চিহ্নমেলা : বাংলা ভাষার সর্ববৃহৎ লিটলম্যাগ সম্মিলন

১৭ অক্টোবর রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে শুরু হতে যাওয়া দুই বাংলার ছোটকাগজের সম্মিলন চিহ্নমেলার ফটকছবি : প্রথম আলোর সৌজন্যে

রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় থেকে প্রকাশিত চিহ্ন বাংলা ভাষার একটি প্রতিনিধিত্বশীল সাহিত্যপত্রিকা। অধ্যাপক শহীদ ইকবালের সম্পাদনায় যা ২২ বছর ধরে নিয়মিত প্রকাশিত হচ্ছে। বছরে চিহ্নের ২টি সংখ্যা বের হয়। 'এসো লিখিয়ে সব, লেখায় লেখায় ভাঙি মগজের কারফিউ' শ্লোগানকে সামনে রেখে এর প্রথম সংখ্যা প্রকাশিত হয়েছিল ২০০০ সালের এপ্রিলে, ২০২২ সালের আগস্টে প্রকাশিত হয়েছে ৪৩ তম সংখ্যা। চিহ্নের শ্লোগান এখন 'চিত্তের প্রসারতা, মস্তিষ্কের মুক্তি'।

চিহ্ন সম্পাদনা ও প্রকাশ এক অর্থে গোষ্ঠীগত কাজ। এর রয়েছে এক দক্ষকর্মী বাহিনী, যারা চিহ্ন সম্পাদনায় সহায়তা করেন তো বটেই, সঙ্গে প্রতি রবিবার পত্রিকাকে কেন্দ্র করে বসে বুদ্ধিবৃত্তিক আড্ডা। প্রথম থেকে ১৩ সংখ্যা অব্দি চিহ্ন বেরিয়েছিল ছোটকাগজের মেজাজে, পরবর্তীতে তা আর অক্ষুণ্ণ থাকেনি। বরং, চলতি সাহিত্যের ধারক ও বাহক হওয়ার দিকেই লক্ষ্যটা এগিয়েছে। তবে ছোটকাগজের যে চেতনা, তার দায় থেকেও চিহ্ন সরে আসেনি। সেই দায় থেকেই ২০০৯ সালে জন্ম চিহ্নপরিপূরক ছোটকাগজ ম্লানের। যার ৫০ টি সংখ্যা প্রকাশিত হয়েছে। এক সময় ম্লান থেমে যাবার পর- চিহ্নেরই প্রযত্নে  ২০২২ সালের মার্চে জন্ম হয়েছে ছোটকাগজ লোরকার। যার ইতোমধ্যে তিনটি সংখ্যা প্রকাশিত হয়েছে।

২০১১ সালের ছোটকাগজের সম্মিলন চিহ্নমেলার মঞ্চে বাঁ থেকে কবি আসাদ চৌধুরী, সম্পাদক শহীদ ইকবাল ও কথাশিল্পী আনোয়ারা সৈয়দ হক। ছবি: সংগৃহীত

এই চর্চার ধারাবাহিকতায় চিহ্নের যুগবর্ষযাপন উপলক্ষে ২০১১ সালের জানুয়ারিতে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের শহীদুল্লাহ্ কলাভবন চত্বরে অর্ধশতাধিক ছোটকাগজ নিয়ে বসে প্রথম চিহ্নমেলা। শতাধিক সম্পাদকের বাইরেও, যেখানে ছিলেন হাসান আজিজুল হক, আসাদ চৌধুরী, সনৎকুমার সাহা, খোন্দকার সিরাজুল হক, জুলফিকার মতিন, মামুন হুসাইনের মতো সাহিত্যক ও চিন্তকেরা। এই মেলা থেকে মুসলমানমঙ্গল উপন্যাসের জন্য সৃজনশীল শাখায় চিহ্নপুরস্কার লাভ করেন জাকির তালুকদার।

