‘জনস্বার্থে’ অবসর: যা বললেন সাবেক তথ্য ও সম্প্রচার সচিব

মো. মকবুল হোসেন। ছবি: সংগৃহীত

তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রণালয়ের সচিব মো. মকবুল হোসেনকে 'জনস্বার্থে' অবসরে পাঠিয়েছে সরকার। এই অবসরের বিষয়ে আজ সোমবার গণমাধ্যমের সঙ্গে কথা বলেছেন তিনি।

কেন তাকে অবসরে পাঠানো হলো জানতে চাইলে আজ দুপুরে সচিবালয়ে তিনি গণমাধ্যমকে বলেন, 'আমি জানি না আমাকে কেন অবসরে পাঠানো হলো। মানুষকে ফাঁসি দিলেও তো একটা ট্রায়াল হয়। কিন্তু আমি জানি না কোন কারণে এই সিদ্ধান্ত।'

অভিযোগ রয়েছে, বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দলের (বিএনপি) সিনিয়র ভাইস চেয়ারম্যান তারেক রহমানের সঙ্গে লন্ডনে দেখা করায় তার বিরুদ্ধে এমন ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। এই অভিযোগ সম্পর্কে তিনি বলেন, 'আমরা লন্ডনে গিয়েছিলাম মার্চে, একটা টিম নিয়ে। আমাদের প্রেসের দায়িত্বে আছেন আশিকুন্নবি। তার কাছে জিজ্ঞাসা করলে পরিষ্কারভাবে বিষয়টি জানা যাবে।'

তিনি আরও বলেন, 'প্রবাদে আছে, হাতি যখন খাদে পরে, চামচিকাও লাথি মারে। আমি মার্চে লন্ডন গিয়েছিলাম। এই অভিযোগের বিষয়টি সত্য হলেও সেটা তো মার্চ মাসে হয়েছে। আজ তো অক্টোবর। এতদিন এই প্রশ্ন আসেনি কেন?'

'আমি তারেক রহমানকে কোনোদিন দেখেছি বলে মনে পড়ে না এবং তারেক রহমানকে দেখার ইচ্ছাও আমার নেই', যোগ করেন তিনি।

তার চাকরির মেয়াদে বিএনপি সরকারের আমলেও তারেক রহমানের সঙ্গে দেখা হয়নি? এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি জানান, সামনা-সামনি তাদের দেখা হয়নি। তিনি বলেন, 'তিনি তো মন্ত্রীও ছিলেন না, এমপিও ছিলেন না। টেলিভিশনে তাকে দেখেছি, সেটা তো স্বাভাবিক।'

অভিযোগ বিষয়ে তিনি আরও বলেন, 'আপনাদের তো জানার অনেক পথ আছে। এ ধরনের কোনো বিষয় যদি আপনাদের নলেজে আসে এবং সেটা যদি বস্তুনিষ্ঠ হয়, অবশ্যই তা পত্রিকায় প্রকাশ করবেন। আমি বাংলাদেশের যেখানেই থাকি আমাকে এই প্রশ্ন করবেন যে আপনি লন্ডনে তারেক রহমানের সঙ্গে দেখা করেছেন কি না, ওমক জায়গায় বিএনপির লোকের সঙ্গে বৈঠক করেছেন কি না বা আপনার সংযোগ বিএনপির সঙ্গে আছে।'

'শুধু আজ বা কাল নয়, কোনো সময় যদি এমন কোনো সংযোগ আমার সঙ্গে পান, আমাকে আসামির কাঠগড়ায় দাঁড় করাবেন', যোগ করেন তিনি।

নিজের কাজের সম্পর্কে তিনি বলেন, 'আপনারা তথ্য সংগ্রহ করেন, আমি কোনো দুর্নীতির সঙ্গে জড়িত ছিলাম কি না। দুর্নীতি ২ রকমের। একটা আর্থিক দুর্নীতি, আরেকটা ইন্টেলেকচুয়াল দুর্নীতি। আপনারা প্রতিদিন এখানে আসবেন। আমি ইন্টেলেকচুয়াল ও আর্থিকভাবে কতটা স্বচ্ছ ছিলাম, কতটা অস্বচ্ছ ছিলাম, তা জানতে পারবেন।'

গতকাল জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের এক প্রজ্ঞাপনে মো. মকবুল হোসেনকে অবসরে পাঠানোর বিষয়টি জানানো হয়েছে।

মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব কে এম আলী আজমের সই করা প্রজ্ঞাপনে বলা হয়, মো. মকবুল হোসেনকে সরকারি চাকরি আইন-২০১৮ এর ৪৫ ধারা অনুযায়ী জনস্বার্থে অবসর প্রদান করা হলো।

উল্লেখ্য, সরকারি চাকরি আইনের ৪৫ ধারায় বলা হয়েছে, কোনো সরকারি কর্মচারীর চাকরির মেয়াদ ২৫ বছর পূর্ণ হওয়ার পর যেকোনো সময় সরকার, জনস্বার্থে, প্রয়োজনীয় মনে করলে কোনোরূপ কারণ দর্শানো ছাড়াই তাকে চাকরি থেকে অবসর প্রদান করতে পারবে। তবে শর্ত থাকে যে, যেক্ষেত্রে রাষ্ট্রপতি নিয়োগকারী কর্তৃপক্ষ, সেই ক্ষেত্রে রাষ্ট্রপতির অনুমোদন গ্রহণ করতে হবে।

Comments

The Daily Star  | English

Daily Star’s photo exhibition ‘36 Days of July -- Saluting The Bravehearts’ begins

The event began with a one-minute silence to honour the students and people, who fought against fascism

6h ago