তলিয়ে গেছে নিঝুম দ্বীপ, ৬ হাজার হরিণের জীবন বিপন্নের আশঙ্কা

ঘূর্ণিঝড় সিত্রাংয়ের প্রভাবে অতিমাত্রায় জোয়ার ও অবিরাম বর্ষণে পানিতে তলিয়ে গেছে নোয়াখালীর বিচ্ছিন্ন দ্বীপ উপজেলা হাতিয়ার নিঝুম দ্বীপ ইউনিয়ন। 

এতে নিঝুম দ্বীপ জাতীয় উদ্যানের ৬ হাজারের বেশি হরিণের জীবন বিপন্ন হওয়ার আশঙ্কা দেখা দিয়েছে। 

পানিবন্দী হয়ে পড়েছেন ইউনিয়নের হাজারো মানুষ। আশ্রয়কেন্দ্রে ১০ হাজারের বেশি মানুষ আশ্রয় নিয়েছে।

সোমবার রাতে হাতিয়ার উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. সেলিম মিয়া দ্য ডেইলি স্টারকে এসব তথ্য নিশ্চিত করেছেন।

ঘুর্নিঝড় সিত্রাংয়ের প্রভাবে রোববার বিকেল থেকেই হাতিয়া উপজেলা ও নিঝুম দ্বীপের ওপর দিয়ে থেমে থেমে দমকা হাওয়া ও অবিরাম বৃষ্টি হচ্ছে। 

নিঝুম দ্বীপ ইউনিয়নে বন্যা নিয়ন্ত্রণ বাধ না থাকায় সোমবার সন্ধ্যা ৬টা থেকে মেঘনা নদীতে অস্বাভাবিক জোয়ারের পানিতে নিঝুম দ্বীপ ও জাতীয় উদ্যান তলিয়ে যায়।

এতে জাতীয় উদ্যানের ৬ হাজারের বেশি হরিণ ও হরিণ শাবকের জীবন বিপন্ন হওয়ার আশঙ্কা দেখা দিয়েছে। 

ঘুর্ণিঝড় সিত্রাংয়ের কারণে হাতিয়া উপজেলায় স্থানীয় আবহাওয়া অধিদপ্তর ৭ নম্বর বিপদ সংকেত দেখাতে বলেছে।

হাতিয়া প্রথম শ্রেনীর আবহাওয়া পর্যবেক্ষণাগারের আবহাওয়া পর্যবেক্ষক আলাউদ্দিন সুমন দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, 'থেমে থেমে বাতাসের তীব্রতা বাড়ছে। অস্বাভাবিক জোয়ারের প্রভাবে পানি বেড়ে গেছে। বাতাসের গতিবেগ ৩২ নটিক্যাল মাইল।'

সোমবার মধ্যরাত থেকে মঙ্গলবার ভোরের দিকে হাতিয়া উপজেলায় ঘূর্ণিঝড় আঘাত হানতে পারে বলে জানান তিনি।

নিঝুম দ্বীপ ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মো. দিনাজ উদ্দিন ডেইলি স্টারকে বলেন, '৮১ বর্গকিলোমিটার আয়তনের নিঝুম দ্বীপে বেড়িবাঁধ নেই। এর ফলে যে কোনো প্রাকৃতিক দুর্যোগে নিঝুম দ্বীপের বাসিন্দারা সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হন।'

গত ২৪ ঘণ্টার টানা বর্ষণে বৃষ্টির পানি ও অতিমাত্রায় জোয়ারের পানিতে আমন ধান ও শাকসবজি এবং মানুষের বসত ঘর এবং ইউনিয়নের সবকয়টি রাস্তা পানির নিচে তলিয়ে গেছে বলে জানান তিনি।

তিনি বলেন, '১০ হাজারের বেশি মানুষ আশ্রয়কেন্দ্রে আশ্রয় নিয়েছেন। জাতীয় উদ্যানের ৬ হাজারের বেশি হরিণের জীবন সংটাপন্ন হয়ে পড়েছে।'

হাতিয়ার উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. সেলিম মিয়া দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, 'সন্ধ্যা ৭টার দিকে মেঘনা নদীতে তীব্র  জোয়ারের ও অবিরাম বৃষ্টির পানিতে নিঝুম দ্বীপ ইউনিয়ন ও রাস্তাঘাট পানির নিচে ডুবে গেছে।'

জানতে চাইলে উপকূলীয় বনবিভগ নোয়াখালীর বিভাগীয় বন কর্মকর্তা মো. ফরিদ মিয়া নিঝুম দ্বীপের রেঞ্জ অফিসারের বরাতে দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, 'সোমবার সন্ধ্যায় জলোচ্ছ্বাসে নিঝুম দ্বীপ ইউনিয়ন তলিয়ে গেছে।'

তবে জাতীয় উদ্যানের হরিণের কী অবস্থা তা বলতে পারেননি তিনি।

মঙ্গলবার সকালে এ বিষয়ে খোঁজ নেওয়া হবে বলে জানান তিনি।

 

Comments

The Daily Star  | English

Palak admits shutting down internet deliberately on Hasina's order

His testimony was recorded by the International Crime Tribunal's investigation agency following a questioning session held yesterday

1h ago