এই বদ্বীপের কবিতাকৃতি গ্রন্থের জন্য মননশীল শাখায় এ পুরস্কার পান মামুন মুস্তাফা। সঙ্গে চিহ্ন লিটলম্যাগ-সম্মাননা জানানো হয় সাতটি ছোটকাগজকে : সমুজ্জ্বল সুবাতাস, আরণ্যক, পড়শি, ধূলিচিত্র, ভাস্কর, দোআঁশ ও শব্দ। এই পুরস্কার ও সম্মাননা নির্বাচনে চিহ্ন সর্বদা আস্থা জানিয়ে এসেছে প্রান্তিকতার প্রতি। প্রত্যাখ্যান করতে চেয়েছে ঢাকাকে ঘিরে সাহিত্যের কেন্দ্রিকতাকে। যুগবর্ষযাপনের দুবছর বাদে- ২০১৩ সালে বসে 'চিহ্নমেলা এপারবাঙলা ও ওপারবাঙলা'। এবারে সীমানাটা বাংলাদেশ পেরিয়ে ভারতেও গিয়ে পৌঁছে। মেলায় বাংলাদেশ ও ভারত মিলিয়ে প্রায় শতাধিক পত্রিকা অংশগ্রহণ করে। অতিথি হয়ে আসেন সৈয়দ শামসুল হক ও আনোয়ারা সৈয়দ হকসহ একাধিক গুণী সাহিত্যিক। ২দিন ব্যাপী জমে ওঠে মেলা। আড্ডা চিন্তা বিনিময়ের সঙ্গে পাল্লা দিয়ে চলতে থাকে সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানও। মেলা থেকে চিহ্নপুরস্কার লাভ করেন : মননশীল শাখায় ইউছুফ মহম্মদ ও সৃজনশীল শাখায় মাসুদুল হক।

শতাধিক পত্রিকা ও তিন শতাধিক লেখক, সম্পাদকের সম্মিলনে 'চিহ্নমেলা বিশ্ববাঙলা' শিরোনামে তৃতীয় আসর বসে ২০১৬ সালের মার্চে। ঐতিহাসিক ৭ মার্চ বিবেচনায় সাতটি শান্তির পায়রা এবং চিহ্ন'র ১৬ বছরপূর্তি উপলক্ষে ১৬টি বেলুন উড়িয়ে মেলার উদ্বোধন করেন অধ্যাপক আনিসুজ্জামান ও সাহিত্যিক সেলিনা হোসেন। বইয়ের পাতা কিংবা পত্রিকায় যাদের লেখা পড়ে অভিভূত হন পাঠক, সেই লেখকদের সান্নিধ্য আপ্লুত হন মেলায় অভ্যাগতরা। সঙ্গে চলে কবিকণ্ঠে কবিতা পাঠ, বাউল-ভাওয়াইয়া গানের আসর ও আড্ডা।

মেলার উদ্বোধন শেষে- 'বাঙালির চোখে শ্রেষ্ঠ বাঙালি' শীর্ষক আলোচনায় রাজা রামমোহন রায়ের সতীদাহ প্রথা বিলোপ, ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগরের বিধবা বিবাহ প্রচলন, মুহম্মদ শহীদুল্লাহর ভাষা সাহিত্যে অবদান, রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের সাহিত্য ও সংস্কৃতির অবদান, শেখ মুজিবুর রহমানের দেশ স্বাধীনের ভূমিকাসহ সকলের সমাজ সংস্কারের বিভিন্ন চিত্র তুলে ধরেন আলোচকরা। দুই দিনব্যাপী এই আয়োজনের প্রথম দিনের কর্মসূচিতে 'বাঙালির চোখে শ্রেষ্ঠ বাঙালি' শীর্ষক 'আড্ডা' ছাড়াও ছিল নানা আয়োজন। এই মেলায় সৃজনশীল শাখায় চিহ্নপুরস্কার অর্জন করেন- মোস্তাক আহমেদ দীন ও মননশীল শাখায় শরীফ আতিক-উজ-জামান। বাংলাদেশের পাঁচটি ও ভারতের তিনটি পত্রিকার হাতে তুলে দেয়া হয় চিহ্ন লিটলম্যাগ-সম্মাননা।

চিহ্নমেলা : বাংলা ভাষার সর্ববৃহৎ লিটলম্যাগ সম্মিলন। ২০১৯ সালের র‍্যালি। ছবি: সংগৃহীত

২০১৯ সালের মার্চে চতুর্থবারের এ আয়োজনের শিরোনাম ছিল 'চিহ্নমেলা চিরায়ত-বাঙলা'। মেলা শুরুহয় উদ্বোধন ও র্যালি দিলে। বর্ণাঢ্য এ র্যালিতে অংশ নেন প্রখ্যাত লেখক দেবেশ রায়, কথাসাহিত্যিক হাসান আজিজুল হকসহ দেশের নানা পর্যায়ের লেখক ও সাহিত্যিকবৃন্দ। মুখোশ পরে, প্ল্যাকার্ড-ফেস্টুন প্রদর্শন করে পাঁচশতাধিক সাহিত্যপাগল মানুষের এ বর্ণাঢ্যশোভাযাত্রা ছিল অনন্য ও চিত্তাকর্ষক। প্রাসঙ্গিকভাবে এ উৎসবমুখরতায় যুক্ত হয় বিশ্ববিদ্যালয়ের হাজারো তরুণ শিক্ষার্থী ও শিক্ষকবৃন্দ। এরপর বেলা এগারোটায় শুরু হয় হাসান আজিজুল হকের সভাপতিত্বে প্রভাত চৌধুরীর রবীন্দ্র-তর্পণ বিষয়ক আলোচনা শেষে আরম্ভ হয়- 'ডিজিটাল বাংলাদেশে বাঙালি জীবনের সাহিত্য' বিষয়ক গোলটেবিল আড্ডা। এতে অংশ নেন : সনৎকুমার সাহা, মহীবুল আজিজ, কাজল কাপালিক, শোয়েব শাহরিয়ার, প্রবালকুমার বসু বসু, হাসান আজিজুল হক, প্রভাত চৌধুরী প্রমুখ। মনোজ্ঞ এ আড্ডায় মুখরিত হন তার্কিকবৃন্দ।

