সীমান্তের ঘটনায় দুঃখ প্রকাশ মিয়ানমারের সীমান্তরক্ষী বাহিনীর: বিজিবি

টেকনাফের শাহপরীর দ্বীপ বিওপিতে বিজিবি ও বিজিপির মধ্যে পতাকা বৈঠক। ছবি: সংগৃহীত

সম্প্রতি সীমান্ত এলাকায় ঘটে যাওয়া সব ঘটনার জন্য মিয়ানমারের সীমান্তরক্ষী বাহিনী (বিজিপি) আন্তরিক দুঃখ প্রকাশ করেছে বলে জানিয়েছে বাংলাদেশের সীমান্তরক্ষী বাহিনী (বিজিবি)।

আজ রোববার এক প্রেস ব্রিফিংয়ে টেকনাফ বিজিবি-২ ব্যাটালিয়নের অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট কর্নেল শেখ খালিদ মোহাম্মদ ইফতেখার এ তথ্য জানান।

এর আগে, সীমান্তে চলমান উত্তেজনার পরিপ্রেক্ষিতে টেকনাফের শাহপরীর দ্বীপ বিওপিতে বিজিবি ও বিজিপির মধ্যে পতাকা বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়।

পরে বিকেল ৪টায় টেকনাফ বিজিবি-২ ব্যাটালিয়ন সদর দপ্তরে পতাকা বৈঠক বিষয়ে বিজিবির রামু সেক্টরের কমান্ডার কর্নেল মোহাম্মদ আজিজুর রউফ ও ব্যাটালিয়ন অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট কর্নেল শেখ খালিদ মোহাম্মদ ইফতেখার ব্রিফ করেন।

এসময় কর্নেল আজিজুর রউফ বলেন, 'উভয় পক্ষের আলোচনার মাধ্যমে প্রথমে বৈঠকের সময় নির্ধারণ করা হয়েছিল ২৫ অক্টোবর। কিন্তু বৈরি আবহাওয়ার কারণে বৈঠকের সময় পরিবর্তন করে আজ নির্ধারণ করা হয়। আজকের বৈঠকটি অত্যন্ত শান্তি ও সৌহার্দ্যপূর্ণ পরিবেশে অনুষ্ঠিত হয়েছে।'

লেফটেন্যান্ট কর্নেল খালিদ মোহাম্মদ ইফতেখার বলেন, 'বৈঠকে বাংলাদেশ-মিয়ানমার সীমান্ত এলাকায় উদ্ভূত পরিস্থিতি ছাড়াও মিয়ানমার নাগরিকদের বাংলাদেশ অনুপ্রবেশ ও মাদক চোরাচালান রোধ সম্পর্কে ফলপ্রসূ আলোচনা হয়েছে। বন্ধুপ্রতীম ২ রাষ্ট্রের সীমান্তে নিরাপত্তা বাহিনীর মধ্যে পারস্পরিক যোগাযোগ, আস্থা ও নির্ভরতার পরিবেশ তৈরির জন্য ভবিষ্যতে প্রয়োজনীয় কার্যক্রম গ্রহণের ওপর গুরুত্বারোপ করা হয়।'

তিনি আরও বলেন, 'বাংলাদেশের সীমান্ত এলাকা দিয়ে মিয়ানমারের নিরাপত্তা বাহিনীর হেলিকপ্টার উড্ডয়ন, সীমান্ত এলাকায় ক্ষুদ্র ও ভারী অস্ত্রের ফায়ারিং, জনসম্পদের ক্ষয়ক্ষতির বিষয়ে বাংলাদেশের পক্ষ থেকে তীব্র প্রতিবাদ জানানো হয়। সীমান্তে শান্তিপূর্ণ অবস্থান বজায় রাখা, মিয়ানমারের আভ্যন্তরীণ কোন্দলের ফলে চলমান সংঘাতের জের ধরে বাংলাদেশের অভ্যন্তরে যেন কোনো গোলা পতিত না হয়, সেদিকে নজর দিতে বিজিপিকে আহ্বান জানানো হয়েছে।'

টেকনাফ বিজিবি-২ ব্যাটালিয়নের অধিনায়ক আরও বলেন, 'বৈঠকে সীমান্তবর্তী এলাকায় বসবাসকারী জনসাধারণের নিরাপত্তা ও শান্তিশৃঙ্খলা বজায় রেখে স্ব স্ব দায়িত্ব পালনে দৃঢ় প্রত্যয় ব্যক্ত করে উভয় পক্ষ।'

সকাল ১০টায় শুরু হওয়া কমান্ডার পর্যায়ের পতাকা বৈঠক দুপুর ২টা ৫০ মিনিটে শেষ হয়। বৈঠক শেষে বিকেল ৩টায় মিয়ানমারের ৭ সদস্যের প্রতিনিধি দল শাহপরীর দ্বীপের ট্রানজিট জেটি দিয়ে নাফ নদী পার হয়ে নিজ দেশে ফিরে যায়। সেসময় তারা গণমাধ্যম কর্মীদের সঙ্গে কোনো কথা বলেনি।

বৈঠকে মিয়ানমারের প্রতিনিধি দলের নেতৃত্ব দেন মংডুর ১ নম্বর বিজিপি ব্রাঞ্চের অধিনায়ক (কমান্ডিং অফিসার) লেফটেন্যান্ট কর্নেল কাও না ইয়ান শো ও বাংলাদেশের ৮ সদস্যের প্রতিনিধি দলের নেতৃত্ব দেন টেকনাফ বিজিবি-২ ব্যাটালিয়নের অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট কর্নেল শেখ খালিদ মোহাম্মদ ইফতেখার।

লেফটেন্যান্ট কর্নেল শেখ খালিদ মোহাম্মদ ইফতেখার গতকাল শনিবার দ্য ডেইলি স্টারকে বলেছিলেন, 'গত আড়াই মাস ধরে মিয়ানমারের অভ্যন্তরে চলমান গোলাগুলিকে কেন্দ্র করে সীমান্তে অস্থিতিশীল পরিস্থিতি বিরাজ করছে। এতে বাংলাদেশ সীমান্তের বাসিন্দারা আতঙ্কে আছেন। সীমান্তের এ পরিস্থিতি নিয়ে শুরু থেকেই ২ দেশের সীমান্তরক্ষী বাহিনীর মধ্যে নানা পর্যায়ে যোগাযোগ চলছিল। একাধিকবার বিজিপির কাছে চিঠি পাঠানো হয়েছে। এর পরিপ্রেক্ষিতেই পতাকা বৈঠকের আয়োজন।'

Comments

The Daily Star  | English
Bangladesh-India relations

The Indian media and Bangladesh-India relations

The bilateral relationship must be based on a "win-win" policy, rooted in mutual respect, non-hegemony, and the pursuit of shared prosperity and deeper understanding.

16h ago