চলে গেলেন ভারতের ‘ইস্পাত মানব’ জেজে ইরানি
ভারতের 'ইস্পাত মানব' হিসেবে পরিচিত টাটা স্টিল লিমিটেডের সাবেক ব্যবস্থাপনা পরিচালক জামশেদ জে ইরানি (৮৬) মারা গেছেন।
আজ মঙ্গলবার ভারতের সংবাদমাধ্যম এনডিটিভির প্রতিবেদনে বলা হয়, ইরানি গতকাল সোমবার রাতে মারা গেছেন।
টাটা স্টিলের বিবৃতিতে বলা হয়েছে, 'চলে গেলেন ভারতের ইস্পাত মানব। গভীর দুঃখের সঙ্গে টাটা স্টিল পদ্মভূষণ ড. জামশেদ জে ইরানির মৃত্যুসংবাদ জানাচ্ছে।'
এতে আরও বলা হয়, জামশেদপুরের টাটা হাসপাতালে গত রাত ১০টায় তিনি শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন।
৪৩ বছর টাটার সঙ্গে কাজ করার পর ২০১১ সালের জুনে ইরানি প্রতিষ্ঠানটির বোর্ড থেকে অবসর নেন।
জামশেদ ইরানি ১৯৩৬ সালের ২ জুন ভারতের নাগপুরে জন্মগ্রহণ করেন। তিনি নাগপুরের বিজ্ঞান কলেজ থেকে ১৯৫৬ সালে স্নাতক পাস করেন এবং ১৯৫৮ সালে নাগপুর বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ভূতত্ত্ব বিষয়ে স্নাতকোত্তর ডিগ্রি লাভ করেন।
পরবর্তীতে তিনি যুক্তরাজ্যের শেফিল্ড বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ধাতুবিদ্যায় স্নাতকোত্তর ও পিএইচডি অর্জন করেন।
কয়েক দিন যুক্তরাজ্যের লোহা ও ইস্পাত গবেষণা সংস্থায় কাজ করলেও ১৯৬৮ সালে তিনি ভারতে ফিরে এসে টাটা আয়রন অ্যান্ড স্টিল কোম্পানিতে (বর্তমানে টাটা স্টিল) গবেষণা ও উন্নয়ন পরিচালকের সহকারী হিসেবে যোগ দেন।
২০০১ সালে অবসর নেওয়ার আগে তিনি যুগ্ম-ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও ব্যবস্থাপনা পরিচালকসহ নানান পদে কাজ করেন।
১৯৯৬ সালে তিনি রয়াল একাডেমি অব ইঞ্জিনিয়ারিংয়ের আন্তর্জাতিক ফেলো হিসেবে নির্বাচিত হন। ১৯৯৭ সালে ভারত-যুক্তরাজ্য বাণিজ্য ও পারস্পরিক সহযোগিতায় অবদান রাখার জন্য রানি দ্বিতীয় এলিজাবেথ তাকে সম্মানসূচক নাইট উপাধিতে ভূষিত করেন।
ইস্পাত খাতে অবদানের জন্য ২০০৭ সালে ইরানি ভারতের সর্বোচ্চ বেসরকারি সম্মান 'পদ্মভূষণ' পান। ধাতুবিদ্যায় অবদানের জন্য ২০০৮ সালে তিনি ভারত সরকারের কাছ থেকে আজীবন সম্মাননা পান।
টাটা স্টিলের বিবৃতিতে আরও বলা হয়েছে, 'তাকে সবাই একজন ভবিষ্যতদ্রষ্টা নেতা হিসেবে মনে রাখবেন। তিনি ৯০ এর দশকের প্রথম দিকে ভারতের অর্থনৈতিক উদারীকরণ প্রক্রিয়ার সময় টাটা স্টিলকে সামনে থেকে নেতৃত্ব দিয়ে ইস্পাতশিল্পের প্রবৃদ্ধি ও উন্নয়নে প্রভূত অবদান রেখেছেন।'
মৃত্যুকালে ড. ইরানি স্ত্রী ডেইজি ও ৩ সন্তান জুবিন, নিলুফার ও তানাজসহ অসংখ্য গুণগ্রাহী রেখে গেছেন।
Comments