বৃক্ষ নিধনের প্রতিবাদে জাবিতে প্রকল্প অফিস ঘেরাওয়ের ডাক

কেন্দ্রীয় মসজিদের পাশের টারজান পয়েন্টে আরও প্রায় ১০০ গাছ কাটা হয়েছে। ছবি: শেখ তাজুল ইসলাম তাজ/স্টার

মাস্টারপ্ল্যান প্রণয়ন না করে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে (জাবি) যত্রতত্র ভবন নির্মাণ করে যে অপরিকল্পিত উন্নয়ন করা হচ্ছে, তা স্থগিতের দাবিতে আগামী মঙ্গলবার পরিকল্পনা ও উন্নয়ন কার্যালয় ঘেরাওয়ের ডাক দিয়েছে প্রগতিশীল ছাত্র সংগঠনগুলো।

ছাত্র ইউনিয়ন জাবি সংসদের সাধারণ সম্পাদক অমর্ত্য রায় দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, 'আমরা বারবার বলার পরও কেন্দ্রীয় মসজিদের পাশের টারজান পয়েন্টে আরও প্রায় ১০০ গাছ কাটা হয়েছে। মেয়েদের খেলার মাঠ নির্মাণের জন্য এসব গাছ কাটা হচ্ছে বলে জেনেছি।'

তিনি বলেন, 'আমরা আজ ঘটনাস্থলে গিয়ে কাজ বন্ধ রাখতে বলেছি। মাস্টারপ্ল্যান না করে কোনো কাজে হাত দিলে আমরা বৃহত্তর আন্দোলনের দিকে যাবো। আগামী মঙ্গলবার ঘেরাও করা হবে প্রকল্প অফিস।'

'দেশের এমন আর্থিক সংকটে শুধুমাত্র টাকা খরচ করার জন্য বড় বড় বিল্ডিং তোলা অযৌক্তিক ও অমানবিক। আমরা বারবার বলেছি, পূর্ণাঙ্গ মহাপরিকল্পনা করে তারপর কাজ শুরু করেন। যেটা দরকার সেটা করেন। দেশের এমন দুর্দিনে অপচয় করবেন না,' তিনি যোগ করেন।

ছবি: শেখ তাজুল ইসলাম তাজ/স্টার

আজ রোববার খেলার মাঠ নির্মাণের জন্য নির্ধারিত ওই এলাকায় গিয়ে দেখা যায়, কেটে রাখা কিছু গাছ পড়ে আছে। শ্রমিকরা পড়ে থাকা গাছগুলো থেকে ডালপালা কাটছেন। নানা ধরনের পাখি কিচিরমিচির করছে।

জানা যায়, গত শুক্রবার সকাল থেকে গাছ কাটা শুরু হয়। পুরনো গাছগুলো কেটে ফেলা হয়েছে। ওই এলাকায় কাঁঠালসহ অন্যান্য প্রজাতির অন্তত ১৫০টি গাছ রয়েছে। খেলার মাঠ নির্মাণের জন্য প্রায় সব গাছ কাটা পড়বে।

বিশ্ববিদ্যালয়ের উন্নয়নকাজের জন্য ২০১৮ সালে ১ হাজার ৪৪৫ কোটি ৩৬ লাখ টাকার প্রকল্প অনুমোদন দেয় জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটি (একনেক)। প্রকল্পের প্রথম ধাপে শিক্ষার্থীদের জন্য ৬টি আবাসিক হল নির্মাণের কাজ প্রায় শেষ। দ্বিতীয় ধাপে আরও ১৪টি স্থাপনার নির্মাণকাজের উদ্বোধন করা হয়েছে চলতি বছরের ৮ জুন। এই ১৪টি স্থাপনার মধ্যে মেয়েদের খেলার মাঠ একটি।

গাছ কাটার বিষয়ে জানতে চাইলে বিশ্ববিদ্যালয়ের অধিকতর উন্নয়ন প্রকল্পের ভারপ্রাপ্ত পরিচালক নাছির উদ্দিনের মুঠোফোনে একাধিকবার যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও তিনি কল রিসিভ করেননি। হোয়াটসঅ্যাপে যোগাযোগের চেষ্টা করেও তাকে পাওয়া যায়নি।

বিশ্ববিদ্যালয়ের এস্টেট কার্যালয়ের ডেপুটি রেজিস্ট্রার আব্দুর রহমান ডেইলি স্টারকে বলেন, 'বিশ্ববিদ্যালয়ের অধিকতর উন্নয়ন প্রকল্পের আওতায় ওই স্থানে মেয়েদের খেলার মাঠ নির্মাণ করা হবে। সেজন্য প্রশাসনের অনুমোদন সাপেক্ষে কার্যাদেশপ্রাপ্ত ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান গাছ কেটে প্রশাসনের সঙ্গে যোগাযোগ করবে।'

Comments