কলকাতার বর্ণালী রায়ের সঞ্চালনায় 'ছোট প্রকাশনা : সম্ভাবনা ও সমস্যা' শীর্ষক আলোচনানুষ্ঠান চলে। কথা বলেন : রাখাল রাহা, মনিরুল মনির, মনজুর রহমান, অলোক বিশ্বাস, কাজী মামুন হায়দার। বিকেলে অধ্যাপক তারেক রেজার সঞ্চালনায় 'কবির প্যাথোস ও আজকের কবিতা' শিরোনামে এক দারুণ আড্ডা জমে ওঠে। কবিতা ও প্যাথোস, করণকৌশল, সাম্প্রতিক কবিতার তাৎপর্যপূর্ণ এ আলোচনায় বাংলা কবিতার স্বরূপ ও স্বার্থ চিহ্নিত করে। বিকেল পাঁচটায় ছিল কথাশিল্পী দেবেশ রায়ের বক্তৃতা।বিষয় : 'সাহিত্যপাঠের সমাজতত্ত্ব ও ছোট পত্র-পত্রিকা'। 'বিবর্তনের আলোয় সংগ্রহের ইতিহাস-১' শীর্ষক একটি বিশেষ প্রদর্শনী বিকেল সাড়ে পাঁচটায় অনুষ্ঠিত হয়। গোপাল বিশ্বাস ও উজ্জ্বল সরদার ছাড়াও চন্দ্রনাথ চট্টোপাধ্যায় এতে অংশ নেন। এটি চিহ্নমেলার সবচেয়ে বড় আকর্ষকে পরিণত হয় দর্শকদের কাছে।

পরের দিন আলোচ্য হয়ে ওঠে 'এ পর্যন্ত লিটলম্যাগ : বয়ে চলা স্বপ্ন'। সঞ্চালক : শামীম নওরোজ ও রণক রফিক। অংশ নেন : দেবাশীস চক্রবর্তী, অমলেন্দু বিশ্বাস, সরোজ দেব, অতনু বন্দ্যোপাধ্যায় ও শ্যামল জানা। বিকেল চারটায় বসন্তের কবিতা পড়ে, বিশ্ববিদ্যালয়ের সংগঠন 'স্বনন'। সৃজনশীল শাখায় এই মেলা থেকে চিহ্নপুরস্কার পান- কবি সরকার মাসুদ আর মননশীল শাখায় গদ্যকার হোসেনউদ্দীন হোসেন। ঢাকা থেকে 'অমিত্রাক্ষর', চট্টগ্রাম থেকে 'খড়িমাটি', সিলেট থেকে 'বুনন', মাগুরা থেকে 'বেগবতী' ও রাজশাহী থেকে 'অ্যালবাম' পায় চিহ্ন লিটলম্যাগ সম্মাননা। পশ্চিমবাংলা থেকে তিনটি পত্রিকা যথাক্রমে: কলকাতার 'কবিতা ক্যাম্পাস', মেদিনীপুরের 'এবং সায়ক' এবং জলপাইগুড়ির 'এখন বাংলা কবিতার কাগজ'ও ভূষিত হয় এ সম্মানে। কলকাতার গানের দল 'মনভাষা' পরিবেশিত সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের মধ্য শেষ হয়।

