে বিষয়টি সমাধানের চেষ্টা করেছেন ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা। কিন্তু হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ এতে সায় না দেওয়ায় বিষয়টি স্থানীয় সংসদ সদস্য ও শিল্পমন্ত্রী নূরুল মজিদ মাহমুদ হুমায়ুনকে জানানো হয়েছে। তিনি আগামীকাল শুক্রবার দুই পক্ষকে নিয়ে বসার কথা রয়েছে।

নরসিংদীর সিভিল সার্জন মো. নূরুল ইসলাম ডেইলি স্টারকে বলেন, 'ছাত্রলীগের হামলা-ভাঙচুরের ঘটনায় আমাদের লিখিত অভিযোগটি এখনো পুলিশ মামলা হিসেবে নেয়নি। কেন নেওয়া হয় নি, তা পুলিশ আমাদের জানাচ্ছে না।'

এ বিষয়ে জানতে নরসিংদীর অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মো. আল আমিন মিয়া ও বেলাবো থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) তানভীর আহম্মেদের মোবাইল ফোনে একাধিকবার যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও তারা কেউ ফোন ধরেননি।

Comments

The Daily Star  | English

Ex-president Badruddoza Chowdhury passes away

He breathed his last at 3:15am today while undergoing treatment at the Uttara Women’s Medical College

1h ago