কেনিয়ায় পুলিশের গুলিতে নিহত সাংবাদিক আরশাদের মরদেহ ইসলামাবাদে

পাকিস্তানের জনপ্রিয় সাংবাদিক আরশাদ শরীফ। ছবি: এপি
পাকিস্তানের জনপ্রিয় সাংবাদিক আরশাদ শরীফ। ছবি: এপি

'সেনাবিরোধী' সাংবাদিক হিসেবে সুপরিচিত ও কেনিয়ায় সম্প্রতি নিহত সাংবাদিক আরশাদ শরীফের মরদেহ পাকিস্তানে এসে পৌঁছিয়েছে।

আজ বুধবার সকালে তার মরদেহ দেশটির রাজধানী ইসলামাবাদে পৌঁছায়।

পাকিস্তানের গণমাধ্যম ডন এ তথ্য জানিয়েছে।

আরশাদের স্ত্রী জাভেরিয়া সিদ্দিক সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম টুইটারে বলেন, 'আমার আরশাদ ফিরে এসেছে, কিন্তু কফিনে করে।'

তিনি কফিনের ভিডিও ক্লিপ এতে যুক্ত করেন।

আরশাদের প্রতি শ্রদ্ধা জানাতে গণমাধ্যম কর্মী ও রাজনীতিকসহ অসংখ্য মানুষ ইসলামাবাদের বিমানবন্দরে জমায়েত হন।

জাভেরিয়ার অভিযোগ, ইসলামাবাদ বিমানবন্দরে তিনি 'ভয়াবহ অভিজ্ঞতার' মুখে পড়েছিলেন। তাকে প্রয়াত স্বামীর মরদেহ দেখতে দেওয়া হয়নি।

বলেন, 'বন্ধ ফটকে আমাকে অপেক্ষায় রেখেছে। সাংবাদিকরা এই নির্মমতা দেখেছেন। (এই) আমদানি করা সরকারকে ধিক।'

পাকিস্তানের তেহরিক-ই-ইনসাফ দলের নেতা ফাওয়াদ চৌধুরীও ইসলামাবাদ বিমানবন্দরের বিশৃঙ্খল পরিস্থিতি নিয়ে টুইট করেছেন।

তিনি বলেন, 'সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে দেখে মনে হয়েছে যেন তারা ভয়ে আছেন যে আরশাদ বুঝি প্রাণ ফিরে পাবেন। মানুষ ঠেকাতে অ্যাম্বুলেন্সটিকে বারবার এক জায়গা থেকে আরেক জায়গায় সরিয়ে নেওয়া হচ্ছে। তারা খুবই ভয় পেয়েছে।'

অভিযোগ মতে, গত রোববার রাতে কেনিয়ায় পুলিশ আরশাদকে গুলি করে হত্যা করে। আনুষ্ঠানিক বিবৃতিতে পুলিশ এই 'দুর্ভাগ্যজনক ঘটনায়' দুঃখ প্রকাশ করেছে। তারা জানিয়েছে, এ বিষয়ে তদন্ত চলছে।

প্রাথমিকভাবে, কেনিয়ার গণমাধ্যমে পুলিশের বরাত দিয়ে জানানো হয়, 'ভুল পরিচয়ের' কারণে আরশাদকে গুলি করা হয়।

কেনিয়ার জাতীয় পুলিশ সেবার বিবৃতিতে বলা হয়, ঘটনাটি মাগাদি অঞ্চলে কোয়েনিয়া খামার বা কামুকুরু মাররাম সড়কে ঘটে।

বিবৃতি অনুযায়ী, '৫০ বছর বয়সী পাকিস্তানি আরশাদ মোহাম্মদ শরীফ কেডিজি ২০০এম মোটরগাড়িতে থাকা অবস্থায় একজন পুলিশ কর্মকর্তা তাকে গুরুতরভাবে আহত করেন।'

ঘটনার সময় সেই ব্যক্তির সঙ্গে তার ভাই খুররাম আহমেদ ছিলেন।

পুলিশের দাবি, পানগানি পুলিশ একটি মোটরগাড়ি চুরির তথ্য পেয়েছিলেন। যে পুলিশ কর্মকর্তারা সেই গাড়ি ধাওয়া করছিলেন, তারা মাগাদি পুলিশকে আগাম সতর্কবাণী জানালে তারা সড়কে প্রতিবন্ধকতা তৈরি করেন।'

রয়টার্সের প্রতিবেদন মতে, সড়কে প্রতিবন্ধকতা দেখেও গাড়ি না থামালে পুলিশ গুলি করে। মোট ৯টি গুলি গাড়িতে এসে লাগে। এর একটি শরীফের মাথায় লাগে।

পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী শেহবাজ শরীফ গতকাল বলেছেন, 'আরশাদের মৃত্যুর ঘটনা তদন্তে বিচারিক কমিশন কাজ করবে।'

কেনিয়ায় একটি ভ্যানে আরশাদ শরীফের কফিন। ছবি: রয়টার্স
কেনিয়ায় একটি ভ্যানে আরশাদ শরীফের কফিন। ছবি: রয়টার্স

৩ সদস্যের তদন্ত কমিটির সদস্যরা হলেন কেন্দ্রীয় তদন্ত এজেন্সির (এফআইএ) পরিচালক আতহার ওয়াহিদ, গোয়েন্দা বিভাগের (আইবি) সহকারী মহাপরিচালক ওমর শহীদ হামিদ ও আন্তঃবাহিনী গোয়েন্দা সংস্থার (আইএসআই) কর্মকর্তা লেফটেন্যান্ট কর্নেল সাদ আহমেদ।

আরশাদ দীর্ঘদিন পাকিস্তানের গণমাধ্যম এআরওয়াই নিউজে সঞ্চালক হিসেবে কাজ করতেন। জীবনের ওপর ঝুঁকির কথা বলে তিনি সম্প্রতি দেশ ছাড়েন। তিনি কতদিন ধরে কেনিয়ায় ছিলেন, সে বিষয়ে এখনো সুনির্দিষ্ট তথ্য পাওয়া যায়নি।

 

Comments

The Daily Star  | English

Economic expectations: Did govt fall short?

When an interim government was sworn into office following the ouster of the Awami League regime just 100 days ago, there was an air of expectation that the Prof Muhammad Yunus-led administration would take steps to salvage a scam-ridden financial sector and rescue an ailing economy.

7h ago