আগামী ১৭ ও ১৮ অক্টোবর ২০২২ পঞ্চমবারের মতো অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে 'চিহ্নমেলা মুক্তবাঙলা'। আশা করা যায় এই মেলায় দেশ ও দেশের বাইরের দুই শতাধিক লিটলম্যাগ এবং পাঁচ শতাধিক লেখক, পাঠক, সম্পাদকের সমাবেশ ঘটবে। মেলার আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন ও শোভাযাত্রা ১৭ অক্টোবর সকালে। উদ্বোধক : প্রসিদ্ধ লিটলম্যাগব্যক্তিত্ব সন্দীপ দত্ত। প্রধান অতিথি হিসেবে থাকবেন কবি নির্মলেন্দু গুণ। শোভাযাত্রার সমাপ্তিতে মামুন মুস্তাফার সঞ্চালনায় বসবে আড্ডা 'প্রয়াত প্রিয়জন'। প্রয়াত শঙ্খ ঘোষ, সৈয়দ শামসুল হক, দেবেশ রায়, আনিসুজ্জামান ও হাসান আজিজুল হককে নিয়ে। কথা বলবেন : নির্মলেন্দু গুণ, সনৎকুমার সাহা, জুলফিকার মতিন, রুহুল আমিন প্রামাণিক, ইমানুল হক ও মোহাম্মদ আজম। এরপর 'সৃষ্টিশীলতার সমাজতত্ত্ব ও লিটম্যাগ' শিরোনামে এই সময়ের চিন্তক মোহাম্মদ আজমের মুক্তভাষণ। সৈকত হাবিবের সঞ্চালনায় জমবে 'গল্প ও কবিতাপাঠ'।

কবি নির্মলেন্দু গুণকে মধ্যমণি রেখে। বিকেলে আড্ডা হবে 'ভাষার অনুবাদ, অনুবাদের ভাষা' প্রসঙ্গে। মোজাফ্ফর হোসেনের সঞ্চলনায় অনুবাদ নিয়ে মতামত রাখবেন : আলম খোরশেদ, শরীফ আতিক-উজ-জামান, সফিকুল ইসলাম ও প্রত্যয় হামিদ। এদিন সাংস্কৃতিক সন্ধ্যায় আরম্ভে থাকছে ইকবাল মতিনের বেহালা। বাদে হাসান ঈমাম সুইটের উপস্থাপনায় গাইবেন কাঙালিনী সুফিয়া, শোনাবেন তার জীবনের গল্প। মেলার দ্বিতীয় দিন ১৮ অক্টোবর আরম্ভ হবে 'লিটলম্যাগে লেখালেখি : দ্বৈরথ ও দ্বন্দ্ব' আড্ডা দিয়ে। আসরে বসবেন : সন্দীপ দত্ত, হোসেনউদ্দীন হোসেন, নারায়ন রায়, রাজা সহিদুল আসলাম, মনিরুল মনির ও মনজু রহমান। পরপরই সন্দীপ দত্ত ও শহীদ ইকবালকে মধ্যমণি রেখে মেলা উপলক্ষে প্রকাশিত গ্রন্থ ও পত্রিকার 'মোড়ক উন্মোচন'।

বিকেলে রাহেল রাজীবের সঞ্চালনায় থাকছে 'গদ্য আখ্যান ও বাংলার গ্রামীণ জীবন' নামে মোস্তাক আহমেদের প্রবন্ধপাঠ। তা নিয়ে বলবেন : কানাই সেন, তারেক রেজা, এম আবদুল আলীম ও মাসুদুল হক। বিকেলে অংশগ্রহণকারী পত্রিকার সম্পাদকদের চিহ্নস্মারক দিয়ে শুভেচ্ছা জানাবেন চিহ্নসম্পাদক শহীদ ইকবাল। সমাপনী সন্ধ্যায় চিহ্ন সাহিত্যপুরস্কার, চিহ্ন সারস্বত-সম্মাননা ও চিহ্ন লিটলম্যাগ-সম্মাননা প্রদান। এবারে চিহ্ন সাহিত্যপুরস্কার পাচ্ছেন কথাসাহিত্যিক হামিদ কায়সার, চিহ্ন সারস্বত-সম্মাননায় ভূষিত হচ্ছেন প্রবীণ সাহিত্যিক ও শিক্ষাবিদ জুলফিকার মতিন, চিহ্ন লিটলম্যাগ সম্মাননা যাচ্ছে : তৃতীয় চোখ (বাংলাদেশ) ও নৌকো (ভারত)'র ঘরে। এদিনের সাংস্কৃতিক আয়োজনে থাকছে : হাসান রাজার বাঁশি, গানের দল 'মাতাল'-এর দৈশিক পরিবেশনা ও ড. শ্রদ্ধা নাগের ধ্রুপদী নৃত্যায়োজন। চিহ্নের আয়োজনে দেশ ও দেশের বাইরের সকল সাহিত্যপ্রেমী মানুষের জন্য উন্মুক্ত। 
 

Comments

The Daily Star  | English
conflict over security responsibilities at Dhaka airport

Dhaka airport: APBn at odds with aviation force over security duties

A conflict has emerged between the Aviation Security Force (AVSEC) and the Airport Armed Police Battalion (APBn) over security responsibilities at Hazrat Shahjalal International Airport (HSIA). APBn claims that AVSEC took control of their office on October 28, hindering their ability to perform duties effectively

1h ago