মূলধনী যন্ত্রপাতির এলসি কমায় রপ্তানিতে দীর্ঘমেয়াদী প্রভাবের আশঙ্কা বিশেষজ্ঞদের

চট্টগ্রাম বন্দর
চট্টগ্রাম বন্দর। ছবি: স্টার ফাইল ফটো

রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের কারণে আমদানি ও বৈশ্বিক মন্দা নিয়ে জোর সতর্কতার পর নতুন বিনিয়োগ ও ব্যবসা সম্প্রসারণে ধীরগতি দেখা যাচ্ছে।

ফলে, মূলধনী যন্ত্রপাতি আমদানির জন্য লেটার অব ক্রেডিট বা প্রত্যয়পত্র (এলসি) খোলার হার চলতি ২০২২-২০২৩ অর্থবছরের জুলাই থেকে আগস্টে ৬৫ শতাংশ কমেছে। এর কোনো স্বল্পমেয়াদী প্রভাব নেই, তবে দীর্ঘমেয়াদে এটি বাংলাদেশের রপ্তানি বাণিজ্যকে প্রভাবিত করবে বলে বিশেষজ্ঞরা জানিয়েছেন।

ব্যবসায়ীরা বলছেন, বর্তমান 'অস্থির' সময়ে নতুন করে বিনিয়োগ কেউ করছেন না। গ্যাস-বিদ্যুৎ সংকটের কারণে বিদ্যমান ব্যবসা টিকিয়ে রাখাও চ্যালেঞ্জিং হয়ে পড়েছে।

বাংলাদেশ ব্যাংকের তথ্য অনুযায়ী, গত জুলাই থেকে আগস্ট পর্যন্ত শিল্প যন্ত্রপাতি আমদানির জন্য ঋণ দাঁড়িয়েছে ৪০ কোটি মার্কিন ডলার, যা গত বছরের একই সময়ে ছিল ১১৫ কোটি মার্কিন ডলার। উৎপাদনের জন্য ঋণের এলসি প্রায় ৬৫ শতাংশ কমেছে।

তবে এই সময়ের মধ্যে পূর্বে খোলা ঋণ নিরাপত্তার নিষ্পত্তি প্রায় ৫৫ শতাংশ বেড়েছে।

গত অর্থবছরে (২০২২) মূলধনী যন্ত্রপাতি আমদানির জন্য এলসি খোলা হয়েছিল ৬৪৬ কোটি মার্কিন ডলারের, যা আগের অর্থবছর ২০২১ এর তুলনায় ১৫ শতাংশ বেশি এবং ঋণ নিষ্পত্তি ছিল ৫২৬ কোটি মার্কিন ডলারের, যা আগের বছরের তুলনায় ৪০ শতাংশ বেশি।

ব্যাংক কর্মকর্তারা বলছেন, এখন আমদানির ক্ষেত্রে ৩০ লাখ মার্কিন ডলারের বেশি এলসি খোলার জন্য ২৪ ঘণ্টা আগে বাংলাদেশ ব্যাংককে জানাতে হয়।

তারা উল্লেখ করেন, অনেক ক্ষেত্রে কেন্দ্রীয় ব্যাংক বড় এলসি খোলায় বাধা দেয়। আবার ডলারের ঘাটতির কারণে অনেক ব্যাংক বড় এলসি খোলা বন্ধ বা কমিয়ে দিয়েছে। এলসি খোলার ক্ষেত্রে এই প্রবিধানের প্রভাবের কারণে মূলধনী যন্ত্রপাতি আমদানিও হ্রাস পাচ্ছে।

সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগের (সিপিডি) গবেষণা পরিচালক খন্দকার গোলাম মোয়াজ্জেম ইউএনবিকে বলেন, গত দেড় বছরে দেশ মূলধনী যন্ত্রপাতি আমদানিতে উচ্চ প্রবৃদ্ধি দেখা গেছে।

তিনি আরও বলেন, এর প্রধান কারণ পোশাক রপ্তানি বৃদ্ধির কারণে অনেক উদ্যোক্তা তাদের উৎপাদন ক্ষমতা বাড়িয়েছেন। বর্তমানে রপ্তানিতে খুব বেশি প্রবৃদ্ধি নেই। সে কারণে ব্যবসার প্রসার কমছে।

মোয়াজ্জেম বলেন, 'এতে, অদূর ভবিষ্যতে কোনো সমস্যা হবে না। কিন্তু, উদ্বেগের বিষয় হচ্ছে, ভবিষ্যৎ বিনিয়োগ ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। এ ধারা অব্যাহত থাকলে দীর্ঘমেয়াদে শিল্প উৎপাদন, রপ্তানি ও কর্মসংস্থান বৃদ্ধি স্থবির হয়ে যেতে পারে।'

টেক্সটাইল মালিকদের সংগঠন বাংলাদেশ টেক্সটাইল মিল অ্যাসোসিয়েশনের (বিটিএমএ) সভাপতি মোহাম্মদ আলী বলেন, নতুন কয়েকটি মিল বর্তমান সংকটের আগেই মূলধনী যন্ত্রপাতি আমদানি ঋণ খুলেছিল।

তিনি জানান, যারা আগে এলসি খোলেননি তারা এখন এলসি খোলার আগ্রহ দেখাচ্ছেন না। এ কারণে নতুন সব কারখানা নির্ধারিত সময়ে উৎপাদনে আসতে পারবে না।

মোহাম্মদ আলী উল্লেখ করেন, টেক্সটাইল কারখানায় গ্যাস সরবরাহের অবস্থা আগের চেয়ে খারাপ হয়েছে এবং উৎপাদন ও মেশিন আমদানিতে প্রভাব পড়ছে।

Comments

The Daily Star  | English

BNP not in favour of banning any political party: Fakhrul

'Who are we to ban a political party? The people will decide,' says the BNP leader

44m ago