এবার কুড়িগ্রামে কালো ডিম দিলো পাতিহাঁস

ভোলার চরফ্যাশনে একটি দেশি প্রজাতির পাতিহাঁসের কালো ডিম পাড়ার ‘চাঞ্চল্যকর’ ঘটনার পর এবার কুড়িগ্রামের নাগেশ্বরী উপজেলায় একই ঘটনার পুনরাবৃত্তি হয়েছে।
কলেজশিক্ষার্থী ইব্রাহিম আলীর পালিত হাঁসের পাড়া কালো রঙের ডিম। ছবি: সংগৃহীত

ভোলার চরফ্যাশনে একটি দেশি প্রজাতির পাতিহাঁসের কালো ডিম পাড়ার 'চাঞ্চল্যকর' ঘটনার পর এবার কুড়িগ্রামের নাগেশ্বরী উপজেলায় একই ঘটনার পুনরাবৃত্তি হয়েছে।

উপজেলার ‍দুধকুমার নদীবেষ্টিত নারায়ণপুর ইউনিয়নের সীমান্তবর্তী গ্রাম পূর্ব নারায়ণপুরের প্রামাণিক পাড়ায় ইব্রাহিম আলী নামের এক কলেজ শিক্ষার্থীর পালিত হাঁস গত ২৯ ও ৩০ অক্টোবর ২টি কালো রঙের ডিম পেড়েছে।

যথারীতি এ ঘটনাটিও আগ্রহ তৈরি করেছে স্থানীয় ও আশপাশের এলাকার বাসিন্দাদের মনে। দেশি হাঁসের কালো ডিম দেখার জন্য তারা ভিড় করছেন ইব্রাহিমের বাড়িতে।

প্রামাণিক পাড়ার বাসিন্দা বাহার আলীর ছেলে ইব্রাহিম কুড়িগ্রাম মজিদা কলেজের অনার্স শেষ বর্ষের শিক্ষার্থী। দ্য ডেইলি স্টারকে তিনি জানান, গত ৬ মাস ধরে তিনি শ্বশুরবাড়ি থেকে উপহার পাওয়া ৫টি দেশি প্রজাতির পাতিহাঁস পালন করছেন। এগুলোর মধ্যে ১টি হাঁস গত ২৯ ও ৩০ অক্টোবর ২টি কালো ডিম দেয়।

ইব্রাহিম বলেন, 'আমি জীবনে প্রথমবারের মতো কোনো হাঁসকে কালো রঙের ডিম পাড়তে দেখলাম। সবাই যাতে ডিম ২টি দেখতে পায় সে জন্য ব্যবস্থাও রেখেছি।'

কালো রঙের ডিম পাড়া হাঁসটিসহ ইব্রাহিম। ছবি: সংগৃহীত

ইব্রাহিমের স্ত্রী রেহেনা বেগমের ভাষ্য, গত শনিবার সকালে হাঁসের খোপে কালো রঙের ডিম দেখে তিনি শুরুতে চমকে যান। পরে বাড়ির লোকজনকে ডেকে তাদের উপস্থিতিতে ডিমটি বের করেন। পরের দিন আরও একটি কালো ডিম পাওয়া যায়।

রেহেনা বেগম বলেন, 'পালিত হাঁসগুলোকে স্বাভাবিক খাবারই দেওয়া হয়। প্রাকৃতিকভাবেই এগুলো বড় হচ্ছে।'

কালো রঙের ডিম দেখে বিস্মিত অশীতিপর নেহাত উল্লাহ বলেন, 'আমি নিজেও হাঁসের কালো ডিম হাত দিয়ে নাড়াচাড়া করে দেখেছি।'

গ্রামের আরেক কলেজ শিক্ষার্থী সিরাজুল ইসলামের ভাষ্য, কিছুদিন আগে টেলিভিশনের হাঁসের কালো ডিম দেওয়ার খবর দেখেছেন তিনি। তবে নিজের গ্রামে ঘটে যাওয়া এই ঘটনা তাকে আরও অবাক করেছে।

কুড়িগ্রাম জেলা প্রাণীসম্পদ কর্মকর্তা ডা. ইউনুছ আলী ডেইলি স্টারকে জানান, নারায়নপুরে পাতিহাঁসের কালো ডিম দেওয়ার বিষয়টি তিনি শুনেছেন।

ডা. ইউনুছের বক্তব্য, 'হাঁসের জরায়ুতে কোন ইনফেকশন থাকার কারণে এমনটি হতে পারে। এছাড়া ডিম তৈরির জন্য যে পরিমাণ পিগমেন্টের (দেহ কোষের এক ধরণের রঞ্জক পদার্থ) দরকার তা যদি না থাকে, তাহলে এমন ঘটনা ঘটতে পারে। তাই এটা অলৌকিক কিছু নয়।'

এর আগে গত সেপ্টেম্বর মাসে ভোলার চরফ্যাশন উপজেলার জিন্নাগড় ইউনিয়নের ৪ নম্বর ওয়ার্ডের বাসিন্দা আবদুল মতিনের (৪৭) খামারে একটি পাতিহাঁস ২ দিনে ২টি কালো ডিম দেয়। এ নিয়ে উপজেলার মানুষের মধ্যে চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়।

এ ব্যাপারে বিজ্ঞানীদের ভাষ্য, প্রকৃতিতে নানা ধরনের ব্যতিক্রমী ঘটনা ঘটে। সাদা রঙের বাঘ, লালচে শিয়াল থেকে শুরু করে কালো রঙের পাতিহাঁসের ডিম পাড়া বৈজ্ঞানিক দৃষ্টিতে অস্বাভাবিক নয়। লাখো বা কোটি প্রাণীর মধ্যে দু–একটি ঘটনা এমন ব্যতিক্রমীভাবে ঘটেই থাকে।

Comments

The Daily Star  | English

Gaza still bleeding

Death toll nears 42,000; rallies worldwide calls for ceasefire

2h ago